অসম, বিহারের বন্যায় উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী মোদী, বাংলার বেলায় চুপ কেন, পিছনে কী অঙ্ক
বিভিন্ন রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্র তথা নরেন্দ্র মোদীকে উদ্বিগ্ন দেখালেও বাংলা নিয়ে টু শব্দটি করেননি।
দেশের বেশ কিছু রাজ্যগুলিতে এবছর বন্যা বড় আকার নিয়েছে। তার বেশিরভাগই বিজেপি শাসিত। প্রাণহানি থেকে শুরু করে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি বড়রকমেরই হয়েছে। বিশেষ করে গুজরাত, অসম, রাজস্থানের বন্যা বহু মানুষ সর্বস্ব খুইয়েছেন। অসমে বহুদিন ধরেই বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে রয়েছে। নতুন করে সে রাজ্যের বহু জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে।
নতুন করে অসমে ও তার পাশাপাশি বিহারের বন্যা ভাবিয়ে তুলেছে কেন্দ্র ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। অথচ প্রায় একমাসের কাছাকাছি হতে চলল বাংলার বিভিন্ন এলাকা বানভাসী হয়ে রয়েছে। প্রথমে বাঁকুড়া, বীরভূম, দুই মেদিনীপুর, বর্ধমান বন্যার জলে ভেসে যাওয়ার পরে নতুন করে উত্তরবঙ্গে বন্যা পরিস্থিতি জটিল আকার নিয়েছে।
এর আগে গত মাসে রাষ্ট্রপতির শপথগ্রহণের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন। সেইসময়ে মমতার সঙ্গে আলোচনা না করে তিনি রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে বলেন। তিনি সেইসময়ে গুজরাতের বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে গিয়েছিলেন।
সেইমতো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের বন্যা দুর্গতদের কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলে আসেন। তারপরে প্রায় মাসখানেক কেটে গিয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্র তথা নরেন্দ্র মোদীকে উদ্বিগ্ন দেখালেও বাংলা নিয়ে টু শব্দটি করেননি।
এদিন সোমবারও অসমের ও বিহারের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল ও নীতীশ কুমারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন নরেন্দ্র মোদী। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে একটা ফোনও করেননি বা এই রাজ্যের বন্যা নিয়ে খোঁজও নেননি। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকেও বাংলার বন্যা নিয়ে একবারও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়নি।
উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, মালদহ, কোচবিহারের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বানভাসি হয়ে পড়েছে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ, দুই দিনাজপুরেও এলাকা ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে নদীর জল। গ্রামের পর গ্রামে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, এরাজ্যের দায় কি তবে কেন্দ্রের নয়? গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে কি তবে রাজনীতির সুক্ষ্ম মারপ্যাঁচ রয়েছে? গুজরাত, রাজস্থান ও অসমে বিজেপি সরকার রয়েছে। পাশাপাশি বিহারে সদ্য নীতীশ কুমারের বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিজেপি। এদিকে বাংলার বারবার দাঁত ফোটানোর চেষ্টা করেও বিশেষ সুবিধা করতে পারছে না বিজেপি। আর তাই কি বন্যার মতো ভয়ানক প্রাকৃতিক দুর্যোগেও কেন্দ্র বাংলাকে বঞ্চিত করেই রেখে দেবে? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখ ফিরিয়ে থাকা কিন্তু সেদিকেই ইঙ্গিত করছে।