For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

ভারতীয়দের কুকুরের সঙ্গে তুলনা, ইংরেজদের ক্লাব জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন প্রীতিলতা, জানুন এই কাহিনি

ইচ্ছে করলে জীবনটাকে অন্যভাবে সাজাতে পারতেন। কিন্তু প্রীতিলতার বিশ্বাস ছিল শিক্ষা আনে আলো, শিক্ষা আনে চরিত্রের দৃঢ়তা। তাই ইংরেজদের প্রবর্তন করা শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও কখনও তাদের প্রতি অনুরক্ত হননি।

  • By Oneindia Staff
  • |
Google Oneindia Bengali News

ইচ্ছে করলে জীবনটাকে অন্যভাবে সাজাতে পারতেন। কিন্তু প্রীতিলতার বিশ্বাস ছিল শিক্ষা আনে আলো, শিক্ষা আনে চরিত্রের দৃঢ়তা। তাই ইংরেজদের প্রবর্তন করা শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও কখনও তাদের প্রতি অনুরক্ত হননি। বেথুন কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতক প্রীতিলতার এক ও একমাত্র লক্ষ ছিল পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে দেশ থেকে উদ্ধার করা।

স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে প্রথম মহিলা শহিদ প্রীতিলতা

সালটা ১৯৩২। মাস্টারদা সূর্যসেন চট্টগ্রামে পাহারটালি ইউরোপিয়ান ক্লাব-এ হামলার ছক কষলেন। কারণ, ইংরেজদের এই ক্লাবের ভারতীয়দের প্রবেশ শুধু নিষেধই ছিল না, সেইসঙ্গে এমন একটি বোর্ড ক্লাবের বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল যা ভারতীয়দের পক্ষে অপমানকর ছিল। এই বোর্ডে লেখা ছিল 'শুধুমাত্র কুকুর ও ভারতীয়দের প্রবেশ নিষিদ্ধ এখানে'।

পাহারিটালা ইউরোপিয়ান ক্লাবে হামলার জন্য প্রথমে কল্পনা দত্তকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হামলার একদিন আগে পুলিশ কল্পনাকে গ্রেফতার করে। এরপর মাস্টারদা সূর্যসেন এই হামলার জন্য প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারকে নেত্রী হিসাবে নির্বাচিত করেন। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের সশস্ত্র বিপ্লবে এটাই ছিল প্রথম মহিলা বিপ্লবীর নেতৃত্বে আত্মঘাতি অভিযানের ঘটনা।

প্রীতিলতার নেতৃত্বে থাকা দলের সদস্যদের হাতে পটাসিয়াম সায়নাইড তুলে দিয়েছিলেন মাস্টারদা। ধরা পড়লে সায়নাইড আত্মঘাতী হতে হবে বলে নির্দেশও দেওয়া হয়। অভিযানের দিন সকাল অর্থাৎ ২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৩২ সাল, প্রীতিলতা নিজে পঞ্জাবী যুবকের বেশ ধরলেন। তাঁর সঙ্গী কালীশঙ্কর দে, বীরেশ্বর রায়, প্রফুল্ল দাস, শান্তি চক্রবর্তী পরলেন ধুতি ও হাফ শার্ট। আরও তিন সঙ্গী- মহেন্দ্র চৌধুরী, সুশীল দে এবং পান্না সেন পরলেন লুঙ্গি ও শার্ট।

১০.৪৫ মিনিটে প্রীতিলতার নেতৃত্বে বিপ্লবীরা হামলা চালাল ইংরেজদের ক্লাবে। তিনটি গ্রুপে ভাগ হয়ে বিপ্লবীদের এই হামলায় দিশেহারা হয়ে যায় ব্রিটিশরা। হামলায় সময় ক্লাবের ভিতরে ৪০ জন ছিলেন। এদের মধ্যে কয়েক জন ইংরেজ পুলিশ অফিসারও ছিলেন। তারা পাল্টা গুলি চালাতে থাকে। প্রীতিলতাদের ছোড়া গুলিতে সুলিভান নামে এক ইংরেজ মহিলার মৃত্যু হয়। জখম হয় চার জন পুরুষ ও সাত জন মহিলা।

