আফগানিস্তানে মার্কিন শান্তিদূত ভারতে এসে দেখা করলেন নেতৃত্বের সঙ্গে; ফের ভরসা পেল নয়াদিল্লি
আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি জালমে খলিলজাদ গত সোমবার, ৬ মে, ভারত সফরে নয়াদিল্লি এসে পৌঁছন।
আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি জালমে খলিলজাদ গত সোমবার, ৬ মে, ভারত সফরে নয়াদিল্লি এসে পৌঁছন। রমজান উপলক্ষ্যে তালিবানদের সঙ্গে চলতে থাকা মার্কিন প্রতিনিধিবর্গের আলোচনায় বিরতি ঘটলে তিনি ভারতের মাটিতে পা রাখেন এদেশের কূটনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতে।
বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে খলিলজাদের আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে একপ্রস্থ আলোচনা হয় বলে টুইট করে জানান বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার।
আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ ধরা হলেও সম্প্রতি দেখা গিয়েছে যে তালিবানের সঙ্গে শান্তি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ভারত একটু পিছিয়ে পড়েছে। যেহেতু ভারতের প্রধান সম্পর্ক আফগানিস্তানের নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে, তালিবানের সঙ্গে নয় এবং যেহেতু এই সময়ে আশরাফ গনির সরকারের গুরুত্ব হ্রাস পেয়েছে এবং আমেরিকা সহ রাশিয়া, চিন এমনকী, পাকিস্তানও ঝুঁকেছে তালিবানের সঙ্গে আলোচনার দিকে, তাই নয়াদিল্লির কাছে দেখা দিয়েছে এক কৌশলগত চ্যালেঞ্জ। সেদিক থেকে খলিলজাদের এই ভারত যে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহই নেই।
খলিলজাদ সুষমা-সহ দেখা করলেন একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে
রবীশ কুমার জানিয়েছেন যে নয়াদিল্লি এবং কাবুল-এর প্রতিনিধিরা আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়াকে কীভাবে ত্বরান্বিত করা যায়, সে বিষয়ে কথা বলেছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ভারত সবরকম সহযোগিতা করবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকেও বলা হয় যে খলিলজাদ ভারতের সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে আফগানিস্তান প্রসঙ্গে আলোচনা করতেই নয়াদিল্লিতে পা রেখেছিলেন। সুষমা ছাড়াও খলিলজাদ জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, বিদেশ সচিব বিজয় গোখেল এবং আফগানিস্তানে ভারতের রাষ্ট্রদূত বিনয় কুমারের সঙ্গেও দেখা করেন। এই সমস্ত আলোচনাগুলিতে মার্কিন প্রতিনিধি আফগানিস্তানের বিভিন্ন উন্নয়নে ভারতের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। পাশাপাশি, আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারলে ওই অঞ্চল তথা আন্তর্জাতিক দুনিয়ার কী সুবিধা হবে, তা নিয়েও কথা হয়।
যুদ্ধবিরতি না সেনা প্রত্যাহার, বিতণ্ডা চলছে সেই নিয়েই
কাতারের রাজধানী দোহাতে তালিবানের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধি দলের শান্তি আলোচনা যে খুব ফলপ্রসূ হয়েছে এখনও পর্যন্ত, তা বলা যাবে না। মার্কিন পক্ষ তালিবানের উপরে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার দাবি চাপালেও তালিবান তা মানতে রাজি নয়। তাদের মতে, আগে আফগানিস্তানের মাটি থেকে বিদেশি সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের ঘটনাটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই জটিলতা কবে কাটবে বা আদৌ কাটবে কি না তা বলা মুশকিল এক্ষুনি।
শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলে মার্কিনিদের প্রয়োজন পড়বে ভারতকেই
মার্কিনিরা জানে যে কথায় চিঁড়ে না ভিজলে আফগানিস্তানে হয়তো ফের শক্তির লড়াই শুরু হবে এবং যেহেতু রাশিয়া বা পাকিস্তান তালিবানকে সমর্থন করছে, ওয়াশিংটনেরও প্রয়োজন পড়বে নয়াদিল্লির মতো তালিবান-বিরোধী শক্তিকে। এতে আফগানিস্তানে ভারতের গুরুত্ব বিকাশ হয়তো আগের চেয়ে বেশি হবে, কিন্তু আফগানিস্তানের শেষ অঙ্ক মেলানোর প্রশ্নটি রয়ে যাবে বিশ বাওঁ জলেই।