অসম চুক্তি ১৯৮৫ ও পরবর্তীকালে এনআরসি নিয়ম যা নিয়ে এখন বিতর্ক তুঙ্গে, জেনে নিন সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
একনজরে জেনে নিন ১৯৮৫ সালের অসম চুক্তি নিয়ে।
অসমে বসবাসকারী ভারতের বৈধ নাগরিক ২.৮৯ কোটি। মোট ৩.২৯ কোটি মানুষের মধ্যে থেকে ৪০ লক্ষের বেশি মানুষের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি এই রিপোর্ট সামনে এসেছে যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে অসমে অনুপ্রবেশ এক বড় সমস্যা। স্বাধীনতার সময় একটা বড় অংশ অসমে চলে আসে। তারপরে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে আর একটা বড় অংশ অসমে আশ্রয় নিয়েছে। তারপরই অসমের বাসিন্দারা গর্জে উঠে আন্দোলন শুরু করেন। ছাত্র-যুবরাই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন। একনজরে জেনে নিন ১৯৮৫ সালের অসম চুক্তি নিয়ে।
১৯৭৯-৮৫ বিক্ষোভ
১৯৭৯ সালে আসু বা অসম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন ও অল অসম গণ সংগ্রাম পরিষদ রাজ্য জুড়ে আন্দোলন সংগঠিত করে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে অচলাবস্থা শুরু হয়। আন্দোলন ক্রমেই হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। তথ্য অনুযায়ী সেইসময়ে ৮৬০জন মানুষ খুন হন।
[আরও পড়ুন:মমতা অপরাধী! করেছেন শান্তি বিঘ্নিত, এফআইআর-এ আর কী অভিযোগ অসম পুলিসের]
কারা ছিলেন নেতৃত্বে
আসু প্রেসিডেন্ট প্রফুল্ল কুমার মহন্ত, আসু সাধারণ সম্পাদক ভৃগু কুমার ফুকান ও অল অসম গণ সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিরাজ শর্মারা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন।
গণহত্যার সাক্ষী
নগাঁও গ্রামে ২১৯১ জনকে যাঁদের বেশিরভাগই মুসলমান, তাঁদের খুন করা হয়। মনে করা হয় এই নরহত্যার পিছনে ছিল অসমের উপজাতি মানুষরা। রাজ্য নির্বাচনে উদ্বাস্তুদের ভোট দেওয়ার অধিকার দেওয়ার বদলা নিতে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। যদিও শেষ অবধি মাত্র ৩২ শতাংশ ভোট পড়েছিল।
[আরও পড়ুন:এনআরসি বা অসমের জাতীয় নাগরিকপঞ্জী নিয়ে খুঁটিনাটি জানুন একনজরে]
অসম চুক্তি
১৯৮৫ সালে কেন্দ্র, অসম সরকার, আসু ও এএজিএসপি-র মধ্যে অসম চুক্তি সাক্ষরিত হয়। কেন্দ্রে তখন ছিল রাজীব গান্ধীর সরকার। এই মোতাবেক বিদেশিদের তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথমত, যাঁরা ১.১.১৯৬৬ সালের আগে অসমে এসেছিল। দ্বিতীয়ত, যাঁরা ১.১.১৯৬৬ থেকে ২৪.৩.১৯৭১ সালের আগে অসমে এসেছে। তৃতীয়ত, যাঁরা ২৫.৩.১৯৭১ সালের পরে অসমে প্রবেশ করেছে।
কী ঠিক হয়েছিল?
প্রথম ক্যাটেগরিতে থাকা ব্যক্তিরা নাগরিকত্ব পাবেন। পরের ক্যাটেগরির ব্যক্তিরা দশ বছর এটা থেকে বঞ্চিত থাকবেন। এবং তৃতীয় ক্যাটেগরিতে থাকা ব্যক্তিদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
চুক্তির অন্য নিয়মাবলী
- বিদেশিদের জমিগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা।
- জন্ম ও মৃত্যুর রেজিস্ট্রেশন।
- সরকারি জমি অধিগ্রহণ করা যাবে না।
- অসমের সংষ্কৃতিগত, সামাজিক, ভাষাগত পরিচয়কে রক্ষা করতে হবে।
- নাগরিক শংসাপত্র দেবে শুধু কেন্দ্রীয় সংস্থা।
-
সীমান্ত
সুরক্ষাকে
মজবুত
করতে
হবে।