পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি আসলে কী, যার জেরে পদ খোয়ালেন শরিফ
পানামার একটি আইনি প্রতিষ্ঠান কিছু গোপন করফাঁকি সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করেছে। যা পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি নামে খ্যাত হয়ে রয়েছে।
মোসাক ফনসেকা নামে পানামার একটি আইনি প্রতিষ্ঠান কিছু গোপন করফাঁকি সংক্রান্ত তথ্য ফাঁস করেছে। যা পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি নামে খ্যাত হয়ে রয়েছে। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে বড় বড় ব্যক্তিত্বরা কীভাবে সুকৌশলে কর ফাঁকি দিয়ে নিজেদের সম্পদ বাড়িয়েছেন তা ১ কোটি ১৫ লক্ষ গোপন নথিতে ফাঁস করে দিয়ে আলোড়ন ফেলেছে মোসাক ফনসেকা নামে পানামার আইনি প্রতিষ্ঠানটি। একেই বলা হচ্ছে পানামা পেপার্স বা পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারি।
[আরও পড়ুন:দুর্নীতি মামলায় অপসারিত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ]
কোন দেশের নাম রয়েছে
এই ঘটনায় আর্জেন্তিনা, আইসল্যান্ড, সৌদি আরব, ইউক্রেন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপ্রধানের নাম রয়েছে। এছাড়া ব্রাজিল, চিলি, ফ্রান্স, ভারত, মালয়েশিয়া, মেক্সিকো, পাকিস্তান, পেরু, রোমানিয়া,অস্ট্রেলিয়া, আজারবাইজান, বাংলাদেশ, চিন, কলম্বিয়া, সাইপ্রাস, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মিশর, ইসরায়েল, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, পানামা, সিঙ্গাপুর, সুইডেন, থাইল্যান্ড, তিউনিসিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, স্পেন, সিরিয়া, যুক্তরাজ্য সহ বেশ কটি দেশের সরকার প্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান, ক্রিয়াবিদ, চলচিত্র অভিনেতা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নাম রয়েছে।
জড়িত রাষ্ট্রনেতারা
চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পরিবার, পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পরিবারের নামও রয়েছে। এছাড়া আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি, সৌদি আরবের রাজার নামও রয়েছে পানামা পেপার্সে। এছাড়া ফুটবলার লিওনেল মেসি ও বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন ও তাঁর পুত্রবধূ ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের নামও রয়েছে।
কী অভিযোগ
বিভিন্ন দেশের ক্ষমতাসীন ও উচ্চবিত্ত ব্যক্তিরা চারদশক ধরে মোসাক ফনসেকার সহযোগিতায় অর্থ পাচার ও কর ফাঁকি দিয়ে দেশের বাইরে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। বিশ্বের যেসব প্রতিষ্ঠান গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বিখ্যাত, মোসাক ফনসেকা সেগুলোর একটি। পানামার এই প্রতিষ্ঠানের অজস্র নথি ফাঁসের ঘটনা 'পানামা পেপার্স' নামে খ্যাত হয়ে উঠেছে।
ভারতীয়দের নাম পানামা পেপার্সে
পানামা পেপার্সে বিগ বি অমিতাভ বচ্চন ও পুত্রবধূ ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের নাম যেমন রয়েছে তেমনই সবমিলিয়ে মোট পাঁচশোর বেশি ভারতীয়র নাম রয়েছে বলে খবর। মোসাক ফনসেকার তরফে ফাঁস হওয়া নথিতে এই তথ্য রয়েছে।
মোসাক ফনসেকা
মোসাক ফনসেকা নামে এই প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন পানামার দুই নাগরিক জার্গেন মোসাক ও রামন মোসাক। বিশ্বের ৪২টির বেশি দেশে প্রতিষ্ঠানটির শাখা রয়েছে। এই সংস্থায় ব্যক্তিগত হিসাব ছাড়াও যে কোনো কোম্পানির নামে অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। মূলত গ্রাহক আকৃষ্ট করতে ব্যবসায়িক সহযোগীদের নিজেদের ব্র্যান্ড নাম ব্যবহারের সুযোগ দেয় মোসাক ফনসেকা। মোসাক ফনসেকার নথিতে বিশ্বের ২০০ দেশের ২ লক্ষ ১৪ হাজার ব্যক্তির টাকা পাচারের নথি রয়েছে।