দেশের গণ্ডী পেরিয়ে বিদেশে কীভাবে পালিত হয় শ্রীকৃষ্ণ জন্মাষ্টমী, দেখুন ফটোফিচারে
কীভাবে এদিন দেশ-বিদেশে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উদযাপিত হয় তা দেখে নেওয়া যাক একনজরে।
কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎসবগুলির মধ্যে অন্যতম। সারা দেশে বহু মানুষ এই উৎসব পালন করেন। পাশাপাশি বিদেশেও শ্রীকৃষ্ণকে ঘিরে আগ্রহ ও উন্মাদনা কিছু কম নেই। বলা হয় মথুরায় ৫২০০ বছর আগে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয়। পৃথিবীকে অশুভ শক্তির হাত থেকে মুক্ত করতেই শ্রীবিষ্ণু ধরাধামে পা রাখেন কৃষ্ণরূপে। কীভাবে এদিন দেশ-বিদেশে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উদযাপিত হয় তা দেখে নেওয়া যাক একনজরে।
[আরও পড়ুন:এই পরম্পরাগুলি মেনে মথুরা থেকে উড়ুপি আজ মেতেছে জন্মাষ্টমী উদযাপনে]
জন্মাষ্টমীর অন্য নাম
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মের পূণ্য তিথিকে জন্মাষ্টমী হিসাবে পালন করা হয়। তবে জানেন কি, এর আরও অনেকগুলি নাম রয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী, সাতম আটম, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিনী, শ্রীকৃষ্ণ জয়ন্তী, শ্রী জয়ন্তী ইত্যাদি।
উত্তরপ্রদেশে মূল অনুষ্ঠান
ভারতে উত্তরপ্রদেশের মথুরার অনেক বড় করে এই দিনটি পালিত হয়। এখানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মেছিলেন। এবং এখান থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে গোকুলে তিনি বেড়ে উঠেছিলেন। মথুরায় শ্রীকৃষ্ণের নামে ৪০০টি মন্দির রয়েছে। পাশের এলাকা বৃন্দাবনেও শ্রীকৃষ্ণকে নিয়ে সমান উন্মাদনা রয়েছে।
দক্ষিণ ভারতেও মহা ধুমধামে উতসব পালিত
শুধু উত্তর ভারতেই নয়, দক্ষিণ ভারতেও গোকুলাষ্টমী উদযাপিত হয়। যেখানে ভক্তরা কৃষ্ণকে ভোগ হিসাবে ফল দেন। শ্রীকৃষ্ণের গুণকীর্তন করে এই দিনটি দক্ষিণ ভারতেও সমানভাবে উদযাপন করা হয়।
মহারাষ্ট্রে দহি হান্ডি
মহারাষ্ট্রে এই কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ 'দহি হান্ডি'। মানব পিরামিড করে উপরে উঠে দইভর্তি হাড়ি ফাটিয়ে উতসব পালন করতে হয়। এই নিয়ে প্রতিযোগিতাও চলে। মুম্বইয়েই অন্তত চার হাজার দহি হান্ডি ফাটানোর অনুষ্ঠান হয়। বিশেষ করে দাদর, লোয়ার প্যারেল, ওরলি, লালবাগ এলাকায় এই অনুষ্ঠান সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
গুজরাতে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী
গুজরাতে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি অনুষ্ঠান। এদিন সারা গুজরাত আনন্দে মেতে ওঠে। বিশেষ করে দ্বারকাধীশ মন্দিরে এদিন সুবিশাল আয়োজন হয় কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে।
পুরীতে উতসব পালন
পূর্ব ভারতে ওড়িশার পুরীতে ও পশ্চিমবঙ্গের মায়াপুর ও নবদ্বীপে সারাদিন ব্যাপী জন্মাষ্টমী পালিত হয়। শ্রীমদভগবত গীতা পড়ে, কৃষ্ণের জয়গান করে দিনটি উদযাপন করা হয়। ভক্তদে হরে কৃষ্ণ, ও হরি বোল ধ্বনিতে চারপাশ গমগম করতে থাকে।
সিঙ্গাপুরে কৃষ্ণ ভক্তরা
শুধু ভারতে নয়, বিদেশেও বিশেষ করে সিঙ্গাপুরে মহা ধুমধামের সঙ্গে জন্মাষ্টমী পালন করা হয়। এদিকে কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয়রা বিশেষ করে টরেন্টো নিবাসীরা জন্মাষ্টমীর আনন্দে মেতে ওঠেন।
পাকিস্তান ও বাংলাদেশে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী পালন
পাকিস্তানে ও বাংলাদেশেও জন্মাষ্টমী ভালোই পালিত হয়। পাকিস্তানের করাচিতে স্বামী নারায়ণ মন্দিরে ভজন গেয়ে ও কৃষ্ণের স্তোত্র গেয়ে দিনটি পালিত হয়। এদিকে বাংলাদেশেও দিনটি জাতীয় ছুটির দি্বস হিসাবে পালিত হয়। ১৯০২ সাল থেকে ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে তা পালিত হয়। দেশভাগের পরে ১৯৪৮ সাল থেকে এই মন্দিরের শোভাযাত্রা বন্ধ থাকলেও ১৯৮৯ সাল থেকে তা ফের চালু করা হয়েছে।
ইউরোপে উতসব
ইউরোপের প্যারিসে ও লন্ডনেও জন্মাষ্টমী পালন হয় মহা ধূমধামের সঙ্গে। প্যারিসে মধ্যরাতে কৃষ্ণের জন্মের সময়কে ধরে উতসবে মেতে ওঠেন সকলে। লন্ডনে দুই দিন ধরে উতসব পালিত হয় সেখানকার ইসকন মন্দিরে। অন্তত ৬০ হাজার ভক্ত সমাগম হয় লন্ডনের মন্দিরে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক, অরল্যান্ডো, ক্যালিফোর্নিয়া ও ম্যাসাচুসেটসেও ধুমধাম করে জন্মাষ্টমী পালিত হয়।
নেপাল ও মালয়েশিয়ায় জন্মাষ্টমী
নেপাল ও মালয়েশিয়াতেও কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী পালিত হয় মহা ধুমধাম করে। নেপালের পাটান দরবান স্কোয়ারের মন্দিরে বড় করে পুজো হয়। এছাড়া মালয়েশিয়ার মতো মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্রে কুয়ালা লামপুর শহরে ধুমধাম করে জন্মাষ্টমী পালিত হয়।