২১০০-র মধ্যে বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ ভারত!
২১০০-র মধ্যে বিশ্বের সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ ভারত!
ওয়ার্ল্ড পপুলেশন ডে-তে অশনি সঙ্কেত, আগামী আট বছরে জনসংখ্যার নিরিখে চিনকেও নাকি পিছনে ফেলবে ভারত। এমনকী ২১০০ সালের মধ্যে জনসংখ্যার নিরিখে ভারতের ধারেকাছে কোনও দেশ থাকবে না বলে শোনা যাচ্ছে।
গত জুন মাসে রাষ্ট্রসঙ্ঘের তরফে প্রকাশিত এক রিপোর্টে এই সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে। জানানো হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বর জনসংখ্যা ৭৭০ কোটি থেকে বেড়ে ৯৭০ কোটিতে পৌঁছবে। এর পিছনে অধিকাংশ অবদান ভারতেরই থাকবে বলেও জানানো হয়েছে।
যদিও ২০৫০ সালের মধ্যে চিনে ২.২ শতাংশ জনসংখ্যা কমবে বলেই জানিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। অন্যদিকে, পিউ রিসার্চ সেন্টারের প্রকাশ করা এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ২১০০ সালের মধ্যে ভারতে এমনই জনবিস্ফোরণ ঘটবে যে তা সামলানো মুশকিল হবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে চিনের জনসংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে ১৪৩ কোটির একটু বেশি। সেখান থেকে আগামী ৩০ বছর তাদের জনসংখ্যা কমবে বলেই পিউ রিসার্চ সেন্টারের রিপোর্টে জানানো হয়েছে। সুনির্দিষ্ট পরিবার পরিকল্পনার মাধ্যমে ২১০০ সালে চিনের জনসংখ্যা কমে ১০৬ কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করে হচ্ছে।
অন্যদিকে, ভারতে ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটবে বলেই পিউ রিসার্চ সেন্টারের রিপোর্টে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, ২০২০ সালে ভারতের জনসংখ্যা বেড়ে হবে ১৩৮ কোটি। ২১০০ সালের মধ্যে তা আরও বেড়ে ১৪৫ কোটিতে গিয়ে পৌঁছবে বলে আশঙ্কা। সরকার এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে বলেও পিউ রিসার্চ সেন্টারের রিপোর্টে জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি গোটা বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। জুনে সংস্থার তরফে প্রকাশিত 'দ্য ওয়ার্ল্ড পপুলেশন প্রসপেকটাস ২০১৯ : হাইলাইটস'-এ বলা হয়েছে, প্রতি বছর বিশ্বের জনসংখ্যা বাড়ে ৮৩ কোটি। এভাবে চলতে থাকলে ২০৩০ সালের মধ্য পৃথিবী জুড়ে জনবিস্ফোরণ হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
সবের মধ্যে ভারত
পৃথিবীর সমগ্র স্থলভাগের মাত্র ২ শতাংশ জমি ভারতে থাকলেও এদেশের জনসংখ্যা বিশ্বের ১৬ শতাংশ বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। এই জনসংখ্য়ার ৩৫ শতাংশ মানুষ কেবল বিহার, উত্তরপ্রদেশে এবং মহারাষ্ট্রে বাস করেন বলে জানানো হয়েছে। অত্যধিক জনসংখ্যা দেশের উন্নয়নের অন্তরায় বলে ওই রিপোর্টে জানানোও হয়েছে।
বাঁচবার উপায়
চিনের 'এক পরিবারে এক শিশু' নীতির দেখাদেখি ২০১৭ সালে ভারতেও 'দুই শিশু' নীতি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। যদিও তা বিল আকারে এখনও পাশ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসা নরেন্দ্র মোদী সরকার দেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেই আশা।
Today is #WorldPopulationDay. Rising population is an important and urgent problem facing the world. We must work together to raise awareness about the issue
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) July 11, 2019
উদ্বিগ্ন মমতা
ভারত সহ বিশ্বের জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে উদ্বিগ্ন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্যা সমাধানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
অন্য দেশে
ভারত-চিন ছাড়াও পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা, নাইজার, আঙ্গোলা, কঙ্গো, জাম্বিয়া, মালির, সোমালিয়া, উগান্ডার মতো গরিব দেশগুলিতে বাড়তে থাকা জনসংখ্যা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। সমস্যা সমাধানের রাস্তা খোঁজা শুরু হয়েছে।