ঘূর্ণিঝড় অশনি তো কোন ছার, ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্যোগে ২০০ শতাংশ বিপদের মুখে
ঘূর্ণিঝড় অশনি তো কোন ছার, ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্যোগে ২০০ শতাংশ বিপদের মুখে
ঘূর্ণিঝড় অশনি ধেয়ে আসছে ভারতের পূর্ব উপকূলের দিকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভারতের পূর্ব উপকূল ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবের মুখে পড়ে। এবারও তার অন্যথা হচ্ছে না। সম্প্রতি ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব নিয়ে একটি গবেষণা ও সমীক্ষা চালিয়েছে। সেই গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ভবিষ্যতে বঙ্গোপসাগরে আঘাত হানবে এমন ঘূর্ণিঝড় ২০০ শতাংশের বেশি মানুষকে দুর্যোগের সম্মুখীন করবে। প্রকৃতি আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠবে অদূর ভবিষ্যতে।
বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়, ঢেউ এবং জলোচ্ছ্বাসের মুখে
গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রায় হাজার কিলোমিটার বিস্তৃত ভারতের এই উপকূল সীমা। আর অন্ধ্রপ্রদেশ হল ভারতের পূর্ব উপকূলে সবথেকে বেশি ঘূর্ণিঝড় এবং ঝড়বৃষ্টিপ্রবণ রাজ্য। বঙ্গোপসাগরের সবথেকে বেশি বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড়, ঢেউ এবং জলোচ্ছ্বাসের সম্মুখীন হতে হয় দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্যকে। ভবিষ্যতেও হবে।
বহু মানুষকে চরম দুর্যোগের সম্মুখীন করবে
গবেষকরা ঘূর্ণিঝড় আম্ফান নিয়ে গবেষণা করে জানতে পেরেছেন, আম্ফান অল্পের জন্য মিস অন্ধপ্রদেশ উপকূল। ওড়িশা ছুঁয়ে পশ্চিমবঙ্গে ল্যান্ডফল করেছিল ২০২০ সালের মে মাসের ওই ঝড়। কিন্তু ভবিষ্যতের ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়ার মডেল হিসাবে আম্ফান দেখিয়ে দিয়েছে টার্গেট ছিল অন্ধপ্রদেশই। এটি আরও দেখায় যে ভবিষ্যতের সুপার ঘূর্ণিঝড়গুলি বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে মানুষকে চরম দুর্যোগের সম্মুখীন করবে।
আরও সুপার সাইক্লোন ধেয়ে আসবে, গবেষণা
ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যাপ্লাবিত হওয়ার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলির মধ্যে একটি হল অন্ধপ্রদেশ। গবেষণায় দেখা গেছে সুপার সাইক্লোন, গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড়ের সবথেকে তীব্র রূপ। ভবিষ্যতের বছরগুলিতে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের উপর আরও বিধ্বংসী প্রভাব ফেলতে পারে ওই সুপার সাইক্লোন। ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক গবেষণাটি ২০২০ সুপার সাইক্লোন আম্ফানকে মাপকাঠি করে গবেষণা এগিয়েছিল।
ভারতে আড়াই গুণেরও বেশি প্রভাব ফেলবে
দক্ষিণ এশিয়ায় সবথেকে ক্ষতিসাধন হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফলের জন্য। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে উপকূলবাসীদের। রয়্যাল মেটিওরোলজিক্যাল সোসাইটি জার্নাল ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটিতে সোমবার প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্টে দেখা গেছে, যদি বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ একই স্কেলে চলতে থাকে তবে ভারতে আড়াই গুণেরও বেশি মানুষ প্রভাবিত হবে। ২০২০ সালের তুলনায় এক মিটারের বেশি বন্যা হবে।
সুপার সাইক্লোনে ক্ষতির মুখে দক্ষিণ এশিয়া
ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানের অধ্যাপক তথা এই গবেষণার প্রধান লেখক ড্যান মিচেল বলেন, "দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের সবথেকে জলবায়ু-সংবেদনশীল অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। সুপার সাইক্লোনের কারণে দশ হাজার থেকে লক্ষাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেতে পারে এই এলাকায়। জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত আন্তঃসরকারি প্যানেল এটিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে।
বন্যা কবলিতের সংখ্যা বৃদ্ধিও ৫০ থেকে ৮০ হবে
দক্ষিণ এশিয়ায় ভবিষ্যতে বন্যা কবলিতের সংখ্যা বৃদ্ধিও ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ হবে বলে এই গবেষণায় জানানো হয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণায় উদ্বেগজনক বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। সমীক্ষাটিতে আরও দেখা গিয়েছে যে, বাংলাদেশ এবং ভারতে জনসংখ্যার এক্সপোজার ভবিষ্যতে ২০০ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। তাঁরা চরম ঝড় অথবা প্রবল জলোচ্ছ্বাসের সম্মুখীন হবেন বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।
আরেক দফা তাপপ্রবাহের আশঙ্কা! তাপমাত্রা পৌঁছতে পারে ৪৪ ডিগ্রিতে, জারি হলুদ সতর্কতা