(ছবি) ভারতের ১০ অসংবেদনশীল রাজনীতিবিদ
ধর্ষণের ঘটনা ঘটুক, বা নারীর মর্যাদা, ভারতের রাজনীতিবিদদের একাংশ সর্বদা আঙুল তুলেছে মহিলাদের বিরুদ্ধেই। কখনও শোনা গিয়েছে মেয়ের পোশাকের ধরণের জন্য বাড়ছে ধর্ষণ, কখনও শোনা গিয়েছে ছেলে মেয়েরা খোলাখুলি মেলামেশা করছে বলে বাড়ছে ধর্ষণের ঘটনা।
কোনও কোনও রাজনৈতিকবিদ তো আবার মহিলাদের অধিকার ও ক্ষমতারও সীমাবদ্ধতা জানিয়ে দিয়েছেন।
আসুন একঝলকে দেখে নেওয়া যাক ভারতের ১০ এমন রাজনীতিবিদকে যাদের বক্তব্যেই স্পষ্ট তারা কতটা অসংবেদনশীল।
শিলা দীক্ষিত - দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
অক্টোবর ২০০৮
মহিলাদের বেশি দুঃসাহসিক হওয়া উচিত নয়।
মুলায়ম সিং যাদব , সমাজবাদী পার্টি
২০১৪
সাল
উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যে ধর্ষণ হতেই পারে।
যৌতুক আইনের সুযোগ নিয়ে কাউকে ফাঁসাতে অনেকেই থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। এর ফলে নিষ্পাপ অনেককেই তার সাজা ভোগ করতে হয়। সপা ক্ষমতায় এলে এই ধরণের অপব্যবহার বন্ধ করবে। এবং যারা এই আইনের সুযোগ নিয়ে তার অপব্যবহার করছে তাদের বিরুদ্ধেও কড়া পদক্ষেপ নেবে সমাজবাদী পার্টি সরকার।
ধর্ষণের জন্য ফাঁসি দেওয়া উচিত নয়। ছেলেরা ভুল করে ফেলে। আমরা ক্ষমতায় এলে আইনে বদল আনব।
আশা মিরজে - এনসিপি নেত্রী
জানুয়ারি, ২০১৪
নির্ভয়া কাণ্ড প্রসঙ্গে আশা বলেন, 'নির্ভয়ার কী আদৌ রাত ৯টার সময়ে বন্ধুর সঙ্গে সিনেমা দেখতে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল? শক্তি মিলের ঘটনাটাই দেখুন, নির্যাতিতা কেন সন্ধ্যে ৬টার সময় ওরকম একটা নির্জন স্থানে গিয়েছিল?'
শুধু তাই নয়, মহিলাদের পোশাক, আচরণ, ভাব-ভঙ্গিমা এবং অনপুযুক্ত স্থানে মহিলাদের উপস্থিতিই ধর্ষণের কারণ বলে ব্যাখ্যা করেছেন আশা। যৌন হেনস্থাকে তাঁরা আহ্বাণ জানাচ্ছেন কিনা সে বিষয়ে মহিলাদের সজাগ ও সতর্ক হতে হবে বলেও মন্ত্বব্য করেন মিরজে।
মোহন ভাগবত - আরএসএস প্রধান
ফেব্রুয়ারি , ২০১৫
মোহন ভাগবত বলেন, "মাদার টেরিজা অবশ্যই মানুষের সেবা করতেন। কিন্তু তা একটি উদ্দেশ্য নিয়ে। মাদারের একমাত্র লক্ষ্য ছিল মানুষকে খ্রীষ্ট ধর্মে রূপান্তর করা। যেহেতু তিনি নিজে খ্রীষ্টমতে বিশ্বাসী ছিলেন।"
বাবুলাল গৌর - বিজেপি নেতা
জানুয়ারি, ২০১৩
পাশ্চাত্যের সংস্কার ভারতের জন্য ঠিক নয়। বিদেশে মহিলারা জিন্স-টিশার্ট পরেন পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে হাত দিয়ে নাচ করেন এমনকী মদও খান, সেটা তাদের সংস্কৃতি, সেটা তাদের জন্য ভাল, ভারতীয় মহিলাদের জন্য নয়। এখানে শুধু আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যই শেষ কথা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় - পশ্চিমবঙ্গে মুখ্য়মন্ত্রী
অক্টোবর, ২০১২
এখনকার দিনে ধর্ষণ বেড়ে গিয়েছে কেন তা নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী। জানান, এখন পুরুষ ও মহিলারা অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ মেলামেশা করেন। আগে কারও হাত ধরলে বাবা-মায়ের বকুনির ভয় থাকত। এখন সমাজ অনেক খোলামেলা হয়ে গিয়েছে।
চিরঞ্জিত চক্রবর্তী - তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক
জুলাই, ২০১২
মহিলাদের পরনের শর্ট স্কার্ট আর পোশাকের জন্যই ইভটিজিংয়ের ঘটনা বাড়ছে। মহিলাদের এই ধরণের পোশাক তরুণদের উষ্কানি প্রদান করে।
তাপস পাল - তৃণমূল সাংসদ
জুলাই, ২০১৪
এক সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উত্তেজিত তাপস পাল বলেন, "বিরোধীদের বলছি...আমি অনেক বড় রংবাজ, আমি প্রচুর মাস্তানি করেছি। আমি পকেটে মাল নিয়ে ঘুরি, ...আমি নিজে রিভলবার দিয়ে গুলি করে চলে যাব। আমার মা, বোন, বাবা, বাচ্চা কারোর গায়ে যদি হাত পরে আমি ছেড়ে কথা বলব না। আমাদের ছেলেদের ঘরে ঢুকিয়ে দেব রেপ করে চলে যাবে। আমাদের তৃণমূলের কারও গায়ে যদি সিপিএম হাত দেয় তাদের গুষ্টি শেষ করে দেব। বাড়ি, ঘর সব জ্বালিয়ে দেব।"
আবু আজমি - সমাজবাদী পার্টি নেতা
এপ্রিল, ২০১৪
"ভারতে কোনও ব্যক্তি যদি মহিলার ইচ্ছায় যৌনমিলন করে তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু কোনও মহিলার ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেই ফাঁসি। দুজনের মধ্যে কিছু ভুল হলেই, মহিলা ক্ষুব্ধ হয়ে যদি অভিযোগ জানিয়ে দেন তাহলেই ফাঁসি। ইচ্ছা-অনিচ্ছার জন্য জীবন-মরণ তফাৎ হয়ে যায়।"
"সম্প্রতি এরকম ধরণের অনেক ঘটনা দেখা গিয়েছে, যেখানে, কেউ ছুঁলেও মহিলারা অভিযোগ দায়ের করেন। না ছুঁলেও অভিযোগ দায়ের করেন। এটা এখন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে পুরুষদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। ইচ্ছাতে হোক বা ইচ্ছার বিরুদ্ধে, ধর্ষণের সাজা ইসলাম অনুযায়ী ফাঁসি হওয়া উচিত। আমি আমার ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারব না।"
ওম প্রকাশ চৌটালা - হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী
অক্টোবর , ২০১২
ধর্ষণ আটকাতে হরিয়ানার খাপ পঞ্চায়েত চেয়েছিল মেয়েদের বিবাহযোগ্য বয়সের সীমা কমিয়ে দিতে। ওম প্রকাশ চৌটালা বলেছিলেন, আমি খাপের সিদ্ধান্তের সঙ্গে রয়েছি। এভাবে মেয়েদের রক্ষা করা সম্ভব হবে।