ভারতীয় ফুটবলে দৃষ্টান্ত! গোয়া থেকে কোচ ভাঙিয়ে আনছে এটিকে মোহনবাগান
ফুটবলার ভাঙিয়ে সই করানোর নজির ভারতীয় ফুটবলে ভুরি ভুরি থাকলেও কোচ ভাঙিয়ে সই করানোর কোনও নিদর্শন আজ পর্যন্ত এ দেশে ছিল না। মরসুমের মাঝপথে বিপাকে পড়ে এবার সেই পথেই হাঁটল এটিকে মোহনবাগান। ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার অর্থ দিয়ে এফসি গোয়া থেকে জুয়ান ফেরান্দো'কে প্রধান কোচ হিসেবে সই করাল এটিকে মোহনবাগান।

ইতিমধ্যেই এফসি গোয়ায় ফেরান্দোর সহকারী জাভিয়ার গঞ্জালেস'কে স্ট্রেন্থ অ্যন্ড কন্ডিশানিং কোচ হিসেবে সই করিয়েছে এটিকেএমবি। এই চুক্তির ফলে লাভবান হলেন এফসি গোয়ার প্রাক্তন কোচ ফার্নন্দোও। কমলা ব্রিগেডের কোচ হিসেবে যা অর্থ তিনি অর্জন করতেন তার তিনগুন অর্থ সবুজ-মেরুন জার্সিধারী রয় কৃষ্ণ-ডেভিড উইলিয়ামসের কোচ হিসেবে অর্জন করবেন ফেরান্দো। তাঁর বাৎসরিক আয় হবে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা।
গোয়ার সঙ্গে স্প্যানিশ কোচের চুক্তি অনুযায়ী, এফসি গোয়া'কে ক্ষতি পূরণের টাকা দিলেই কোচ ছাড়তে বাধ্য তারা। সেই সুযোগটাই কাজে লাগাল সবুজ-মেরুন। ক্ষতিপূরণের অঙ্ক জানার পরে ফেরান্দো'কে পেতে তৎপর হয় এটিকে মোহনবাগান।
ফেরান্দো'কে পাওয়ার জন্য এটিকে মোহনবাগানের ঝাঁপানোর পিছনে আরও একটি কারণ রয়েছে। এই মুহূর্তে নতুন করে বাইরে নতুন কোচ নিয়ে আসতে হলে কোয়ারেন্টাইনে সেই কোচ'কে কাটাতে হবে। তাছাড়া ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে তিনি কতটা মানিয়ে নিতে পারবেন সেটাও সময় সাপেক্ষ। তার পরিবর্তে ভারতীয় ফুটবল সার্কিটে পরীক্ষিত এবং বর্তমানে দেশের কোনও ক্লাবে কোচিং করাচ্ছেন এমন প্রথম সারির কোচের তালিকায় উপরের দিকে ফেরান্দো'র নামই আসে।
সার্জিও লোবেরার পরিবর্তে এক মরসুমে ফেরান্দো'কে কোচ করে নিয়ে আসে এফসি গোয়া। তাঁর কোচিং-এ টানা ১৫ ম্যাচ অপরাজিত ছিল গোয়ার দলটি। এফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পার্সিপোলিস, আল রায়হানের মত দলের বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছে গোয়া। কিংবদন্তি কোচ লরাঁ ব্লা-র রায়হানের সঙ্গে ১-১ ড্র-ও করে গোয়া। গোলকিপার ধীরজ সিং এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেরা একাদশে জায়গা করে নেন। তাঁর প্রশিক্ষণে চলতি মরসুমে ঐতিহ্যশালী ডুরান্ড কাপেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এফসি গোয়া।
লিগের মাঝ পথে খারাপ পারফরম্যান্সের জেরে এটিকে মোহনবাগানের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাস। আইএসএল-এর সফলতম কোচের প্রথমে গোল করে তা ডিফেন্ড করার স্ট্র্যাটেজি বেশ ভাল মতো পরিচিত। কিন্তু হাবাসের রণকৌশল এই মরসুমে কাজে আসছিল না। ঐতিহ্যের ডার্বিতে ভাঙাচোরা ইস্টবেঙ্গল'কে হারালেও প্রথম ধাক্কাটা আসে মুম্বই সিটি এফসি'র বিরুদ্ধে। দেশ বার্কিংহামের দলের কাছে পাঁচ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর জামশেদপুরের বিরুদ্ধে হেরে যায় এটিকে এমবি। বেঙ্গালুরু এফসি'র বিরুদ্ধে ৩-৩ গোলে কোনও রকমে ড্র করে কোনও রকমে হার বাঁচায়। ৬ ম্যাচে ১৩ গোল হজম করে বাগান ডিফেন্স। এই পরিস্থিতিতে হাবাসের পদত্যাগটা স্বাভাবিক ছিল।