বিজেপি কেন হাত বাড়াচ্ছে ‘হার্মাদ’ নেতাদের দিকে?
লক্ষ্মণ শেঠের পর অনুজ পাণ্ডে! বারবার বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব হাত বাড়াচ্ছে হার্মাদ নেতাদের দিকে। আগেই লক্ষ্মণ শেঠকে দলে নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। এবার তিনি হাত বাড়িয়েছেন অনুজের দিকে।
লক্ষ্মণ শেঠের পর অনুজ পাণ্ডে! বারবার বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব হাত বাড়াচ্ছে হার্মাদ নেতাদের দিকে। আগেই লক্ষ্মণ শেঠকে দলে নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। এবার তিনি হাত বাড়িয়েছেন অনুজের দিকে। নন্দীগ্রামের পর নেতাই-এর 'খলনায়ক'-কে জালে তুলতে বদ্ধপরিকর বিজেপি। তবে কি গণহত্যায় অন্যতম অভিযুক্ত লালগড়ের একদা দাপুটে সিপিএম নেতা অনুজ পাণ্ডে এবার জেলে বসেই গেরুয়া পার্টিতে নাম লেখাতে চাইছেন? আসলে এই জল্পনার সূত্রপাত কিছুদিন আগে।
প্রেসিডেন্সি জেলে অনুজের সঙ্গে দেখা হয়েছিল বিজেপির এক যুব মোর্চা নেতার। হাজরায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ওই মোর্চা নেতাদের স্থান হয়েছিল জেল হেফাজতে। জামিন না পেয়ে প্রেসিডেন্সি জেলে যখন বন্দি ছিলেন বিজেপির ওই যুব নেতারা, তখনই সাক্ষাৎ অনুজ পাণ্ডের সঙ্গে। নেহাতই ঘটনাচক্রে দেখা হয়ে যাওয়া। সিপিএমের বিনপুর জোনাল কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক অনুজ। কী কথা হয়েছিল তাদের মধ্যে, তা প্রকাশ্যে আসেনি। তবে ওই নেতারা বাইরে বেরিয়েই দাবি করেন, এখন বিজেপি-তে জয়ধ্বনি অনুজের মুখে।
তিনি নাকি বিজেপি নেতাদের দেখেই মোদিজির নামে জয়ধ্বনি দিতে শুরু করেন। এমনিতেই স্বল্পভাষী অনুজ। তাঁর ওই উচ্ছ্বসিত হয়ে বিজেপি নেতাদের কাছে আসা মন টেনেছে দিলীপ গোষ্ঠীর। নরেন্দ্র মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে অনুজ যুব মোর্চার রাজ্য সভাপতি তুষারকান্তি ঘোষের কাছে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আর্জিও নাকি জানিয়েছেন তিনি। তিনি এলে তো ভালোই হয়। জঙ্গলমহলে শক্তিশালী হয় বিজেপি।
কিন্তু
প্রশ্ন
একটাই
নেতাই
গণহত্যার
অন্যতম
অভিযুক্তকে
দলে
নিলে
গৃহযুদ্ধ
বেধে
যাবে
না
তো?
লক্ষ্মণকে
দলে
নিয়েই
যা
অবস্থা
হয়েছিল।
জবাবদিহি
করতে
হয়েছিল
সর্বস্তরে।
তার
পর
বন্দি
অনুজকে
দলে
নিয়ে
যে
গৃহযুদ্ধ
অবশ্যম্ভাবী।
বিজেপির
অন্দরের
খবর,
অনুজকে
আশ্বাস
দিয়েছেন
তুষারকান্তি।
বলে
রেখেছেন,
জেল
থেকে
মুক্ত
হওয়ার
পর
অবশ্যই
পার্টি
নেতৃত্বকে
তিনি
বিষয়টি
জানাবেন।
তুষারকান্তি
ঘনিষ্ঠমহলে
স্বীকারও
করেছেন
এই
কথা।
এমনকী ইতিমধ্যে দিলীপবাবুকে তিনি শুনিয়েও রেখেছেন অনুজ পাণ্ডের ইচ্ছার কথা। তবে এখন পুরোটাই ভবিষ্যৎ। তিনি জেল থেকে বের হলেই বিবেচ্য। আপাতত বিজেপি নেতা-কর্মীরা বিষয়টি শিকেয় তুলে রাখতে চাইলেও কোনও রাখঢাক নেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, অনুজ পাণ্ডে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। তিনি এও স্পষ্ট করেছেন, তাঁকে নিয়ে এখনই বিজেপি কোনও ভাবনা-চিন্তা করছে না, করার অবকাশও নেই।
আগে
উনি
জেল
থেকে
ছাড়া
পান,
তারপর
ভাবা
যাবে
এ
বিষয়ে।
বিজেপি-র
অন্দরেই
কথা
উঠে
গিয়েছে,
আসলে
জেল
থেকে
মুক্তি
পাওয়ার
জন্যই
বিজেপিতে
নাম
লেখানোর
ইচ্ছাপ্রকাশ
করেছেন
অনুজ।
বাম
জামানার
অবসানের
কয়েক
বছর
আগে
জঙ্গলমহলের
ধরমপুরে
অনুজ
পণ্ডের
প্রাসাদোপম
বাড়ি
ভেঙে
প্রকাশ্যে
এসেছিল
মাওবাদীরা।
বিরোধীদের
অভিযোগ,
পরবর্তীকালে
এই
অনুজের
নেতৃত্বেই
সিপিএম
হার্মাদবাহিনী
মাওবাদীদের
সঙ্গে
সম্মুখসমরে
নেমেছিল।
নেতাই গণহত্যায় তাঁর নাম জড়িয়ে পড়ার পর গা ঢাকা দেন এই হার্মাদ নেতাষ পরবর্তীতে সিআইডি অনুজকে গ্রেফতার করে। তবে অনুজের শুভাকাঙ্খী বা এলাকার সিপিএম নেতৃত্ব এটাকে পুরোপুরি বিজেপির রটনা বলেই মনে করছে। তাঁদের কথায়, অনুজ এখনও সিপিএম অন্তপ্রাণ। তিনি সিপিএমে ছিলেন, সিপিএমেই থাকবেন। আসলে লক্ষ্মণ শেঠের মতো নেতা বিজেপি-র নৌকোয় ওঠার পরই অনেকে অনুপ্রাণিত হতে পারেন।
জঙ্গলমহলের এই বিতর্কিত নেতা। তৃণমূলের টার্গেট। এমতাবস্থায় বিজেপি ছাড়া তার মাথা গোঁজার জায়গা আর কোথায়। দিলীপ বিরোধী রাজ্য বিজেপির নেতারাই জলঘোলা করছে বেশি। তবে এমন কথা অবশ্য উঠে গিয়েছে, নন্দীগ্রাম গণহত্যার নায়ক লক্ষ্মণ শেঠ যদি পদ্মশিবিরে যোগ দিতে পারেন, তবে অনুজকেই বা নৌকোয় তোলা যাবে না কেন!