"রাশিয়ার সীমানার কোনও শেষ নেই", পুতিন মজা করে বললেও পশ্চিম তটস্থ
পশ্চিমের সঙ্গে যখন মস্কোর সম্পর্ক বেশ খারাপ, তখন রুশ রাষ্ট্রপতির এহেন বক্তব্য নানা মহলেই চিন্তার ছাপ ফেলেছে
একটি বাচ্চা ছেলের সঙ্গে তিনি কথাটা খেলাচ্ছলে বললেন ঠিকই, কিনতু পশ্চিমি দুনিয়াকে উদ্বিগ্ন করে তোলার জন্য এটাই যথেষ্ট ছিল।
শুক্রবার (নভেম্বর ২৫) মস্কোতে রাশিয়ান জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি দ্বারা আয়োজিত একটি পরিষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে পুতিন একটি নয় বছরের ছাত্রকে জিজ্ঞেস করেন: "রাশিয়ার সীমানা কোথায় শেষ হয়েছে?"
মিরোস্লাভ ওস্কিরকো নাম প্রতিভাবান বালক যখন উত্তর দেয় বেরিং প্রণালীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার সীমানা শেষ হয়, পুতিন তখন তাকে উত্তরে বলেন: "রাশিয়ার সীমানা কোথাও শেষ হয় না।" এরপরে রাশিয়ার দোর্দণ্ডপ্রতাপ রাষ্ট্রপতি বলেন তিনি নেহাতই মজা করে কথাটি বলেছেন। পুতিনের মন্তব্যে উপস্থিত দর্শকরা হেসে ওঠেন। দোসরষকদের মধ্যে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু, যিনি আবার জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটির প্রধান, তিনিও ছিলেন।
কিনতু
ততক্ষণে
পুতিনের
কথাটির
যথেষ্ট
প্রভাব
চারিদিকে
পড়ে
গিয়েছে।
সোশ্যাল
মিডিয়া
ওয়েবসাইট
টুইটারেও
"রাশিয়াজ
বর্ডার্স"
ট্রেন্ড
করতে
শুরু
করে
দেয়
নিমেষে।
পশ্চিম
এবং
নেটোর
সঙ্গে
ক্রেমলিনের
সম্পর্কের
টানাপড়েনের
মাঝে
পুতিনের
মুখে
এই
মস্করাও
যে
রাশিয়ার
প্রতিপক্ষ
দেশগুলির
কাছে
আস্বস্তজনক
হয়নি
একটুও,
তা
বুঝতে
অসুবিধা
হয়
না।
পুতিনের বর্তমান রাষ্ট্রপতিত্বকালে রাশিয়া যে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পেশী প্রদর্শনের খেলায় মনোনিবেশ করেছে তা রাশিয়ার পুরোনো শত্রু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও মেনে নিয়েছে। সিরিয়া, ক্রাইমিয়া, ইউক্রেন ইত্যাদি নানা অঞ্চলে পশ্চিমের সঙ্গে সমানে সমানে টক্কর দিয়ে চলেছেন পুতিন। এমনকী, বিদায়ী মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামাও কয়েকদিন আগে রাশিয়াকে "সামরিক মহাশক্তি" হিসেবেও অবিহিত করেছেন।
২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের থেকে ক্রাইমিয়াকে দখল করে নেয় পশ্চিমের চোখরাঙানিকে উপেক্ষা করেই। গতবছর পূর্বতন সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গ প্রদেশ জর্জিয়াও রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের অঞ্চল দখল করার অভিযোগ আনে।
সিরিয়ার স্বৈরাচারী রাষ্ট্রপতি বাশার আল-আসাদের সঙ্গেও মিত্রতা বজায় রেখেছে মস্কো। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক আদালতের থেকেও বেরিয়ে গিয়েছে তারা। অর্থাৎ, কোনওভাবেই তারা আর পশ্চিমের সঙ্গে সহযোগিতা দেখাতে রাজি নয়।
আর এই প্রেক্ষাপটে পুতিনের এই 'মজা' তাই হালকাভাবে নিচ্ছে না পশ্চিমি দুনিয়া। বর্তমান সময়ে পশ্চিম দুনিয়ার নেতৃত্বে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এত টানাপড়েন চলছে এবং ওবামার উত্তরসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্প আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে প্রথাগত নীতি মেনে চলার পক্ষপাতী না হওয়াতে মস্কো ওয়াশিংটনের স্থান ভরাট করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।