Kolkata Derby: ঝড় তুলে মরসুমের প্রথম ডার্বি জয় এটিকে মোহনবাগানের
Kolkata Derby: ঝড় তুলে মরসুমের প্রথম ডার্বি জয় এটিকে মোহনবাগানের
ডুরান্ড থেকে ইস্টবেঙ্গলের বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেল। ঐতিহ্যের ডার্বিতে আত্মঘাতী গোলে ইমামি ইস্টবেঙ্গলকে ১-০ গোলে পরাজিত করল এটিকে মোহনবাগান। জুয়ান ফেরান্দোর ছেলেরা এই ম্যাচে জয়ের ফলে ডুরান্ড কাপের পরবর্তী রাউন্ডে পৌঁছনোর আশা বাঁচিয়ে রাখল। দীর্ঘ দুই বছর পর কলকাতার বুকে আয়োজিত হয়েছিল বাঙাল-ঘটির মহারণ। সেখানে ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে পারল না ইমামি ইস্টবেঙ্গল। এই নিয়ে লাগাতার ছয়টি ডার্বিতে এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে পরাস্থ হল ইমামি ইস্টবেঙ্গল।
প্রথমার্ধের শুরু থেকেই ঝাঁঝ ছিল এটিকে মোহনবাগানের আক্রমণের। প্রথম মিনিট থেকেই স্টিফেন কনস্ট্যানটাইনের দলকে চেপে ধরে সবুজ-মেরুন। মুহূর্মুহু আক্রমণ উঠে আসছিলেন জনি কাউকো-হুগো বৌমসরা। দুই উইংকে কাজে লাগিয়ে একের পর এক আক্রমণ তুলে আনছিল সবুজ-মেরুন। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের প্রাচীরের মতো রক্ষণের সামনে বারবার খেই হারিয়ে ফেলছিল সবুজ-মেরুনের আক্রমণ ভাগের ফুটবলাররা।
এ দিন প্রথম থেকে দুই বিদেশি ডিফেন্ডার ইভান গঞ্জালেজ এবং চারালাম্বোস কিরাকৌকে খেলান ইমামি ইস্টবেঙ্গলের হেডস্যার। স্প্যানিশ এবং সাইপ্রাসের দুই ডিফেন্ডারের জুটি দারুণ কাজ করে গোটা প্রথমার্ধে। বিশেষ করে চারালাম্বোসের জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। প্রাচীর হয়ে উঠেছিল এই বিদেশি জুটি বিধ্বংসী মেজাজে থাকা এটিকে মোহনবাগান আক্রমণভাগের ফুটবলারদের কাছে। তবে, শেষ রক্ষা হয়নি। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়েও অন্তিম লগ্নে আত্মঘাতী গোল করে এটিকে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন ইমামি ইস্টবেঙ্গলের সুমিত পাসি। প্রতিপক্ষের জালে বল জড়াতে না পারলেও নিজের গোলে কী ভাবে বল জড়াতে হয় তা ভাল মতোই রপ্ত করেছেন পাসি। এই মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের জঘন্যতম সাইনিং হিসেবে পাসিকে উল্লেখ করলেও একটুও রং চড়িয়ে বলা হবে না।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই গোল শোধ করে ম্যাচে ফিরে আসার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ফাঁকায় দাঁড়িয়ে পাসির মিস ইস্টবেঙ্গলকে ম্যাচে ফিরে আসতে দেয়নি। তাঁর এই মিস চোখে দেখাও কষ্টকর ছিল লাল-হলুদ সমর্থকদের কাছে। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১৫ মিনিটে আরও দুইটি গোল তুলে নিতে পারত এটিকে মোহনবাগান কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের প্রাচীরের মতো রক্ষণ এবং কমলজিৎ সিং-এর দুর্ধর্ষ গোলরক্ষা ইস্টবেঙ্গলকে রক্ষা করে। ৫৪ মিনিটে একের বিরুদ্ধে এক পরিস্থিতিতে লিস্টন কোলাসোর গোলের সামনে থেকে শট থেকে নিশ্চিত গোল বাঁচান কমলজিৎ। ৫৯ মিনিটে ফ্লোরেন্টিন পোগবার নিশ্চিত গোল রক্ষা করেন চারালাম্বোস গোল লাইন সেভ করে।৭৪ মিনিটে সুমিত পাসিকে তুলে মহম্মদ মোবাসির রহমানকে নামান স্টিফেন। কিন্তু এতক্ষণ 'অকেজ' ফুটবলারটিকে মাঠে রাখার নেপথ্যে কী কারণ থাকতে পারে তা হয়তো ব্রিটিশ প্রশিক্ষকই বলতে পারবেন।
তবে, হারলেও ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ যে ফুটবলটা আজ উপহার দিয়েছে তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। গত দুই বছর ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ যতটা দুর্বল দেখিয়েছে তার থেকে এই বারের রক্ষণ অত্যন্ত দৃঢ় এবং নির্ভরশীল। ম্যাচের শেষ লগ্নে কিয়ান নাসিরি এটিকে মোহনবাগনের পক্ষে দ্বিতীয় গোলটি করার সুযোগ পেলেও ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষণ করণজিৎ সিং-এর বিশ্বস্ত হাতের সামনে প্রতিহত হয়। ২০১৯ সালের ২৭ জানুয়ারি কলকাতা লিগে শেষ বার মোহনবাগানকে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। এর পর থেকে এখনও পর্যন্ত ডার্বিতে লাল-হলুদের জয় অধরা।