বাঙালির কালীপুজোর মানেই এমন সব জিনিস, যা করে তুলবে নস্টালজিক
বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ, কালীপুজো মানে বাঙালির নস্টালজিয়া। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু
বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। দুর্গাপুজো আসার আগে থেকেই বাঙালির আনন্দ বাঁধ মানতে চায় না। দুর্গাপুজো শেষ হলেই লক্ষ্মীপুজো তারপর কালীপুজো, ভাইফোঁটা। দুর্গাপুজোর মত না হলেও কালীপুজো নিয়েও উৎসাহ কিছু কম নেই হুজুগে বাঙালির। কারণ বাঙালির কাছে কালীপুজো হল ডাবল বোনানজা। কালীপুজোর সঙ্গে দিওয়ালি ফ্রি। কালীপুজো মানে বাঙালির নস্টালজিয়া। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু। চলুন দেখে নেওয়া যাক বাঙালির কালীপুজোর প্রস্তুতি।
[আরও পড়ুন:ভূতচতুর্দশীর সঙ্গে '১৪' সংখ্যাটির যোগ কোথায়, কেনইবা খেতে হয় ১৪ শাক! জানুন নেপথ্যের ঘটনা]
১
কালীপুজোর মানেই বাজি কেনা। আর আগে থাকতেই বাজি কিনে রোদ্দুরে শুকোনোর প্রথা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। আর নিয়ম করে বাজি রোদ্দুরে দেওয়ার আনন্দ ছোট - বড়় কারও কম নয়।
২
কালীপুজো মানেই সপ্তাহখানেক আগে থেকেই বাড়িতে লাইট লাগানোর তোড়জোড়। পাড়া- প্রতিবেশীদের সঙ্গে রীতিমত প্রতিযোগিতা করেই বাড়িকে আলোর রোশনাইয়ে সাজিয়ে তোলার পালা। প্রত্যেকদিনই সন্ধে হওয়ার অপেক্ষা। সুইচ অন করে দিলেই গোটা বাড়ি আলোয় ঝকমক করে উঠবে।
৩
দুর্গাপুজোর মত না হলেও কালীপুজোর প্যান্ডেল নিয়েও উৎসাহ কম নেই। মূলত দুর্গাপুজোর প্যান্ডেলেই কালীপুজো হয়। কিন্তু কালীপুজোর আগে থেকে ভাঙা প্যান্ডেলের একাংশকে নতুন করে সাজিয়ে তোলা।
৪
কালীপুজোর আগের দিন ভুত চতুর্দশী। আর ভুত চতুর্দশী মানে কালীপুজো এসে গেল। সকাল থেকেই বাড়ির মহিলাদের চোদ্দ শাক বাছাইয়ের তোড়জোড়। আজকাল তো চোদ্দ শাকও রেডিমেড। বাজারে গেলেই চোদ্দশাকের আঁটি কিনতে পাওয়া যায়। তাতে আদৌ চোদ্দ রকমের শাক থাকে কিনা তা বিতর্কের বিষয়, কিন্তু সে যাই হোক দুপুরে ভাতের সঙ্গে চোদ্দ শাকের মজাই আলাদা।
৫
ভুত চতুর্দশীতে সন্ধে হওয়ার অপেক্ষা। সন্ধে হলেই বাড়ির চারদিকে চোদ্দ প্রদীপ জ্বালিয়ে অশুভ শক্তিকে তাড়ানোর পালা। বাড়ির ছোটদের মজা আবার অন্যরকম। কালীপুজোর আগের দিন থেকেই একটু আবদার করে অল্প করে বাজি পোড়ানোর মজা।
৬
কালীপুজোর দিন সকাল সকাল উঠেই প্রথমে পুজো দিতে যেতে হবেই। আর কালীঘাট বা দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের থেকে ভাল জায়গা আর কীই বা হতে পারে। তবে পুজো দেওয়া যে খুব সহজ হয় তা নয়। ভোর রাত থেকেই দীর্ঘ লাইন পড়ে। পুজোর জন্য।
৭
পুজো দিয়ে এসে দুপুরে গরম গরম খাসির মাংস ও ভাত না হলে কালীপুজোর কোনও মানে হয় না।
৮
সন্ধে হলেই বাজি পোড়ানো শুরু। বাজির শব্দে কান পাতা দায়।
৯
কালীপুজো মূলত হয় অনেক রাতে। সেকারণেই একটু রাত করেই মণ্ডপে যাওয়া। অনেকেই আবার রাত হলেই বেরিয়ে পড়েন ঠাকুর দেখতে। তবে এখানেই আনন্দের শেষ নয়, কারণ পরেরদিনই যে দিওয়ালি। অবাঙালিদের উৎসব হলেও বাঙালিদের তাতে মেতে উঠতে বাধা কোথায়।