নন্দন নিলেকানি ফের ইনফোসিসের দায়িত্বে, ভারতের ডিজিটাল অগ্রগতির অন্যতম পুরোধা তিনি
ফের একবার ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নন্দন নিলেকানির হাতেই সংস্থার দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হল।
ফের একবার ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নন্দন নিলেকানির হাতেই সংস্থার দায়িত্বভার তুলে দেওয়া হল। এবার ইনফোসিসের নন এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান হলেন নিলেকানি। বৃহস্পতিবার সংস্থার তরফে এখবর জানানো হয়েছে। নিলেকানির ফিরে আসার পর সংস্থা ফের বিতর্ক কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে। এহেন নিলেকানি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক একনজরে।
প্রথম জীবন
১৯৫৫ সালের ২ জুন কর্ণাটকের ব্যাঙ্গালোরে (বর্তমানে বেঙ্গালুরু) জন্ম নন্দন নিলেকানির। বাবা মোহন রাও নিলেকানি মাইসোর ও মিনার্ভা মিলসের জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন। মা দুর্গা ছিলেন সংসারের দায়িত্বে। নিলেকানির দাদা বিজয় নিউক্লিয়ার এনার্জি ইনস্টিটিউটে কাজ করেছেন। তাঁর পরিবার উত্তর কর্ণাটকের কোঙ্কনি ব্রাহ্মণ।
পড়াশোনা
বেঙ্গালুরুর বিশপ কটন স্কুল, সেন্ট জোসেফ স্কুল ও পিইউ কলেজ, ধারওয়াড় থেকে পড়াশোনা করেছেন নিলেকানি। এরপরে আইআইটি বম্বে থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং করেছেন নন্দন নিলেকানি।
কেরিয়ার
১৯৭৮ সালে কর্মজীবন শুরু করার পরে মুম্বইয়ের পাটনি কম্পিউটার সিস্টেমসে কাজ শুরু করেন নিলেকানি। সেখানে তাঁর ইন্টারভিউ নেন এনআর নারায়ণমূর্তি। এরপরে ১৯৮১ সালে মূর্তি সঙ্গে চাকরি ছেড়ে বেরিয়ে এসে নিলেকানি ও বাকী আরও পাঁচজন মিলে নিজেদের কোম্পানি ইনফোসিসের গোড়াপত্তন করেন।
ইনফোসিসের সিইও
২০০২ সালের মার্চে ইনফোসিসের সিইও নির্বাচিত হন নন্দন নিলেকানি। ২০০৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি সিইও-র দায়িত্ব সামলেছেন। সিইও পদ গ্রহণের আগের দুই দশকে ইনফোসিসে ম্যানেজিং ডিরেক্টর, প্রেসিডেন্ট ও সিওও-র পদ সামলেছেন তিনি। তিনি সিইও থাকাকালীন ইনফোসিস বহরে ও আয়ে ছয়গুণ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
আধারের দায়িত্বে
অনেকেই জানেন না, সারা দেশে আধার কার্ড চালু করার পিছনে অন্যতম মস্তিষ্ক এই নন্দন নিলেকানির। ২০০৯ সালে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথোরিটি অব ইন্ডিয়া- দায়িত্ব নেন নিলেকানি। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং নিজে দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানান নিলেকানিকে। সারা দেশে মাল্টিপারপাস আইডেন্টিটি কার্ড বা ইউনিক আইডেন্টিটি কার্ড তৈরির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
রাজনীতি
নন্দন নিলেকানি ২০১৪ সালে বেঙ্গালুরু দক্ষিণ লোকসভা আসন থেকে জাতীয় কংগ্রেসের টিকিটে প্রার্থী হন। বিজেপি প্রার্থী অনন্ত কুমারের কাছে ২ লক্ষ ২৮ হাজার ভোটে হেরে যান তিনি। অনন্ত কুমার পেয়েছিলেন ৬ লক্ষ ৩৩ হাজার ৮১৬টি ভোট। এদিকে নন্দন নিলেকানির সংগ্রহে ছিল ৪ লক্ষ ৫ হাজার ২৪১টি ভোট। তারপরে আর রাজনীতিতে বিশেষ দেখা যায়নি তাঁকে।
উদ্যোগপতি নিলেকানি
বিভিন্ন সংস্থার নিলেকানির বিনিয়োগ রয়েছে। মোট ১২টি স্টার্ট-আপে তিনি বিনিয়োগ করেছেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য - জাগারনাট, ফোর্টিগো, রেলযাত্রী, লেটসভেঞ্চার, মাবল নেটওয়ার্কের মতো সংস্থা।
সম্মান
২০০৯ সালে টাইম ম্যাগাজিন বিশ্বের সবচেযে প্রভাবশালী ১০০ জনের মধ্যে নন্দন নিলেকানিকে জায়গা দিয়েছে। অন্যতম নবীন শিল্পোদ্যোগী হিসাবে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম-এ অংশ নেন। ২০০৬ সালে তিনি পদ্মভূষণ সম্মান পেয়েছেন। এছাড়া সেইবছরই ফোর্বস এশিয়া নিলেকানিকে 'বিজনেসম্যান অব দ্য ইয়ার' সম্মানে ভূষিত করে।