পৃথিবীতেই আছে ‘স্বর্গ'! সেই রাজ্যের ঠিকানা রইল, ঘুরেও আসতে পারেন ‘ইচ্ছে ডানা’ মেলে
পৃথিবীতেই আছে ‘স্বর্গ'! সেই রাজ্যের ঠিকানা রইল, ঘুরেও আসতে পারেন ‘ইচ্ছে ডানা’ মেলে
খুব বেশিদিনের কথা নয়। বছর ৩০ আগে ইন্দোনেশিয়ায় ডুবে যাওয়া যুদ্ধ বিমানের এক সৈনিকের কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছিল ওই স্বর্গের খোঁজ। চার মাসব্যাপী ডাইভিং অভিযানে তিনি লক্ষ্য করেছিলেন সেখানে এমন একটি জায়গা রয়েছে, যা পৃথিবীর স্বর্গ বললেও অত্যুক্তি হয় না।
প্রবাল ত্রিভূজের কেন্দ্রস্থলে স্বর্গরাজ্যের মতো সুন্দর দ্বীপ
তিনি তাঁর দীর্ঘ চারমাস যাত্রায় যে জায়গাটি মনের মণিকোঠায় স্থান দিয়েছিলেন তা অন্য সব জায়গার থেকে আলাদা। সেটি ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম পাপুয়া প্রদেশে অবস্থিত। নাম রাজা আম্পাত। এই রাজা আম্পাতকে ঘিরে রয়েছে প্রবাল প্রাচীর। বলা যায় প্রবাল ত্রিভূজের কেন্দ্রস্থলে স্বর্গরাজ্যের মতো সুন্দর এই রাজা আম্পাত এলাকাটি।
দুর্গম, তাই রাজা আম্পাত পর্যটন মানচিত্রে স্থান পায়নি
রাজা আম্পাত মেরিন প্রোটেক্টেড এরিয়া নেটওয়ার্কে চার মিলিয়ন হেক্টরের বেশি বিস্তৃত। এই অঞ্চলে প্রায় ১৫০০টি দ্বীপ রয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের অধিকারী এই দ্বীপাঞ্চল। কিন্তু এতটাই দুর্গম যে এই রাজা আম্পাত পর্যটন মানচিত্রে স্থান পায়নি। রাজা আম্পাত দুর্গম বলে একে পৃথিবীর শেষ স্বর্গ বলা হয়।
সৌন্দর্যে অন্তঃহীন, রয়েছে শতাধিক সন্দর প্রবাল বাগান
এই রাজা আম্পাতের দ্বীপাঞ্চলে ১৬০০টিরও বেশি প্রজাতির মাছ রয়েছে। বিশ্বের পরিচিত প্রবাল প্রজাতির ৭৫ শতাংশ পাওয়া যায় এখানেই। সৌন্দর্যে অন্তঃহীন এই এলাকায় রয়েছে শতাধিক সুন্দর প্রবাল বাগান। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানেই ১৯৯৪ সালে ক্রি ইকো ডাইভ রিসর্ট খোলা হয়েছিল এখানে। স্থানীয় ডুবুরিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হল এই অবিকৃত জলজ জগতে।
সামুদ্রিক সংরক্ষণের চেষ্টাও শুরু হয়েছিল রাজা আম্পাতে
২০০৪ সালে রাজা আম্পাতকে পশ্চিম পাপুয়ার বার্ডস হেড সিস্কেপ উদ্যোগে যুক্ত করা হয়েছিল। আন্তর্জাতির সংরক্ষক ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সহায়তা সামুদ্রিক সুরক্ষিত এলাকার একটি নেটওয়ার্ক তারি করা হয়েছিল। স্থানীয়দের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই অর্থনীতি তৈরি করার জন্য লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছিল। সেইসঙ্গে সামুদ্রিক সংরক্ষণের চেষ্টাও শুরু হয়েছিল। এই উদ্যোগের পর মাছের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রবাল পুনরুদ্ধার হয়েছে।
ওই এলাকাকে ‘নো-টেক জোন’-এ পরিণত করা হয়েছে
রাজা আম্পাতের মেরিন পার্কস নেটওয়ার্কে ১০টি সুরক্ষিত এলাকা রয়েছে। যা ২ মিলিটন হেক্টরের বেশি বিস্তৃত। মিসুল মেরিন রিজার্ভ ওই এলাকাকে 'নো-টেক জোন'-এ পরিণত করেছে। এর ফলে ৩ লক্ষ একর এলাকায় সমস্ত মাছ ধরা ও শিকার কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ২০০৭ সালে থেকে জলের নিরীক্ষণের জন্য নিজস্ব রেঞ্জার টহল নিয়োগ করা হয়েছে। তারপর থেকে মাছের জৈববস্তু গড়ে ২৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
পূর্ববর্তী নারকেল বাগানও রয়েছে, বনাঞ্চল ধ্বংস করা হয়নি
প্রায় দুই দশক আগে যখন কনজারভেশন ইন্টারন্যাশনালের ডা. গেরি অ্যালেন পাপুয়া ডাইভিং-এর হাউস রিফ কেপ ক্রি-তে ডুব দিয়েছিলেন, তখন তিনি এক ডাইভে রেকর্ড ব্রেকিং ৩২৭ মাছের প্রজাতি গণনা করেছিলেন। এক দশকে পরে সংখ্যাটি ৯০ মিনিটে ৩৭৪টি স্বতন্ত্র প্রজাতিতে পৌঁছেছে। পাপুয়া ডাইভিং-এর দুটি অবস্থান এমন এলাকায় তৈরি করা হয়েছে, যেখানে পূর্ববর্তী নারকেল বাগান ছিল। অর্থাৎ কোনও বনাঞ্চল ধ্বংস করা হয়নি।
যুদ্ধফেরত এক ইংরেজের হাতে তৈরি হয়েছিল ভারতের এক মন্দির, জানেন তার নেপথ্য ইতিহাস