সর্দার প্যাটেলের জন্যই গুজরাতের জুনাগড় পাকিস্তানের অংশ হতে হতে বেঁচেছে
সর্দার প্যাটেল নিশ্চিত করেন যাতে জুনাগড় ভারতের অংশই থাকে।
প্রাক্তন উপ প্রধানমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার প্যাটেলের ১৮২ মিটার উঁচু মূর্তি উন্মোচিত হয়েছে গুজরাতে। এদিন তার উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একটা সময়ে জুনাগড়ের নবাবকে পর্যন্ত কড়কে দিয়েছিলেন সর্দার প্যাটেল। তাঁকে বাধ্য করেন পাকিস্তানের সঙ্গ ছেড়ে ভারতের হাত ধরতে।
ঘটনা হল, স্বাধীনতার পূর্ববর্তী সময়ে দেশ ভাগ নিয়ে আলোচনা-দাবি-দাওয়া শুরু হয়। জুনাগড়ের নবাব মহাবত খান রসুল খানজী তৃতীয় পাকিস্তানের সঙ্গে থাকবেন বলে ঠিক করেন।
এখন ঘটনা হল, মোট চারটি জায়গা ভারত ছেড়ে পাকিস্তানের সঙ্গে যাওয়ার কথা ভেবেছিল ও ঘোষণা করেছিল। সেইসময়ে প্যাটেল ছিলেন গুজরাতের নেতা। কাশ্মীর ও হায়দরাবাদকে ভারতে রাখা যতটা কঠিন ছিল ঠিক ততটাই ছিল জুনাগড়ের নবাবকে আটকে রাখা।
তাতে উদ্যোগ নেন সর্দার প্যাটেল। তিনি নিশ্চিত করেন যাতে জুনাগড় ভারতের অংশই থাকে। স্থানীয়রা না চাইলেও জুনাগড়ের নবাব সকলের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে পাকিস্তানের অংশ হতে চেয়েছিলেন। তাঁকে উসকেছিলেন তাঁক দেওয়ান শাহনওয়াজ ভুট্টো। যিনি জুলফিকার আলি ভুট্টোর পিতা ও বেনজির ভুট্টোর ঠাকুর্দা ছিলেন। যাতে বাধা হয়ে দাঁড়ান সর্দার প্যাটেল।
লর্ড মাউন্টব্যাটেন দেশভাগের সময় জুনাগড়ের নবাবকে ভারতের সঙ্গে থাকতে বলেছিলেন। তবে নবাব গোঁ ধরে থাকেন। এবং তা ভারত সরকারকে জানাননি। প্যাটেল জানতে পেরে উদ্যোগী হন। ভিপি মেননকে সঙ্গে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন প্যাটেল।
[আরও পড়ুন:সর্দার প্যাটেল 'কার'! নির্বাচনের মুখে মোদী জবাব দিলেন অনেক প্রশ্নের]
সমস্যা বেগতিক দেখে মাউন্টব্যাটেন কিছুটা ভারতের বিপক্ষে চলে যান। তিনি যুদ্ধ হোক সেটা চাননি। মোট তিনটি শর্ত দেওয়া হয় জুনাগড় নিয়ে। প্রথমত জুনাগড়কে রাষ্ট্রপুঞ্জের হাতে দেওয়া হোক। দ্বিতীয়ত, জুনাগড়ে ভারতীয় সেনা প্রবেশ করবে না। তৃতীয়ত জুনাগড়ে গণভোটে ঠিক হোক কী হবে।
[আরও পড়ুন:'স্ট্যাচু অফ ইউনিটি'র উদ্বোধন! পর্যটনে বৃদ্ধির আশায় রাজ্য]
তবে প্যাটেল এর কোনও শর্তই মানেননি। মাউন্টব্যাটেনকে অন্ধকারে রেখে ভারতীয় সেনা জুনাগড়ে প্রবেশ করে। বাকীরা কেউ কিছু বোঝার আগেই ১৯৪৭ সালের ৯ নভেম্বর জুনাগড় ভারতের দখলে চলে আসে। পাকিস্তানের সমস্ত স্বপ্ন বানচাল করে জুনাগড় ভারতের চিরস্থায়ী অংশ হয়ে যায়। নবাবের ক্ষমতা ছিল না তিনি ভারতের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়বেন। ফলে তিনি সরকারকে আহ্বান জানান এই অঞ্চলের দখল নিতে। তারপর থেকে জুনাগড় ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ।