২ নভেম্বর ইমরানের ইসলামাবাদ বনধ-এর আগে পারদ চড়ছে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে
আগামী ২ নভেম্বর ইসলামাবাদে বিরাট বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে চলেছে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ। তাঁকে থামাতে সক্রিয় শরিফ সরকারও। সব মিলিয়ে, পাকিস্তানের রাজনীতি এই মুহূর্তে সরগরম।
আগামী ২ নভেম্বর ইসলামাবাদে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর (পিটিআই) বিরাট প্রতিবাদ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ক্রমেই পারদ চড়ছে সেদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে। গত রবিবার (অক্টোবর ৩০) পিটিআই-এর সভাপতি ইমরান খান দাবি করেন যে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সমস্ত অপরাধ ঢাকতে রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করছে।
এদিন পাকিস্তানের রাজধানীর বানি গালায় তাঁর নিজের বাড়িরই সামনে এই প্রাক্তন ক্রিকেটার নিজের দলের কর্মী-সমর্থকদের বলেন একজন "অপরাধী"কে আড়াল করতে দেশের অর্থ জলের মতো ব্যয় করা হচ্ছে, কাজে লাগানো হচ্ছে রাষ্ট্রশক্তিকে।
ইমরান পাকিস্তানের বিচার ব্যবস্থার কাছেও আর্জি জানান বিষয়টির উপরে আলোকপাত করতে।
ইমরান বলেন শরিফ সরকার তাঁদের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে ব্যাহত করতে ইসলামাবাদ যাওয়ার সমস্ত পথ আটকে সাধারণ মানুষের অশেষ ক্ষতি করছে। গত শনিবার (অক্টোবর ২৯) রাতে পথ অবরুদ্ধ দেখে বিকল্প রাস্তা খুঁজতে গিয়ে খাদে পড়ে মারা যান এক পাকিস্তানী সেনা আধিকারিক। এদিন তাঁর প্রসঙ্গ তুলেও ইমরান পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর ভাই শাহবাজ শরিফকেও তীব্র আক্রমণ করেন।
সম্প্রতি তাঁর দলের এক নেতার গাড়ি থেকে অস্ত্র এবং মদ উদ্ধার হওয়ার প্রসঙ্গেও ইমরান অভিযুক্ত করেন শরিফ সরকারকে। বলেন তাঁর দলের নেতা আমিন গান্দাপুরের গাড়ি থেকে থেকে যে অস্ত্র পাওয়া গিয়েছে তা তাঁর ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য ছিল। অতীতে তালিবানরা পিটিআই-এর আধিকারিকদের লক্ষ্য করে আক্রমণ করার পরেই তাঁর দলীয় নেতারা নিরাপত্তার কারণে ইস্ট্রো রাখেন বলে জানান ইমরান। গান্দাপুরের কাছে পাওয়া যাওয়া অস্ত্র যে সম্পূর্ণ আইনি, সেকথা জানান ইমরান।
পাকিস্তানের একমাত্র ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক বলেন সরকার তাঁর দলের লোকেদের ধরপাকড় করছে কোনও ভিত্তি ছাড়াই। রবিবার প্রচুর বিক্ষোভকারীকে পুলিশ গ্রেফতার করার পরিপ্রেক্ষিতেই ইমরান বলেন একথা।
অতীতে সেনা শাসনের সময়েও পাকিস্তানে এরকম প্রশিতিটি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেন এই বর্ষীয়ান নেতা।
তবে তাঁর দলও যে ছেড়ে কথা বলবে না, সেটাও পরিষ্কার করে দেন ইমরান। বলেন সরকারের এই দমননীতির জন্য হয়তো দোসরা নভেম্বরের পরিবর্তে তাঁরা তিন বা চার তারিখে তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবেন কিনতু করবেনই। "আমার প্রাণ চলে গেলেও এই প্রতিবাদ থেকে আমরা সরব না," সাফ বলেন ইমরান।
প্রধানমন্ত্রী শরিফকে প্রচ্ছন্ন সাবধানবাণী শুনিয়ে ইমরান বলেন তিনি যা করার করতে পারেন কিন্তু দেশের টাকা লুট করার জবাবদিহি তাঁকে দিতেই হবে।
তিনি বলেন সম্প্রতি দেশের তথ্য-বিষয়ক মন্ত্রী পারভেজ রশিদকে প্রধানমন্ত্রী ইস্তফা দিতে বলে তাঁকে বলির পাঁঠা করেছেন। এটাই যথেষ্ট নয়, দেশ প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরও জবাব চায়, বলেন ইমরান। সম্প্রতি সরকারের গোপন তথ্য সংবাদমাধ্যমের কাছে ফাঁস করার অভিযোগে রশিদকে ইস্তফা দিতে বলা হয়।