ভারত কি পারবে আরও পাঁচ বছর মোদী জমানা সইতে? 'টাইম'-এর এই প্রশ্ন নিয়ে চর্চা করা জরুরি
বাইরের দুনিয়ার চোখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খ্যাতিমান প্রমাণিত হয়েছেন অনেকবারই। এবং যতবার বিদেশি সংবাদমাধ্যম মোদীকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে, দেশে-বিদেশে তাঁর ভক্তকূল আনন্দে আত্মহারা হয়েছে।
বাইরের দুনিয়ার চোখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী খ্যাতিমান প্রমাণিত হয়েছেন অনেকবারই। এবং যতবার বিদেশি সংবাদমাধ্যম মোদীকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে, দেশে-বিদেশে তাঁর ভক্তকূল আনন্দে আত্মহারা হয়েছে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদীকে প্রায় অবতারের পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছিল আপামর সংবাদমাধ্যম। তাঁকে নিয়ে দেশ-বিদেশের মানুষ এখন কম আগ্রহ দেখাচ্ছে, তা নয়, কিন্তু প্রখ্যাত 'টাইম' ম্যাগাজিন তাঁকে তাঁদের সাম্প্রতিকতম প্রচ্ছদে "ভারতের মুখ্য বিভাজক" বলে বর্ণনা করে যে বোমাটি ফাটিয়েছে, তাতে মোদীর ভাবমূর্তি মেরামতি যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়াবে। চলতি নির্বাচন জিতলে তো আরও।
মোদীর জমানার উৎসব চলছে এখনও; সূক্ষ্ণ বিচারে রাজি নয় বেশি লোক
অবশ্য মোদীর জমানায় ভারতের কী ক্ষতি হয়েছে, হচ্ছে বা আরও হতে পারে তা বুঝতে গেলে যে ইন্টেলেকচুয়াল বিশ্লেষণ করার বা বোঝার প্রয়োজন, তার বিশেষ তোয়াক্কা বিপুল ভক্তগণের নেই। তাঁরা এই ভেবেই আনন্দিত যে মোদী পরিবারবাদের বিরোধিতা করে যে এলিট-বিকল্পের সন্ধান দিয়েছেন, ধর্মীয় জাতীয়তাবাদকে তোল্লাই দিয়ে যে সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদের সংস্কৃতি চালু করেছেন, স্বদেশীয়ানার বা ভারতীয়ত্বের জিগির তুলেছেন, তাতেই এদেশ সুপারপাওয়ার হবে।
অনেক ক্ষেত্রেই নতুন করে ভাবা প্রয়োজন
আসলে কিন্তু মোদীর পপুলিস্ট জমানা দেখেছে এক ভারতীয়র বিরুদ্ধে অন্য ভারতীয়কে লেলিয়ে দেওয়া; ইন্টেলেকচুয়াল তর্কের পরিসরকে সংকুচিত করে মধ্যমেধার জয়ধ্বজা ওড়ানো এবং সবচেয়ে বড় কথা, অর্থনীতির সংস্কারের নামে বেশ কিছু আত্মঘাতী পদক্ষেপ লাগু করা। কিন্তু এই সমস্ত গূঢ় বিপদের দিকগুলি হারিয়ে গিয়েছে বুকপেটানো জাতীয়তাবাদের আড়ালে। কারণ মোদী এবং তাঁর সেনানীরা জানেন যে জাতীয়তাবাদ এক এমন আফিম যার নিচে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক হানাহানি, অর্থনৈতিক ব্যর্থতা, আধুনিকতাবাদের পরিপন্থী চিন্তামন্থন সবকিছুই গৌণ। আর এর পাশাপাশি এই অতীব দুর্বল বিরোধীপক্ষ তো রয়েছেই যা মোদীর দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পথ অনেকটাই সহজ করে দিতে পারে।
কিন্তু আরও পাঁচটি বছর কি ভারত পারবে মোদীর রাজত্ব সইতে? 'টাইম'-এর প্রতিবেদন তুলেছে সেই প্রশ্নটিই।