কোভিশিল্ড না কোভ্যাক্সিন? সর্বাধিক সুরক্ষা দিচ্ছে কোন টিকা?
দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে অবশেষে কেন্দ্রের সবুজ সংকেত মিলতেই শনিবার থেকেই গোটা দেশে শুরু হয়ে গেল করোনা টিকাকরণ। স্বাস্থ্য, সাফাই কর্মী, পুলিশের মতো প্রথম প্রথম সারির কোভিড যোদ্ধা ছাড়াও প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৩ কোটিরও বেশি ঝুঁকি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। এর জন্য মূলত ৬ থেকে ৮ মাসের সময়সীমা ধার্য করেছে সরকার। এদিকে দিন যত গড়চ্ছে বরাত প্রাপ্ত দুই সংস্থাকে ঘিরেই চড়ছে আশা-আশঙ্কার দোলাচল।
কোন সংস্থার থেকে কত টিকা কিনল সরকার?
এদিকে চলতি মাসেই দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি একজোড়া করোনা টিকাকে জুরুরি ভিত্তিতে টিকাকরণের ছাড়পত্র দিয়েছে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া বা ডিজিসিআই। টিকাকরণের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে পুনের সিরাম ইন্সস্টিটিউট, ও ভারত বায়োটেককে। সিরামের থেকে প্রথম ধাপে ১.১ কোটি করোনা টিকা ও ভারত বায়োটেকের থেকে ৫৫ লক্ষ করোনা টিকা কেনার সিদ্ধান্তও নিয়েছে কেন্দ্র।
করোনা যুদ্ধে সিরাম, ভারত বায়োটেক
এদিকে ব্রিটেনের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার হাতে তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের প্রস্তুতির দায়িত্ব নিয়েছিল পুনের সিরাম ইন্সস্টিটিউট। ভারতে এই ভ্যাকসিনের নাম রাখা হয় কোভিশিল্ড। পাশাপাশি সম্পূর্ণ ভাবে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ভারত বায়োটেকের করোনা ভ্যাকসিনের নাম রাখা হয় কোভ্যাক্সিন। দুই টিকাই মানবদেহে করোনা প্রতিরোধী পাঁচিল গড়ে তুলতে বিশেষভাবে কার্যকরী বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
দেশজোড়া বিতর্কের মুখে ভারত বায়োটেক
যদিও তৃতীয় পর্বের সম্পূর্ণ ট্রায়াল রিপোর্ট সামনে না আসায় এখনও বিতর্ক চলছে দুটি করোনা টিকাকে ঘিরেই। সবথেকে বেশি বিতর্কের মুখে পড়েছে ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন। এদিকে ভারত বায়োটেকের সাথে সাথে কোভ্যাক্সিন তৈরিতে সাহায্যের হাত বাড়ায় ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ বা আইসিএমআর। যোগ দেয় পুনের ন্যাশ্যানাল ইন্সস্টিটিউট অফ ভাইরোলজিও। এই টিকা মানবদেহে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ কার্যকরী বলেই অসমর্থিত সূত্রে খবর।
বাছুরের রক্তের সিরাম দিয়ে তৈরি কোভ্যাক্সিন
মূলত সদ্য জন্মানো বাছুরের রক্তের সিরাম, আফ্রিকার বাঁদরের কোষ এই কোভ্যাক্সিন তৈরিতে বিশেষ ভাবে কাজে এসেছে। যদিও গরুর ভ্রুণের সিরাম ও বাছুর সিরাম যেকোনও টিকা প্রস্তুতিতেই অন্যতম প্রধান উপাদান বলেই মনে করেন ভাইরাসবিদেরা। অন্যদিকে এর আগে তিন পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালেই ভালো ফল করতে দেখা সিরামের করোনা টিকাকে।
ডোজের তারতম্যের ভিত্তিতে বাড়তে পারে কার্যকারিতা
অন্যদিকে এর আগে তিন পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়ালেই ভালো ফল করতে দেখা সিরামের করোনা টিকাকে। প্রথম দফার ট্রায়ালে ২৩ হাজার ৭৪৫ জনকে কোভিশিল্ড দেওয়া হয় বলে জানা যাচ্ছে। পরবর্তীতে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ১৬০০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক অংশ নেয় বলে জানা যায়। তারপরেই জানা যায় এই টিকা মানবদেহে গড়ে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকরী। তবে ডোজের তারতম্যের ভিত্তিতে কোভিশিল্ডের কার্যকারিতা ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো যেতে বলেও জানাচ্ছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা।