বর্ধমান বিস্ফোরণে কীভাবে টাকার পাচার হয়েছিল!
ভারত ও বাংলাদেশের গোয়েন্দা আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন আল কায়েদা যে পথে টাকা পয়সার লেনদেনের কাজ সারত সেই একই পথে জামাত-এ-ইসলামির শাখা জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবিও টাকার পাচার করত।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ভূমিকা
গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন বর্ধমান বিস্ফোরণে অর্থ সরবরাহের ক্ষেত্রে রাবাতা-আল-আলম-আল-ইসলামি, আল নাহিয়ান এবং রিভাইভাল অফ ইসলামিক হেরিটেজ মূলত এই তিনটি স্বেচ্ছেসেবী সংস্থারই হাত রয়েছে।
২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৮৫০ কোটি টাকা স্থানান্তরিত করা হয়েছে এই সূত্রে। এই টাকার কিছু অংশ বাংলাদেশের ইসলামি ব্যাঙ্কে জমা করা হয়েছিল। বাকি টাকাটা সৌদি আরব, কুয়েত এবং মেক্সিকোতে পাঠানো হয়েছিল। কুয়েতের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাঅবং সৌদি আরবের দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই টাকা গ্রহণ করেছিল যা হাওয়ালা চ্যানেলের মাধ্যমে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল তখন। টাকা সামলানোর দায়িত্ব কৌসরকে দেওয়া হয়েছিল।
সন্ত্রাসবাদের জন্যই বের করা হত টাকা
এই 'অপারেশন'-এর মাত্রা বিচার করে গোয়েন্দাদের অনুমান গত ৪ বছরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় ১৫ কোটি টাকা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে। আর তা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয় ২০১০ সালের শুরুতে। নির্দিষ্ট বিরতির পর পর কুয়েত এবং সৌদি আরব থেকে এই তিন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে টাকা ভারতে পাঠানো হত।
অস্ত্র ও বারুদের জন্য জেএমবি বার্ষিক ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। সদস্যদের পারিশ্রমিক হিসাবে ৪০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছিল। বাড়ি ভাড়া ও ঘুষবাবদ ৩ কোটি টাকা ধরে রেছেছিল। বাংলাদেশ ও ভারতের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই এই বিষয়গুলি জানা গিয়েছে।
রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ
গোটা বর্ধমান ঘটনাটাতেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। এবং দুঃখজনক বিষয় এটাই যে ভারতরে জঙ্গী কার্যকলাপের ক্ষেত্র তৈরি করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। আর সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুততার সঙ্গে এনআইএ-কে তদন্তভার দিয়েছিল। এনএসএ এবং আইবি প্রধানকে পশ্চিমবঙ্গে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পাঠানো হয়েছিল। এরপরই নাশকতার ছক ছা়ড়াও আরও বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের আভাস পাওয়া গেল। ভারতের মাটিতে হাতিয়ার করে বাংলাদেশে হামলা চালানোর চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল গোয়েন্দা আধিকারিকদের হাতে।
জামাত-এ-ইসলামির আসল লড়াইটা ছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লিগের বিরুদ্ধে। যখন দেখন রাজনৈতিকভাবে তারা জিততে পারবে না, তখনই জেএমবি-কে কাজে লাগালো এই লড়াইটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।