২০১৮ সালের সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ, জেনে নিন তিথি ও সময়
মহাকাশে প্রতিনিয়ত বহু মহাজাগতিক ঘটনা ঘটে চলেছে। বিভিন্ন ঘটনার যেমন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে, তেমনই বিভিন্ন ঘটনার নেপথ্য কারণ অনুসন্ধানে ব্যস্ত রয়েছে মহাকাশ বিজ্ঞান।
মহাকাশে প্রতিনিয়ত বহু মহাজাগতিক ঘটনা ঘটে চলেছে। বিভিন্ন ঘটনার যেমন বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে, তেমনই বিভিন্ন ঘটনার নেপথ্য কারণ অনুসন্ধানে ব্যস্ত রয়েছে মহাকাশ বিজ্ঞান। তবুও সকলের অগোচরে বা কখনও গোচরে ঘটে চলেছে নানান ঘটনা। তার কিছুটা প্রভাব আমাদের ছুঁয়ে যাচ্ছে, কিছুবা আমাদের অলক্ষ্য়েই হয়ে চলেছে। এরকমই এক মাহাজাগতিক ঘটনা হল সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণ।
[আরও পড়ুন:সূর্যগ্রহণ ঘিরে বিশ্বের নানা প্রান্তের এইসব পৌরাণিক কাহিনি অবাক করার মতো]
প্রসঙ্গত, চাঁদ যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবীর কোন দর্শকের কাছে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায় কিছু সময়ের জন্য। এই ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ বলা হয়। অন্যদিকে, যখন সূর্য ও পৃথিবীর মাঝখানে চাঁদ অবস্থান নেয়, তখন পৃথিবীপৃষ্ঠের পর্যবেক্ষকের সাপেক্ষে সূর্য চাঁদের পেছনে আড়ালে চলে যায় এবং সূর্যের গ্রহণ ঘটে। আবার পৃথিবী যখন চাঁদ ও সূর্যের মধ্যে আসে তখন পৃথিবীর আড়ালে চাঁদ ঢাকা পড়ে এবং চন্দ্রগ্রহণ হয়।
সূর্য ও চন্দ্রগ্রহণকে ঘিরে বহুকাল থেকেই অনেক পৌরাণিক কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। শুধু ভারত নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গ্রহণ ঘিরে রয়েছে একাধিক ধর্মীয় ও সংস্কৃতিগত 'বিশ্বাস'। আমেরিকা থেকে শুরু করে আফ্রিকা বিশ্বের সর্বত্রই সূর্যগ্রহণ নিয়ে রয়েছে নানা পৌরানিক কাহিনি। দেখে নেওয়া যাক, সেই সব কাহিনিকে। কোরিয়ানরা মনে করেন যে সূর্যকে চুরি করে নিয়েছে কোনও রাক্ষুসে কুকুর। কোরিয়ান লোক সঙ্গীতে এই নিয়ে বহু সুরও বাঁধা হয়েছে। পশ্চিম আফ্রিকার বেনিন ও টোগে উপজাতির মানুষরা বিশ্বাস করেন যে 'গ্রহণ' মানে সূর্য ও চন্দ্রের মধ্যে ক্রমাগত যুদ্ধ। তাঁদের আরও ধারণা যে একমাত্র পৃথিবীই এই যুদ্ধ মেটাতে সক্ষম। প্রাচীন গ্রিসের পৌরনিক কাহিনিতে মনে করা হত সূর্যগ্রহণের ঘটনা মানেই কোনও না কোনও দেবদেবী রুষ্ট হয়েছেন। যার ফলে কোনও দুর্যোগের আশঙ্কা করা হত। মূলত এই মহাজগতিক ঘটনাকে নেতিবাচক চোখে দেখা হত এখানে।
এই বছরে কবে কোন সময়ে চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ হতে চলেছে একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
৩১ জানুয়ারি পূর্ণচন্দ্রগ্রহণ
২০১৮ সালের শুরুতেই চন্দ্রগ্রহণ রয়েছে ৩১ জানুয়ারি। সেইদিন 'ব্লাড মুন' দেখা যাবে। এই দৃশ্য দেখা যাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উত্তরপূর্ব ইওরোপ, রাশিয়া, এশিয়ার কিছু অংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার বেশ কিছু অংশ। এই দৃশ্য দেখা যাবে কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশ থেকে। এছাড়াও দিল্লি, মুম্বই, ব্যাঙ্গালোর থেকেও দেখা যাবে এই দৃশ্য। এই দৃশ্য শুরু হওয়া হওয়ার সময় বিকেল ১৬:২১:১৩ থেকে রাত ২১:২৮:২৯ পর্যন্ত থাকবে।
আংশিক সূর্যগ্রহণ
দক্ষিণ আমেরিকা,পেসিফিক, আটলান্টিক আন্টার্টিকা এই সমস্ত জায়গা থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি এই আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে। এই দৃশ্যটি প্রথম যে জায়গায় দেখা যাবে তা ১৬ ফেব্রুয়ারি 00:২৫:৫১ থেকে। মধ্যবর্তী পর্যায়ে 0২:২১:২৯ , এরপর ০৪:১৭ মিনিট পর্যন্ত সংগঠিত হবে।
১৩ জুলাইয়ের গ্রহণ
এবছর ১৩ জুলাই আংশিকসূর্যগ্রহণ সংগঠিত হবে। অস্ট্রেলিয়া, পেসিফিক, ভারত মহাসাগর থেকে দেখা যাবে এই দৃশ্য। এই দিন 0৭:১৮:২৩ থেকে শুরু হয়ে ০৮:৩১:০৫-এর সময়ে মধ্যবর্তী পর্যায়ে থাকবে গ্রহণ, এরপর 0৯:৪৩:৪৪ সময়ে তা শেষ হবে।
পূর্ণচন্দ্রগ্রহণ
২৭ও ২৮ জুলাইয়ের পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে মূলত, ইওরোপ, এশিয়া, দক্ষিণ আমেরিকা, আফ্রিকার মতো দেশে। দেখা যাবে কলকাতাতেও। অন্য়দিকে, দিল্লি , মুম্বই, ব্যাঙ্গালোর-এও দেখা যাবে এই দৃশ্য।
আংশিক চন্দ্রগ্রহণ
১১ অগাস্ট আংশিক সূর্যগ্রহণ সংগঠিত হওয়ার কথা । সেই দৃশ্য দেখা যাবে এশিয়ার উত্তর ও পশ্চিমভাগে। ইওরোপের বেশ কিছু অংশে। দেখা যাবে উত্তর আমেরিকাতে। এই ঘটনা শুরু হবে, প্রথম স্থানটিতে দেখা য়াবে ১৩:৩২:০৮ থেকে শুরু করে ১৭:০০:৪০তে তা শেষ হবে।