ভাইচুং ভুটিয়া সুপ্রিম কোর্টের পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেন, তবে ভবিষ্যতে চান ফুটবলারদের ভোটাধিকার
ভারতীয় ফুটবলকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট আজ যে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে তাকে স্বাগত জানালেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক ভাইচুং ভুটিয়া। তিনি ফেডারেশন সভাপতি পদে লড়ার জন্য মনোনয়নও পেশ করেছিলেন। তবে ফিফার নির্দেশকে মান্যতা দিয়ে নতুন সংবিধানে প্রাক্তন ফুটবলারদের ভোটাধিকার থাকছে না। ফলে ভাইচুংয়ের এআইএফএফ সভাপতি পদে লড়াই বা জয়লাভের বিষয়টি কার্যত শেষই হয়ে গেল।
শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত
আজ কলকাতার সাউথ সিটি মলে একটি ফুটবল প্রতিযোগিতা উদ্বোধনের ফাঁকে পাহাড়ি বিছে বলেন, আজ দেশের ফুটবলের স্বার্থেই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। এর বাইরে কিছুই নয়। প্রথম যেটি নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে তা হলো যাতে ফিফা অনূর্ধ্ব ১৭ মেয়েদের বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব ভারতের হাতছাড়া না হয়। এটা একটা প্রেস্টিজ ইস্যু বা সম্মানের বিষয়। আর দ্বিতীয় কারণটি হলো অবশ্যই ভারতের উপর থেকে ফিফার নির্বাসন যাতে উঠে যায়। উল্লেখ্য, গত ১৮ মে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এআইএফএফ পরিচালনা ও নতুন সংবিধান তৈরি ও নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নতুন কমিটি গড়ার ভার ন্যস্ত হয়েছিল তিন সদস্যের প্রশাসকমণ্ডলীর হাতে। যে প্রশাসকমণ্ডলীকে সরিয়ে আজ শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এখন থেকে ফেডারেশনের কার্যকরী সাধারণ সচিবই নানা বিষয় দেখভাল করবেন।
ফিফার নির্দেশিকা মেনে বৃহত্তর স্বার্থে
অগাস্টের ২৮ তারিখ যে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল তাও সপ্তাহখানেক পিছিয়ে গিয়েছে। বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও এএস বোপান্নার বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, এআইএফএফ নির্বাচনের জন্য নতুন ইলেক্টোরাল কলেজ প্রকাশিত হবে এবং ফের নতুন করে মনোনয়ন পেশের প্রক্রিয়া শুরু হবে। ফিফার নির্দেশিকাকে পুরোপুরিভাবে মেনে চলা হবে বলেও শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবকল্যাণ ও ক্রীড়া মন্ত্রক। ফিফার সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার যোগাযোগরক্ষা করে চলেছে এবং সূত্রের খবর, ভারতের নির্বাসন যাতে উঠে যায় সে ব্যাপারে কী করণীয় তা জানিয়েও দিয়েছেন ফিফা আধিকারিকরা। ভাইচুং শীর্ষ আদালতে আর্জি জানিয়েছিলেন যাতে ৩৬ জন প্রাক্তন ফুটবলারের ভোটাধিকার থাকে। কিন্তু শীর্ষ আদালতের নির্দেশে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, নতুন ইলেক্টোরাল কলেজে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ফুটবল সংস্থার ৩৬ জন প্রতিনিধি নতুন ভোটার তালিকায় থাকতে পারবেন।
ভাইচুং অনড় ভোটাধিকারের দাবিতে
ফলে প্রাক্তন ফুটবলাররা আর নতুন ইলেক্টোরাল কলেজে থাকতে পারবেন না। এ ব্যাপারে ভাইচুংকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি শীর্ষ আদালতে যে আর্জি জানিয়েছিলাম যাতে ফুটবলারদের ভোটাধিকার থাকে। কিন্তু এই মুহূর্তে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে মেয়েদের অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ আয়োজন ও ভারতীয় ফুটবলের উপর থেকে ফিফার নির্বাসনকে তোলাকেই। তবে ফুটবলারদের লড়াই চলবেই। ফেডারেশন, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রক, সুপ্রিম কোর্টের কাছে আমরা এই আর্জিই জানাব, ভবিষ্যতে যখন নতুন করে ফেডারেশনের সংবিধান তৈরি হবে তাতে যেন ফুটবলারদের ভোটাধিকারের বিষয়টি উল্লিখিত থাকে। প্রশাসনেও তাঁরা যাতে অবদান রাখতে পারেন বা কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা যেন তাঁদের থাকে। বিগত ৭৫ বছরে আমাদের দেশে কোনও ফুটবলার ফেডারেশন সভাপতি হননি। এমনকী রাজ্য সংস্থাতেও তা হয়নি। অথচ ফুটবলাররা দেশের জন্য ঘাম-রক্ত ঝরিয়েছেন।
ফুটবলাররা আসুন প্রশাসনে
ভাইচুং ভুটিয়া ফের একবার জানিয়েছেন, আমাদের দেশে অনেক ফুটবলার রয়েছেন যাঁরা প্রশাসক হিসেবে সফল হতে পারেন। ভবিষ্যতে গুরপ্রীত সিং সান্ধু, সুনীল ছেত্রী, সন্দেশ ঝিঙ্গানের মতো ফুটবলাররা কোচিংয়ের পাশাপাশি ফুটবল প্রশাসনকেও বিকল্প হিসেবে বেছে নিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কোচ না হয়ে ফুটবল প্রশাসনে এসে যাতে প্রাক্তন ফুটবলাররা কাজ করতে পারেন, নিজেদের মতামত তুলে ধরে দেশের ফুটবলের বিকাশকে ত্বরান্বিত করতে পারেন সে বিষয়টিতে সকলকে উৎসাহিত করার গুরুত্বের কথাও মনে করান ভাইচুং। তিনি চারজন পুরুষ ও দুজন মহিলা ফুটবলারকে এআইএফএফের এগজিকিউটিভ কমিটিতে রাখার বিষয়টিকেও স্বাগত জানান। ভাইচুং বলেন, নিঃসন্দেহে এটা সাধুবাদ জানানোর মতো সিদ্ধান্ত। তবে শুধু মনোনীত সদস্য হিসেবে থাকাই যথেষ্ট নয়, আমরা চাই এআইএফএফের জেনারেল বডিতে থেকে ফুটবলারদেরও ভোটাধিকার থাকুক।
শুভমান দাপুটে শতরানে ভাঙলেন সচিনের রেকর্ড! হারারেতে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে গড়লেন একাধিক নজির