ফিরে দেখা ২০২০: বছরভর মৃত্যুর মিছিল! মারাদোনা থেকে রোসি, পৃথিবী থেকে নক্ষত্রলোকে পাড়ি দিলেন যাঁরা
বিষের বছর ২০২০ যেন মৃত্যুর মিছিল! এবছর ফুটবল দুনিয়া থেকে না ফেরার দেশে চলে গেলেন একাধিক কিংবদন্তি। বছর শেষে সেই নামের তালিকা আরও দীর্ঘ হয়েছে। এমন একটা দুঃস্বপ্নের বছর ভুলতে চাইবেন ফুটবলপ্রেমীরা। একনজরে এবছর ফুটবলদুনিয়ায় আমরা কাঁদের হারালাম দেখে নেওয়া যাক।

ফুটবল ঈশ্বর দিয়েগো মারাদোনা
অক্টোবরে ৬০ তম জন্মদিন পার করার কিছুদিনের মধ্য়ে নভেম্বরের শুরুতে হাসপাতালে ভর্তি হন। মস্তিষ্কে রক্তজমাট বাঁধার কারণে হয় অস্ত্রোপচার। সফল অস্ত্রোপচারের পর ডাক্তাররা মারাদোনাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে রিহ্যাবে ছিলেন। এরপর ২৫ নভেম্বর অঘটনের রাত। হঠাৎ করেই হৃদরোগে আক্রান্ত দিয়েগো মারাদোনা। চিকিৎসকদের চেষ্টার সুযোগটুকু না দিয়েই না ফেরার দেশে পারি ফুটবলঈশ্বরের। ১৯৮৬ সালে আর্জেন্তিনাকে বিশ্বকাপ দেওয়া কিংবদন্তি ফুটবলারে এমন প্রয়াণে আজও শোকস্তব্ধ ফুটবলজগৎ।

পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়
করোনা অতিমারির এই বছর ফুটবলদুনিয়া হারালো পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২০ মার্চ বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতালে ৮৩ বছর বয়সে তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে দীর্ঘ কয়েক মাস পিকে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হার্টের সমস্যার পাশাপাশি তাঁর স্মৃতি বিভ্রম ও পার্কিনসন রোগও ছিল। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবণতি ডাক্তারদের চিন্তায় ফেলেছিল। পিকের প্রয়াণে পিতৃহারা হয় ভারতীয় ফুটবল। দেশের হয়ে তিনটি এশিয়ান গেমসে পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৫৮ সালে টোকিও, ১৯৬২ সালে জাকার্তা এবং ১৯৬৬ সালে ব্যংককে তিনি ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেন। তাঁর অধিনায়কত্বে ১৯৬২ সালে এশিয়াডে ভারত ফুটবলে সোনা জেতে। এছাড়া কোচিং জীবনেও তিনি দারুণ সুনাম অর্জন করেছিলেন। ফুটবলারদের উদ্দেশে তাঁর পেপটকের নানা গল্প আজও তরুণ প্রজন্মকে উজ্জীবিত করে।

চুনী গোস্বামী
কিংবদন্তি পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়ের শোক কাটিয়ে ওঠার এক মাস পরই ভারতীয় ফুটবলের আকাশে ফের নক্ষত্রপতন হয়। ফের পিতৃহারা হয় ভারতীয় ফুটবল। ৩০ এপ্রিল ৮২ বছর বয়সে না ফেরার দেশে চলে যান চুনী গোস্বামী। বাড়িতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ডাক্তাররা জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অমৃতলোকে চলে যান চুনী। দুই কিংবদন্তির এমন প্রয়াণে ভারতীয় ফুটবলের অপুরণীয় ক্ষতি। শুধু ফুটবল ময়দানেই নয়, ক্রিকেটের বাইশ গজেও তিনি সমান পারদর্শী ছিলেন। তিনি প্রকৃত অর্থেই ছিলেন অলরাউন্ডার। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তাঁর নেতৃত্বে বাংলা দল ১৯৭১-৭২ সালে রঞ্জি ফাইনাল খেলেছিল।

আলেসান্দ্রো সাবেয়া
ফুটবল বিশ্বে এবছর খারাপ খবর যেন শেষ হচ্ছে না। বছরের শেষে ডিসেম্বরে প্রয়াত মেসির কোচ আলেসান্দ্রো সাবেয়া। ৮ ডিসেম্বরে চিরঘুমে সাবেয়া। ৬৬ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াণ হন তিনি। তাঁর কোচিংয়ে ২০১৪ সালে মেসির আর্জেন্তিনা বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছিল। ফাইনালে জার্মানির কাছে অতিরিক্ত সময়ে ০-১ গোলে আর্জেন্তিনা ম্যাচ হারে।

পাওলো রোসি
সাবেইয়ার প্রয়াণের রেশ কাটতে না কাটতেই ফুটবল ফ্যানেদের কাছে ফের খারাপ খরব। ৯ ডিসেম্বর ৬৪ বছর বয়সে, না ফেরার দেশে আরেক কিংবদন্তি পাওলো রোসি। দিয়েগো মারাদোনার পর প্রয়াত হলেন আরেক বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি ফুটবলার। ইটালির ১৯৮২ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ১৯৮২ সালে স্পেন বিশ্বকাপে ইটালিকে প্রায় একাই চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন রোসি। ৬টি গোল করে সে বার গোল্ডেন বুট জিতে নিয়েছিলেন তিনি। ব্রাজিলের বিরুদ্ধে ইটালির ৩-২ ব্যবধানে চিরস্মরণীয় জয়ে রোসিই তিনটি গোল করেছিলেন।
এগিয়ে পন্টিং, পিছিয়ে সচিন, বর্ডার-গাভাসকর ট্রফিতে তবু দাপট ভারতের!
{quiz_448}