মান্না দে-র গাওয়া এই গানগুলিতে আজও আচ্ছন্ন আট থেকে আশি
মান্না দে-কে ক্লাসিক্যাল গানের জগতে শুধু ভারতসেরাই নয়, এশিয়ার সেরা গায়ক হিসাবে মনে করা হয়।
বাংলা তথা ভারতীয় আধুনিক গানের জগতে মান্না দে এক প্রবাদপ্রতীম নাম। তাঁকে ক্লাসিক্যাল গানের জগতে শুধু ভারতসেরাই নয়, এশিয়ার সেরা গায়ক হিসাবে মনে করা হয়। প্রবোধ চন্দ্র দে থেকে কীভাবে মান্না দে হয়ে উঠলেন তা বোধহয় তিনি নিজেও বোধহয় উপলব্ধি করতে পারেননি। সমসাময়িক সকলেই মান্না দে-কেই সুরের হিসাবে সেরা বেছেছেন। পদ্মশ্রী, পদ্মবিভূষণ, দাদা সাহেব ফালকে, বাংলার সরকারের তরফে বঙ্গ বিভূষণ সম্মাননায় তিনি সম্মানিত। আসুন ফিরে দেখা যাক মান্না দে-র গাওয়া হাজার হাজার গানের মধ্যে কয়েকটি গানকে।
কফি হাউসের সেই আড্ডা
এই গানের সঙ্গে বাঙালির ওঠা-বসা চিরন্তন। যবে থেকে এই গান প্রকাশিত হয়েছে, তার পরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই গানে আচ্ছন্ন। কলকাতা, কফি হাউস ও সঙ্গে নিটোল বন্ধুত্বের এক অদত্ভুত মিশেল এই গান। যুগে যুগে বাঙালির আবেগের সঙ্গে মিশে রয়েছে গানটি।
আমি যে জলসাগরে
১৯৬৭ সালে অ্যান্টনি ফিরিঙ্গি সিনেমায় উত্তম কুমারের লিপে মান্না দে-র গাওয়া এই গান আজও বাঙালি হৃদয়কে মথিত করে। সিনেমায় মান্না দে ছাড়াও গেয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। সুরকার ও গীতিকার ছিলেন অনিল বাগচি ও গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার।
ও চাঁদ সামলে রেখো
মান্না দে-র গলায় গাওয়া আধুনিক গানগুলির মধ্যে এই গানটি অসম্ভব জনপ্রিয় হয়েছে। এমন সুর ও তাল বোধহয় একমাত্র মান্না দে-র পক্ষেই রাখা সম্ভব ছিল।
আবার হবে তো দেখা
এই গানটিও মান্না দে-র অসম্ভব জনপ্রিয় গান। জীবনের নানা ক্ষেত্রে অলঙ্কার হিসাবে গানটিকে যুক্ত করা যায়। নানা আবেগর মুহূর্তে গানটি দারুণ মানিয়ে যায়। আবার হবে তো দেখা, এ দেখাই শেষ দেখা নয় তো। সত্যিই জীবনের সঙ্গে গানটি বোধহয় মিলে যায় বলেই এত জনপ্রিয় হয়েছে।
হয়ত তোমারই জন্য
তিন ভুবনের পারে সিনেমার এই গানটি বাঙালির চিরকালীন রোমান্টিসিজমের ভাবনার মধ্যে একেবারে উপরের দিকে থাকবে। সৌমিত্র ও তনূজা জুটির উপরে দৃশ্যায়িত গান যুগে যুগে প্রেমিক বাঙালির চিরপছন্দের হয়ে রয়েছে।
জিন্দেগি ক্যায়সি হ্যায় পহেলি
আনন্দ সিনেমার এই গান যেন জীবনের সামনে আয়না ধরার মতো। সলিল চৌধুরীর সুরে গানের কথা এতটাই শক্তিশালী যা শুধু জীবনের কথাই বলে। মান্না দে-র কণ্ঠে তা যেন আরও জীবন্ত হয়ে উঠেছে।
এক চতুর নার
পড়োসন সিনেমার এই ক্লাসিক্যাল গানটি গাওয়া বোধহয় একমাত্র মান্না দে-র পক্ষেই সম্ভব ছিল। যে ইম্প্রোভাইজেশন তিনি গানে করেছেন তা এককথায় অসাধারণ। কিশোর কুমারের বিপরীতে গাওয়া এই গান বলিউড গানের জগতে একটি মাইলস্টোন।
পেয়ার হুয়া ইকরার হুয়া
১৯৫৫ সালের শ্রী ৪২০ সিনেমার এই গান বৃষ্টিভেজা রোমান্টিসিজমের শেষ কথা। রাজ কাপুর ও নার্গিসের আবেদনে বারবার দর্শক মাত হয়েছে, তবে তাতে অনুঘটকের কাজ করেছে মান্না দে-র গান।
পুছো না ক্যায়সে ম্যায়নে
ক্লাসিক্যাল নির্ভর এই গানটিও মান্না দে-ক গাওয়া সেরা গানগুলির মধ্যে পড়ে। যে গানই মান্না দে গেয়েছেন তাতে নিজস্ব ছাপ রেখে গিয়েছেন। গায়কী দিয়েই গান হিট করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
অ্যায় মেরে পেয়ারে বতন
কাবুলিওয়ালা সিনেমার অ্যায় মেরে পেয়ারে বতন গানটি দেশাত্মবোধকে জাগ্রত করে। বিমল রায়ের প্রযোজনায় এই সিনেমা রবি ঠাকুরের কাবুলিওয়ালা গল্পকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়। সিনেমায় অভিনয় করেন বলরাজ সাহনি। সুরকার ছিলেন সলিল চৌধুরী।