চুক্তিপত্রে সই করে পদত্যাগ করুন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা, প্রতিবাদ আছড়ে পড়ল ক্লাবের গেটে
ইস্টবেঙ্গলের ক্লাবের কর্তাদের অনমনীয় মনোভাবে আইএসএল তো দূর অস্ত, কলকাতা লিগেও লাল হলুদের খেলার সম্ভাবনা নেই। শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবের এহেন দশা দেখে এবার ক্লাবকর্তাদের পদত্যাগের দাবি জোরালো হলো। সোশ্যাল মিডিয়ার পর ক্লাব গেটের সামনেও আছড়ে পড়ল সেই প্রতিবাদ।
অনড় কর্তারা
গত শুক্রবার ইস্টবেঙ্গল কর্মসমিতি বৈঠক করে জানিয়েছিল, ইনভেস্টর শ্রী সিমেন্ট টার্মশিট-সহ যে চুক্তিপত্র পাঠিয়েছে তাতে ক্লাবের এবং সমর্থকদের অধিকার খর্ব হচ্ছে। সে কারণেই ওই চুক্তিপত্রে সই করা হবে না। ক্লাব সচিব কল্যাণ মজুমদার-সহ ২৫ জনের স্বাক্ষরিত প্রেস বিবৃতিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করে অভিযোগ আনা হয়, চুক্তিপত্রে ক্লাবের সমর্থকদের ট্রেসপাসার্স হিসেবে চিহ্নিত করে শাস্তিদানের প্রচ্ছন্ন হুমকি রয়েছে। ক্লাবের স্বার্থবিরোধী শর্ত থাকাতেই চুক্তিপত্রে সই না করার সিদ্ধান্ত নেয় ইস্টবেঙ্গলের কর্মসমিতি।
শ্রী সিমেন্টও অন্ধকারে
যদিও লগ্নিকারী শ্রী সিমেন্ট এমন কোনও শর্তের কথা অস্বীকার করেছে। শ্রী সিমেন্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা আশায় রয়েছেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে সই করবেন। কেন না, ক্লাবকর্তারা সই না করার যে কথা বলছেন তা মিডিয়ার কাছে জানানো হলেও শ্রী সিমেন্টকে কোনওভাবেই এই ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। শ্রী সিমেন্ট নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছে, চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে সই হলেই দল গঠন করা হবে। তবে মিডিয়ায় প্রচারিত কোনও খবরের উপর ভিত্তি করে ক্লাবের ভবিষ্যৎ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে না। এসসি ইস্টবেঙ্গলের তরফে শ্রী সিমেন্ট আইএসএল কর্তৃপক্ষকেও জানিয়ে দিয়েছে, চূড়ান্ত চুক্তিপত্রে সই হলেই দল গঠন বা আইএসএলে দল খেলবে। না হলে নয়।
বিশ বাঁও জলে
শুধু আইএসএলই নয়, কলকাতা লিগে দল না নামালে ইস্টবেঙ্গলের অবনমনও নিশ্চিত। এখনও দল গঠনের কাজ কিছুই হয়নি। ব্রাইট এনোবাখারে, অ্যান্টনি পিলকিংটন থেকে শুরু করে দেবজিৎ মজুমদারের মতো কয়েকজন ইতিমধ্যেই অন্য ক্লাবে চলে গিয়েছেন। ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে এএফসি ক্লাব লাইসেন্সিংয়ের যাবতীয় নথি জমা করতে হবে। ৩১ অগাস্টের মধ্যে জমা দিতে হবে ফুটবলারদের তালিকা। ফলে সময় চলে গেলেও লাল হলুদের সমস্যা মেটার ইঙ্গিত নেই। শ্রী সিমেন্ট আরও জানিয়েছে, গত মরশুমে চুক্তি চূড়ান্ত না হলেও দলের পিছনে যে ৫০ কোটি টাকার বেশি খরচ করা হয়েছে তা ফেরত দিলে তবেই স্পোর্টিং রাইটস ফেরানো হবে ইস্টবেঙ্গলকে।
ক্লাবকর্তাদের পদত্যাগের দাবি
ক্লাব যাতে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলতে পারে সেটাই চাইছেন সিংহভাগ সমর্থক। ফলে জটিলতা কাটাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন অনেকেই। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই গত বছর ইনভেস্টর জোগাড়ের পর আইএসএলে খেলতে পেরেছিল লাল হলুদ। কিন্তু এবার কোনও টুর্নামেন্টেই খেলার সম্ভাবনা নেই। সোশ্যাল মিডিয়াতে ক্লাবকর্তাদের পদত্যাগের দাবি জোরালো হচ্ছিল। এরই মধ্যে ক্লাব গেটের সামনে দেবব্রত সরকার (নীতু)-র উপর ক্ষোভ জানিয়ে, পোস্টার ও ব্যানারের মাধ্যমে ইস্টবেঙ্গল কর্মকর্তাদের চুক্তিপত্রে সই করে পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছে। জোরদার হচ্ছে সাইন অ্যান্ড রিজাইনের দাবি।
ছবি- ইবিআরপি ফেসবুক পেজ