নরেন্দ্র মোদীর এমন কিছু প্রশ্ন যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কিন্তু অস্বস্তিতেই রাখবে
বাংলা যে বিজেপি-র পরের লক্ষ্য তা বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। ত্রিপুরার মতো রাজ্যে শূন্য হাতে শুরু করে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে যেভাবে বিজেপি সংগঠন দৃঢ় করেছে তা এখন চর্চায়।
বাংলা যে বিজেপি-র পরের লক্ষ্য তা বারবার বুঝিয়ে দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। ত্রিপুরার মতো রাজ্যে শূন্য হাতে শুরু করে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যে যেভাবে বিজেপি সংগঠন দৃঢ় করেছে তা এখন রাজনৈতিক মহলের চর্চায়। স্বাভাবিকভাবেই ত্রিপুরা ব্যাটেল জয় করে এখন আরও এক বাংলাভাষী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি।
সম্প্রতি রাজ্যে তাঁদের আনাগোনা বৃদ্ধি করেছেন বিজেপি-র শীর্ষস্থানীয় নেতারা। বারবারই ঘুরে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। বিরোধী দল হিসাবে তৃণমূলকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতেও নেওয়া হচ্ছে নানা কর্মসূচি। সম্প্রতি বাংলায় সভা করে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তার আগে ঘুরে গিয়েছেন অমিত শাহ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে এমন কিছু প্রশ্ন তুলেছেন তা অস্বস্তি বাড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেসের।
কোথায় যাচ্ছে অর্থ?
সম্প্রতি মেদিনীপুরের কলেজ ময়দানে সভা করে নরেন্দ্র মোদী এই প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন প্রকল্প খাতে অর্থ দেওয়া হয় রাজ্যকে। কিন্তু কোথায় সেই অর্থ খরচ হচ্ছে তার হিসাব পাওয়া যায় না। রাজ্য সরকার হিসাব দিতে অপরাগ। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের অর্থ যে সঠিকভাবে খরচ হচ্ছে না তা উন্নয়নের হাল দেখেও বোঝা যাচ্ছে বলে ইঙ্গিত দেন নরেন্দ্র মোদী।
বাংলার ভাবনাকে পা দিয়ে পিষে দেওয়া হচ্ছে
বাংলাকে দেশভক্তদের জন্মভূমি বলে মন্তব্য করেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর মতে, ক্ষমতার দখলের নেশায় যদি কিছু মুষ্ঠিমেয় মানুষ ভেবে থাকেন বাংলার মানুষের ভাবনাকে পা দিয়ে পিষে দেওয়া যায়, তাহলে তারা দেওয়ালে লেখা ইতিহাস পড়ে নিন। অত্যাচারীর পতন নিশ্চিত। কোনও অত্যাচারী ছাড় পাবে না।
নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে আদালতের উপর ভরসা নেই
প্রধানমন্ত্রীর মতে, 'যারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করে না। যারা নির্বাচন প্রক্রিয়াতে বিশ্বাস রাখে না। হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট- সবজায়গাতেই যেখানে রাজ্য সরকারকে লাঠির বাড়ি খেতে হয়। এটা বাংলা-আর এরা এখন আর টিকে থাকতে পারবেন না।'
কয়েক মাসের মধ্যে বাংলায় পরিবর্তন
নরেন্দ্র মোদীর তাঁর বক্তব্যে বলেন, 'বামপন্থীদের সময় প্রচুর অত্যাচার সইতে হয়েছিল বাংলাকে। কিন্তু, বাংলার মানুষ সেই অত্যাচারীদের পতন ঘটিয়েছে। বামপন্থীদের পতনে অনেকটা সময় লেগেছিল। কিন্তু এবার আর তা লাগবে, মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলার মানুষ এই অত্যাচারিদের পতন ঘটাবে বাংলা এখন সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে। সুযোগ পেলেই পাল্টে দেবে।'
পুজার মতো উৎসবেও আঘাত
পশ্চিমবঙ্গের মানুষের পক্ষে সাধারণ জী়বন-যাপনও এখন কঠিন হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন নরেন্দ্র মোদী। পুজোর মতো উৎসবেও নানা ভাবে বাধা-বিঘ্ন তৈরি করা হচ্ছে বলেও তিনি তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন। মহান বাংলার মহান পরম্পরাকেও পিষে ফেলার চেষ্টা চলছে।
সিন্ডিকেটের মর্জিতেই চলতে হবে
সিন্ডিকেট নিয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলকে তীব্র আক্রমণ করেন মোদী। তিনি বলেছেন, 'সিন্ডিকেট ছাড়া বাংলায় কিছু করা সম্ভব নয়। নতুন কোম্পানি খোলা হোক বা হাসপাতাল-স্কুল বা সড়ক বানানো হোক- সিন্ডিকেটকে বাদ দিতে কিছু করা সম্ভব নয়। কার কাছে জিনিস কিনতে হবে? কার কাছ থেকে সিমেন্ট নিতে হবে? কার কাছ থেকে বালু-পাথর নিতে হবে? কোন দোকান থেকে মাল কিনতে হবে? সবই ঠিক করে দেয় সিন্ডিকেট। '
চাষিদের ফসল বিক্রিতেও সিন্ডিকেট
চাষিরা কোথায় ফসল বিক্রি করবেন তাতেও সিন্ডিকেট হস্তক্ষেপ করছে বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
কলেজে ভর্তিতেও সিন্ডিকেট
কলেজে ভর্তিতেও সিন্ডিকেটে দ্বারস্থ হতে হচ্ছে বলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলেছেন নরেন্দ্র মোদী। তারঁ দাবি, সিন্ডিকেটকে তোলা না দিলে কলেজে ভর্তির কোনও সুযোগই মেলে না।
চিটফাণ্ডেও সিন্ডিকেট
চিটফাণ্ড, আলুর বন্ড-এর নাম করে যে চক্র চলে তাতেও সিন্ডিকেটের মদত রয়েছে বলে মনে করছেন প্রধানমন্ত্রী। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেছেন, কী ভাবে চিটফান্ড, আলুর বন্জের চক্র চলবে তারও নির্দেশ দেয় এই সিন্ডিকেট।
বাংলাকে 'ওল্ড-এজ হোম'-এ পরিণত করা হয়েছে
বছর খানেক বাংলায় নির্বাচনী প্রচারে এই তোপটি দেগেছিলেন নরেন্দ্র মোদী। বাংলায় কর্মসংস্থানের হাল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন, 'কাজের খোঁজে যুবকরা ভিনরাজ্যে পাড়ি জমাচ্ছে। বাম ও তৃণমূল বাংলাকে ওল্ড-এজ হোমে পরিণত করেছে।'