দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে এত লড়াই কেন? কী এর প্রেক্ষাপট, জেনে নিন
দক্ষিণ চিন সাগরের দখল নেবে কোন দেশ তা নিয়ে বহুদিন ধরেই লড়াই অব্যাহত। চিনের নামে এই সাগরের নাম হলেও শুধুমাত্র তাদেরই এর উপরে কর্তৃত্ব ফলানোর কোনও অধিকার নেই বলে এদিন রায়ে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল। রায় শুনে কোনওভাবেই তা মানবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে চিন।
এখন ঘটনা হল কেন দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে কার্যত বৈরিতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে গোটা অঞ্চলটি জুড়ে? এই সাগরটিকে ঘিরে রেখেছে চিন, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ফিলিপিন্সের মতো দেশ। তবে অভিযোগ, বাকী সবকটি ছোট দেশকে বঞ্চিত করে চিন এই সাগরের উপরে একা কর্তৃত্ব করছে।
যা দেখে ফিলিপিন্স আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করেছে। এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ এই সাগরে চিনের অন্যায় কর্তৃত্বের বিরোধিতা করেছে। এমনকী ভারতও চিনের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে।
'সোনার খনি' দক্ষিণ চিন সাগর
এই দক্ষিণ চিন সাগরের উপর দিয়ে বিশ্বের মোট জাহাজের এক-তৃতীয়াংশ চলাচল করে। সাগরের নিচে তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস সহ প্রাকৃতিক সম্পদের ভাণ্ডারে পরিপূর্ণ। ফলে এমন একটি লাভজনক এলাকা দখলে রাখতেই মরিয়া হয়ে উঠেছে চিন।
অমীমাংসিত তথা বিতর্কিত এই জলসীমানায় কৃত্তিম দ্বীপ তৈরি থেকে শুরু করে, সামরিক মহড়া চালানো সহ নানাভাবে আধিপত্য স্থাপনের চেষ্টা করছে চিন। যা দেখে বিশ্ব কূটনীতিতে চিনের প্রবল প্রতিপক্ষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিরোধীদের একজোট করে লড়াইয়ে নেমেছে।
চিন একা দখল করে রেখেছে
দক্ষিণ চিন সাগরের মোট এলাকা ৩ লক্ষ বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে ২৯১টি দ্বীপ ও প্রবাল দ্বীপ নিজেদের বলে দাবি করে। কিন্তু নিয়ম হচ্ছে, যেহেতু এই সাগরটি আন্তর্জাতিক জলসীমানায় পড়ছে, তাই এটি কারও একার অধিকার হতে পারে না।
ভিয়েতনাম ও ফিলিপিন্সের মতো দেশ সবার প্রথমে দক্ষিণ চিন সাগরে দ্বীপ নিয়ন্ত্রণ করেত শুরু করে। পরে চিন এসে সকলকে সরিয়ে দিয়ে প্রায় একাই গোটা এলাকার দখল নিতে উদ্যোগী হয়েছে। যার ফলে বিবাদ শুরু হয়।
আমেরিকার নজরদারি
চিনের অভিযোগ, অন্য দেশগুলির ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মুখ বুজে থেকেছে। ফলে চিনের বিষয়ে নাক গলানো তাদের উচিত হবে না। তাহলে ফলাফল ভালো হবে না। কিন্তু আন্তর্জাতিক কূটনীতির স্বার্থে চিনকে শক্তিশালী হতে দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে দক্ষিণ চিন সাগর এলাকায় নজরদারি শুরু করেছে মার্কিন সেনাও।
এই অবস্থায় দক্ষিণ চিন সাগর আন্তর্জাতিক কূটনীতির ক্ষেত্রে একটি বড় তর্কের বিষয় হয়ে উঠতে পারে আগামিদিনে। এদিন চিনের বিপক্ষে মত যাওয়ায় এশিয়ার কূটনীতিতেও তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।