কর্মসংস্থান তৈরিতে ডাহা ফেল মোদী সরকার, ভয়াবহ অবস্থা ব্যাখ্যা রিপোর্টে
ভারতের কর্মসংস্থানের গতি বাড়ে তো নি, উল্টে নিম্নুমখী হয়েছে। পরপর দুটি অর্থবর্ষে কর্মসংস্থানের হারকে উপরে টেনে তুলতে পারেনি মোদী সরকার।
ভারতের কর্মসংস্থানের গতি বাড়ে তো নি, উল্টে নিম্নুমখী হয়েছে। পরপর দুটি অর্থবর্ষে কর্মসংস্থানের হারকে উপরে টেনে তুলতে পারেনি মোদী সরকার। ২০১৫-১৬ সালে ০.১ শতাংশ ও ২০১৪-১৫ সালে ০.২ শতাংশ হারে কমেছে। কর্মসংস্থান বাড়ার বদলে কমেছে। কেএলইএমএস ইন্ডিয়ার সমীক্ষায় এই তথ্য সামনে এসেছে। এই গবেষণাভিত্তিক সমীক্ষাকে সমর্থন করেছে ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এছাড়াও অন্য নানা ব্যাঙ্ক তা সমর্থন করেছে। আরবিআইয়ের ওয়েবসাইটেও সেই তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
কোন ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান কমেছে
সাম্প্রতিক তথ্য ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, ২০১৫-১৬ সালে কৃষি, মৎস্যচাষ, বনসৃজন, খনির কাজ, খাদ্যপণ্য উৎপাদন, জামাকাপড়, চামড়া, যোগাযোগের মতো ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান কমেছে।
জিডিপির ছাপ কর্মসংস্থানে পড়েনি
সবচেয়ে আশ্চর্যের যে ২০১৪-১৬ সালের মধ্যে দেশের জিডিপি ৭.৪ ও ৮.২ শতাংশ হারে বেড়েছে। তারপরও সেটার ছাপ কর্মসংস্থানে পড়েনি। শুধু কর্মহীন বৃদ্ধি নয়, যা হয়েছে তা কর্মসংস্থান ধ্বংস করে বৃদ্ধি বলে অনেকে মনে করছেন।
লাভ হয়নি কিছুই
সাধারণত কৃষিক্ষেত্রে কম আয় হয় বলে অনেকে তা ছেড়ে বেরিয়ে অন্য ক্ষেত্রে কাজ করেন বেশি আয়ের আশায়। সারা বিশ্বেই তা হয়। তবে ভারতে যারা কৃষিকাজ থেকে বেরিয়েছেন, অন্য সেক্টরে তাদের কাজের সুযোগ তেমন তৈরি হয়নি। ফলে কর্মসংস্থান কমে গিয়েছে।
মরীচিকা রিয়েল এস্টেট সেক্টর
রিয়েল এস্টেট সেক্টরে আগের চেয়ে কর্মসংস্থান বেড়েছে। তবে ঘটনা হল ২০০৬-০৭ সাল থেকেই এই সেক্টরের বৃদ্ধি কমেছে। কৃষি থেকে বেরিয়ে রিয়েল এস্টেট বা অন্য সেক্টরে কাজ করতে এলেও তাতে লাভের লাভ কিছুই হচ্ছে না।
কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার তলানিতে
ঘটনা হল, ভারতে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার এমন মারাত্মক কিছু নয়। গত দশ বছরে তা ০.৫৩ শতাংশ বার্ষিক হারে বেড়েছে। তবে গত কয়েকবছরে তা একেবারে তলানিতে এসে নেমেছে। তথ্য বলছে, জিডিপি বৃদ্ধির হার অনেক কম থাকলেও আশি ও নব্বই দশকে কর্মসংস্থানের হার অনেক বেশি ছিল। তা এখন তুলনায় কিছুই নয়।
অবস্থা ভয়াবহ
এখানে প্রশ্ন একটাই, ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ সালে জিডিপি-র হার আগের চেয়ে কমেছে। নোট বাতিল ও জিএসটির মতো ঘটনা কিছুটা নড়িয়ে দিয়েছে। ফলে ২০১৪-১৬ সালে যখন জিডিপি বৃদ্ধির হার বেশি ছিল, তখন যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে গত দুইবছরে যখন জিডিপির হার কম তখন কর্মসংস্থানের হার কোন মারাত্মক জায়গায় পৌঁছবে? এই দুই বছরের তথ্য হাতে এলে ভয়াবহতা আরও ভালোভাবে আন্দাজ করা সম্ভব হবে।
একটি পদের জন্য প্রার্থী দু'শো
একটি তথ্য ভয়াবহতা আন্দাজ করা যেতে পারে। তা হল ভারতীয় রেলে ১ লক্ষ শূন্যপদের জন্য সারা দেশ থেকে আবেদন করেছেন ২ কোটির বেশি মানুষ। অর্থাৎ প্রতি পদের জন্য প্রার্থী ২০০ জন। আরও সময় বাকী থাকায় লক্ষ লক্ষ আবেদনপত্র জমা পড়ছে। ফলে কর্মসংস্থানের কী অবস্থা তা এই ঘটনা থেকে আন্দাজ করা যেতে পারে।