ব্রিটিশ পুলিশের ছোড়া গুলিতে জখম হন প্রীতিলতা। ঘটনাস্থলেই সায়নাইড মুখে পুড়ে নেন তিনি। পরের দিন ক্লাবের পিছন থেকে প্রীতিলতার দেহ উদ্ধার হয়। এছাড়াও তাঁর ব্যাগ থেকে মেলে বিপ্লবী রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের একটি ছবি, কিছু লিফলেট, কার্তুজ, বাঁশি এবং হামলার বিস্তারিত তথ্য সম্বিলিত নকসা। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ইংরাজরা উল্লেখ করেছিল যে প্রীতিলতার শরীরে গুলির আঘাত প্রাণঘাতী ছিল না। তবে রিপোর্টে প্রীতিলতার মৃত্যুর কারণ হিসাবে সায়নাইডের উল্লেখ করা ছিল না।

বাঙালি বিপ্লবীদের কাছে যে সায়নাইড পৌঁছেছে তা ভাবতেই পারেনি ব্রিটিশরা। সত্যি সত্য়ি প্রীতিলতার কাছে পটাশিয়াম সায়নাইড ছিল কি না তা নিয়েও ধন্ধে ছিল তারা। সেই কারণে প্রীতিলতার মৃত্যু আজও মেডিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী রহস্যাবৃত থেকে গিয়েছে। যদিও, ভারতের সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রীতিলতা ছিলেন প্রথম মহিলা শহিদ শুধু নয় তিনি প্রথম বিপ্লবী যিনি সায়নাইড খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন।

১৯১১ সালের ৫ মে চট্টগ্রামের পাটিয়া উপজেলার ধলঘাট গ্রামে মধ্যবিত্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম প্রীতিলতার। প্রীতিলতাদের আসল পদবি ছিল দাশগুপ্ত। তাঁর পূর্বপুরুষরা ওয়াদ্দেদার পদবিটি কোনও সম্মানিয় ব্যক্তির কাছ থেকে পেয়েছিলেন। প্রীতিলতার বাবা জগবন্ধু ওয়াদ্দেদার ছিলেন চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালিটির ক্লার্ক। মা প্রতিভাময়ী দেবী ছিলেন গৃহবধূ। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে প্রীতিলতা ছিলেন মেজ। তাঁর ডাক নাম ছিল রানি।

চট্টগ্রামে ডক্টর খাস্তগীর গভর্মেন্ট গার্লস স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে প্রীতিলতা ১৯২৯ সালে ঢাকার ইডেন কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। ঢাকা বোর্ডের ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন প্রীতিলতা। এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্য়ালয়ের অধীনে স্নাতক স্তরের পড়াশোনার জন্য বেথুন কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকেই দর্শনে স্নাতক হন প্রীতিলতা। কিন্তু তাঁর ব্রিটিশ বিরোধিতায় স্নাতক স্তরে উত্তীর্ণ হওয়া সার্টিফিকেট হাতে পাওয়া হয়নি। ব্রিটিশ সরকার তাঁর সার্টিফিকেট আটকে দিয়েছিল।

কলকাতা থেকে ফিরে চট্টগ্রামের ইংরাজি মাধ্যম স্কুল নন্দনকানন অপর্ণাচরণ-এ প্রধানশিক্ষিকা হিসাবে কাজে যোগ দেন। এই সময়ই তিনি আস্তে আস্তে মাস্টারদা সূর্য সেন-এর সংস্পর্শে আসেন। এবং সশস্ত্র বিপ্লবের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। বিপ্লবীদের কাছে বহুবার বিস্ফোরক পৌঁছে দিয়েছিলেন প্রীতিলতা। নিজের স্কুল জীবনে রানী লক্ষীবাঈ-এর অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত প্রীতিলতার লক্ষ্যই ছিল দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করা।

English summary
The story of Pritilata Weddedar was the first female revolutionist of Indian Freedom Struggle who martyred for her country. She took potassium cyanide in a mission in Chittagong.
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X