For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

মুলায়মের ইংরেজি-বিরোধিতা চমক মাত্র, বাস্তবসম্মত নয়

  • By Ananya Pratim
  • |
Google Oneindia Bengali News

মুলায়ম সিং যাদব
হিন্দি বলয়ের রাজনীতিকরা হঠাৎ-হঠাৎ ইংরেজি ভাষার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। এই দফায় যেমন দাগলেন সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো মুলায়ম সিং যাদব। বললেন, বিদেশি ভাষা ইংরেজিকে অবিলম্বে বর্জন করা উচিত। সংসদে ইংরেজিতে ভাষণ, কাজকর্ম বন্ধ হওয়া উচিত। এটাও বলেছেন, অন্যান্য প্রদেশের মানুষদের হিন্দি শিখতে হবে। নিঃসন্দেহে হাততালি কুড়িয়েছেন তিনি। হিন্দি বলয়ে। অথচ ভেবে দেখেননি, বহুভাষী দেশ ভারতবর্ষে আদৌ এটা বাস্তবসম্মত কি না?

কেন তোপ: লক্ষণীয়, পূর্ব, পশ্চিম বা দক্ষিণ ভারতের রাজনীতিকরা ততটা ইংরেজি-বিরোধী নন, যতটা বিরোধী হিন্দি বলয়ের রাজনীতিকরা। এর কারণ মূলত দু'টো।

প্রথমত, স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই ইংরেজির পরিবর্তে সর্বত্র হিন্দি ব্যবহারের চেষ্টা হয়। সেই চেষ্টা কতটা সফল হয়েছে, তা নিয়ে তর্ক চলতেই পারে। কিন্তু, এঁরা হিন্দি ভাষা আর 'আজাদি'-কে সমার্থক করে দেখেন। তাই হিন্দির ব্যবহার থেকে বিচ্যুত হওয়ার অর্থ, 'মানসিক গোলামি'-কে প্রশ্রয় দেওয়া। দ্বিতীয়ত, হিন্দি বলয়ের রাজনীতিকরা ইংরেজিতে ততটা স্বচ্ছন্দ নন। মুলায়ম সিং যাদব থেকে শুরু করে মায়াবতী, লালুপ্রসাদ যাদব থেকে নীতীশ কুমার, সবার ক্ষেত্রেই এক সমস্যা। তুলনায় দাক্ষিণাত্যের নেতারা ঝরঝরে ইংরেজি বলেন। আমাদের দেশে যেহেতু ইংরেজি কইয়েরা সামাজিক গুরুত্ব পান, তাই হিন্দি বলয়ের নেতারা নিঃসন্দেহে হীনমন্যতায় ভোগেন। এই হীনমন্যতাই ইংরেজি-বিরোধিতায় ইন্ধন জোগায়, সন্দেহ নেই।

আরও ব্যাখ্যা: আপাত অর্থে মনে হতেই পারে, সত্যিই তো, হিন্দি আমাদের দেশের ভাষা। কিন্তু, একে কি 'আজাদি'-র সমার্থক বলা চলে? তামিলনাড়ু, কেরল আজও মনে করে, হিন্দিকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এই রাজ্যের মানুষদের কাছে হিন্দির সেই 'আপিল' নেই। বাস্তব তো তাই-ই। ভারতের রাষ্ট্রভাষা কী হবে, এটা নিয়ে যখন সংসদে ভোটাভুটি হয়েছিল, তখন হিন্দি মাত্র এক ভোটে জিতেছিল। কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়ে হিন্দি ভারতের রাষ্ট্রভাষার তকমা পেয়েছে। অথচ সাহিত্যভাণ্ডার, গাম্ভীর্যের দিক থেকে অনেক এগিয়ে বাংলা, তামিল, মালয়ালম ইত্যাদি। এখন হাওড়া, শিয়ালদহ ডিভিশনের লোকাল ট্রেনের গায়ে লেখা থাকে, 'হিন্দি হ্যাঁয় হম, বতন হ্যায় হিন্দুস্তাঁ হমারা।' বেশ! আমাদের দেশ হল হিন্দুস্তান। মেনে নেওয়া গেল। কিন্তু, আমরা হিন্দি হতে যাব কোন দুঃখে? কেন বাঙালি হব না, কেন ওড়িয়া হব না, কেন তামিল হব না, কেন মারাঠি হব না?

আমাদের সংবিধান-প্রণেতারা এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে বেছে নিয়েছিলেন, যাতে প্রতিটি ভাষাগোষ্ঠী নিজেদের সার্বিক বিকাশ ঘটাতে পারে।

আরও খেয়াল করুন, মুলায়ম সিং যাদব বলেছেন, অন্যান্য প্রদেশের মানুষদের হিন্দি শিখতে হবে। অথচ একবারও বলেননি, হিন্দিভাষীদের অন্য কোনও ভারতীয় ভাষা শেখা উচিত। তাতে বরং জাতীয় সংহতি মজবুত করার একটা বার্তা পাওয়া যেত। এতে কিন্তু তাঁর সেই সাম্রাজ্যবাদী মানসিকতাই প্রকাশ পেল। মুলায়ম নিজের দৃষ্টিকোণ থেকে একে 'আজাদি'-র সঙ্গে এক করে দেখতে পারেন, যা একজন বাঙালি, তামিল, কন্নড়, তেলুগু কখনওই দেখবে না! হিন্দি ক্ষেত্র বিশেষে বড় জোর 'লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা' হতে পারে, কিন্তু ভারতে ইংরেজির স্থলে তাকে পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ করা সম্ভব নয়। ইংরেজি শিখলে আপনি একই সঙ্গে বিশ্বের বাজারও মাত করতে পারবেন। হিন্দির ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব নয়। বরং বিশ্বায়িত বসুধায় ইংরেজি আয়ত্তে আনাই বুদ্ধিমানের কাজ।

ত্রিভাষা সূত্র, সংবিধান: ১৯৬৮ সালের 'ন্যাশনাল পলিসি রেজোলিউশন'-এ সরকারিভাবে ত্রিভাষা সূত্র গৃহীত হয়েছিল। তাতে বলা হয়, হিন্দিভাষী ছাত্রছাত্রীদের হিন্দির পাশাপাশি ইংরেজি ও অন্য যে কোনও একটি ভারতীয় ভাষা শিখতে হবে। একইভাবে, অহিন্দিভাষীরা তাদের ভাষার পাশাপাশি হিন্দি ও ইংরেজি শিখবে। ১৯৮৬ সালে সংশোধিত রেজোলিউশনেও এক কথা বলা হয়। কিন্তু, হিন্দিভাষী রাজ্যগুলিই এ ব্যাপারে আর এগোতে চায়নি। ভাষা নিয়ে আমাদের সংবিধানে যথেষ্ট উদার দৃষ্টিভঙ্গি গৃহীত হয়েছে। সপ্তদশ অধ্যায়ে ৩৪৩-৩৫১ ধারায় হিন্দির পাশাপাশি ইংরেজি ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষাগুলি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ভাগ্যিস, আম্বেদকর, রাজেন্দ্রপ্রসাদরা মুলায়মের ভাবনায় ভাবিত হননি।

সুতরাং, মুলায়মের মন্তব্যে হাততালি দেওয়া যায়। তা বাস্তবসম্মত নয়, জাতীয় সংহতির সহায়কও নয়!

English summary
Mulayam Singh's anti-English statement not practical
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X