ফুটবল আজ মারাদোনাহীন, একনজরে হ্যান্ড অফ গড থেকে বিশ্বকাপ জয়
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো মারাদোনা। আর্জেন্তাইন সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর এদিন নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবল কিংবদন্তি।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো মারাদোনা। আর্জেন্তাইন সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর এদিন নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবল কিংবদন্তি। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তাররা মারাদোনাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
মাথায় রক্তক্ষরণ ও অস্ত্রোপচার
৩০ অক্টোবর ৬০ বছরে পা দেন মারাদোনা। জন্মদিনের সপ্তাহেই এরপর অসুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মাথায় রক্ত জমাট বাঁধার কারণে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করতে হয়। যারপর দ্রুত সুস্থ হয়ে তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান। দুসপ্তাহ আগেই মারাদোনা বাড়ি ফেরেন। এরপর নেশামুক্তির জন্য তাঁকে রিহ্যাবে রাখা হয়েছিল। বাড়িতেই রিহ্যাবে ছিলেন মারাদোনা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। এদিন নিজের বাড়িতেই ৬০ বছর বয়সে মারাদোনা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দিয়েগোর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা বিশ্ব।
ফুটবল হারাল রাজপুত্রকে
১৯৭৭ থেকে ১৯৯৪, দীর্ঘ ১৭ বছর আর্জেন্তিনার জার্সিতে খেলেছেন মারাদোনা। ফুটবল মাঠে বল পায়ে তুলির টানে গোল করতেন কিংবদন্তি। কেরিয়ারে ১৯৮২ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে নামেন। এর চার বছর পর, মেক্সিকো বিশ্বকাপে আর্জেন্তিনাকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন মারাদোনা।
হ্যান্ড অফ গড
১৯৮৬ বিশ্বকাপ মঞ্চে কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিল আর্জেন্তিনা। সেই ম্যাচে পিটার শিলটনকে বোকা বানিয়ে হাত দিয়ে গোল করেছিলেন। হাত দিয়ে করা মারাদোনার সেই গোল 'হ্যান্ড অফ গড' নামে পরিচিত। ১৯৮৬ সালের মেক্সিকো বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচজনকে কাটিয়ে করা ম্যাচের দ্বিতীয় গোল দিয়েগোর কেরিয়ারের সেরা গোল। ২০০২ সালে অনলাইন ভোটে এই গোল শতাব্দী সেরা হয়েছিল।সেবছর ফাইনালে পশ্চিম জার্মানীকে হারিয়ে মারাদোনার আর্জেন্তিনা ৩-২ ব্যবধানে জয় পেয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল।
একনজরে ফুটবল কেরিয়ার
আর্জেন্তিনার হয়ে ৯১ ম্যাচে মারাদোনা ৩৪টি গোল করেছেন। দেশের জার্সিতে খেলার পাশাপাশি আর্জেন্তিনোস জুনিয়র, বোকা জুনিয়র্সে খেলেছেন দিয়েগো। পরবর্তী সময়ে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনাতে খেলেছিলেন। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত মারাদোনা বার্সেলোনার হয়ে ৩৬ ম্যাচে ২২ গোল করেন। পরবর্তী সময়ে ১৯৮৪ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত নাপোলিতে খেলেছেন। ক্লাব ফুটবলে নাপেলির হয়ে সবচেয়ে বেশি সময়ে খেলেছেন দিয়েগো। ১৮৮ ম্যাচ খেলে মারাদোনা ৮১টি গোল করেন। ফুটবল কেরিয়ার শেষ করেন বোকা জুনিয়ার্সে। ১৯৯৭ সালে বোকা জুনিয়ার্সের জার্সিতে বুট জোড়া তুলে রাখেন তিনি। ক্লাব ফুটবলে ৪৯১ ম্যাচ খেলে মারাদোনা ২৫৯টি গোল করেছেন। কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন দিয়েগো। ২০০৮ থেকে ২০১০ পর্যন্ত আর্জেন্তিনা দলের কোচ ছিলেন। তাঁর কোচিংয়ে ২০০৮ সালে মেসিরা বিশ্বকাপ অভিযানে নেমেছিলেন।মৃত্যুর আগে আর্জেন্তিনার ঘরোয়া ক্লাব জিমনাশিয়ার কোচ ছিলেন মারাদোনা।