সারদা কেলেঙ্কারি - কীভাবে সিবিআই-কে কিস্তিমাত দিতে চাইছে তৃণমূল
সারদা কাণ্ডে মোক্ষম আঘাত পেয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের বহু নেতাদের গ্রেফতারির ফলে দলের ভাবমূর্তি নিশ্চিতভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে।
সারদা কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত অন্যান্য খবরের জন্য ক্লিক করুন এখানে
সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত আসলে বিজেপি দ্বারা চালিত হচ্ছে, এই অভিযোগে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে চলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। খুব শীঘ্রই মামলা দায়ের করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানানো হয়েছে। যদিও এও জানানো হয়েছে যে দলের কোনও সদস্য এই বিষয়ে আদালতেআর্জি জানাবে তারা।
তৃণমূলের আবেদনে কী থাকবে
সারদা কাণ্ডের তদন্তে যেভাবে একের পর এক তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী জড়িয়ে পড়ছেন তাতে চাপে দল। দলের দাবি সিবিআই শুধুমাত্র তাদের দলের নেতা-কর্মীদের নিশানা বানাচ্ছে। কিন্তু যারা সারদা গোষ্ঠী চালাত তাদের বিষয়ে সেভাবে নজর দিচ্ছে না সিবিআই তদন্তকারি অফিসাররা।
সিবিআই-কে ব্যবহার করে বিজেপি রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে চাইছে। তৃণমূলের এক নেতা ওয়ানইন্ডিয়াকে জানিয়েছে, আমরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হব। সিবিআই-এর উপর নজরদারির আবেদন জানাব। এটা অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয় যে সিবিআই ঠিক যা যা বিবৃতি দিচ্ছে তদন্তও ঠিক সেইদিকেই এগোচ্ছে।
তৃণমূল যুক্ত হবে না
শীর্ষ আদালতে যে আর্জি জানানো হবে তার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও নেতা থাকবেন না। সারদা গোষ্ঠীতে বিনিয়োগকারি এক ব্যক্তিই সারদা কাণ্ডে স্বচ্ছ তদন্তের আবেদন জানাবেন। সারদা তদন্ত প্রত্যক্ষ অনুসন্ধানের জন্য আদালতের হস্তক্ষেপ চাইবেন ওই ব্যক্তি, পাশাপাশি তার টাকা ফেরতের আর্জি জানাবেন তিনি।
আসলে তৃণমূল চাইছে শীর্ষ আদালতের নজরদারিতে যদি কোনওভাবে তাদের দলের নেতা-কর্মীদের দিক থেকে নজর সরে যায় এবং মামলার মোড় যেন বদলে যায়। আবেদনকারী এও জানাবেন যে সিবিআই পশ্চিমবঙ্গে কয়েকজন নেতার পিছনে হাত ধুয়ে পড়ে গিয়েছে।
আবেদনকারী এই প্রশ্ন তুলবে যে, সিবিআই একদিনের জিজ্ঞাসাবাদেই কী করে রাজ্যের মন্ত্রীকে গ্রেফতার করতে পারে, যেখানে ঠিক এর আগের দিনই বিজেপির তরফে বিবৃতিতে ঠিক একই ঘটনা ঘটতে চলেছে বলে বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল। এর থেকেই প্রমাণ হয় যে বিজেপিই সারদা কাণ্ডে সিবিআই-এর তদন্ত চালনা করছে।
মমতার অনুমতি মিলেছে
শীর্ষ আদালতে এই আবেদন জানানোর অনুমতি মিলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফ থেকেও। প্রথমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেয়েছিলেন সরকার এই বিষয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানাক। তবে তা সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তাঁর পরামর্শদাতারা তাঁকে জানিয়েছিলেন এতে প্রতিকূল প্রভাব পড়তে পারে।
তাই শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তৃণমূলের যে আবেদন তা একজন বিনিয়োগকারীর মাধ্যমে শীর্ষ আদালতের নজরে আনা হবে। একবার একবার আবেদন দায়েরের পর বিজ্ঞপ্তি জারি হলে শীর্ষ আদালত রাজ্য সরকারকে এই আবেদন নিয়ে রাজ্যসরকারের বিবৃতি চাইবে।
আর সেই সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে তৃণমূল।
শেখানো বুলি
তৃণমূলের অভিযোগ, সিবিআই বিজেপির তোতাপাখি, বিজেপির শিখিয়ে দেওয়ো বুলিই বলছে সিবিআই। তৃণমূল মনে করছে আবেদনকারীর উচিত বিজেপির বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের কাছে অভিযোগ দায়ের করা। একইসঙ্গে জানানো উচিত কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি দল কীভাবে সারদা তদন্তকে প্রভাবিত করছে।