ব্রিটিশদের থেকে স্বাধীনতার ৭০ বছর পরে কতটা বদলেছে ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশ, জানুন পরিসংখ্যানে
ভারতকে টুকরো টুকরো করে দিয়ে দেশ ছেড়েছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ভারত থেকে ভাগ হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। তিনটি দেশই ১৯৪৭ সালের সাত দশক পরে কেমন আছে, দেখে নেওয়া যাক পরিসংখ্যানে।
সত্তর বছর আগে ভারতকে টুকরো টুকরো করে দিয়ে দেশ ছেড়েছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ভারত থেকে ভাগ হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তান। পরে বাংলাদেশও আলাদা হয় পাকিস্তান থেকে। সাত দশক পার করার পরে এই তিন দেশের অবস্থা কতটা বদলেছে? এই তিনটি দেশকেই বিচারের নিরিখে 'মধ্যম মানের মানব উন্নয়নের দেশ' হিসাবে চিহ্নিত করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। আগের চেয়ে বিত্তশালী হলেও এখানকার বহু মানুষ আজও দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। সামাজিক বৈষম্য, আর্থিক বৈষম্য, অবিচার, কর্মসংস্থানের অভাব এসবই মানুষের কাছে পুরনো হয়ে গিয়েছে। সহ্য করতে করতে পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। তাও অনেকের ক্ষেত্রেই ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। তিনটি দেশই ১৯৪৭ সালের সাত দশক পরে কেমন আছে, দেখে নেওয়া যাক পরিসংখ্যানে।
[আরও পড়ুন:ভারতবাসী হয়ে দেশ সম্পর্কে এই তথ্যগুলি আপনি জানেন তো]
জিডিপি পার ক্যাপিটা
১৯৫০ সালে ভারতের জিডিপি ছিল ৬১৯ মার্কিন ডলার। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৩৩৭২ ডলার। পাকিস্তানের ছিল ৬৪৩ ডলার। তা বেড়ে হয়েছে ২৪৯৪ ডলার। এদিকে বাংলাদেশের সেইসময়ে পার ক্যাপিটা আয় ছিল ৫৪০ ডলার। যা এখন বেড়ে হয়েছে মাত্র ১২৭৬ ডলার।
নাগরিকদের গড় আয়ু
ভারতবর্ষ অর্থনৈতিক দিক থেকে বাকী দুই দেশের থেকে এগিয়ে থাকলেও গড় আয়ুতে সবাইকে পিছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। ভারতবাসীর গড় আয়ু ৬৮.৩ বছর। পাকিস্তানির ৬৬.৪ বছর। আর গড়ে একজন বাংলাদেশি বাঁচে ৭২ বছর।
আয়ের বৈষম্য
এখানেও বাকী দুই দেশের থেকে ভারত পিছিয়ে রয়েছে। যেখানে বাংলাদেশের আয়ের বৈষম্য ৩৯.৫ শতাংশ ও পাকিস্তানের ৩৬.২ শতাংশ সেখানে এই দুটি দেশের থেকে উন্নত হয়েও ভারতের আয়ের বৈষম্য ৪৭.৯ শতাংশ। এছাড়া দারিদ্রতার দিক থেকেও গড়ে ভারত পিছিয়ে রয়েছে। সবমিলিয়ে দেখলে ভারতের ধনীরা অনেক বেশি বিত্তবান, তবে গড় করলে ভারত বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের চেয়ে দরিদ্রের সংখ্যায় পিছিয়েই রয়েছে।
মহিলাদের গড় আয়
এক্ষেত্রেও ভারত পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশের থেকে। সেদেশে মহিলাদের পার ক্যাপিটা আয় ২৩৭৯ মার্কিন ডলার। যা ভারতের ২১৮৪ ডলারের থেকে বেশি। তবে সবশেষে রয়েছে পাকিস্তান। সেদেশের মহিলাদের পার ক্যাপিটা আয় ১৪৯৮ ডলার। বাংলাদেশে বস্ত্রশিল্পে মূলত মহিলাদের যোগদানই তাদের আয়ের দিক থেকে অনেকটা এগিয়ে রেখেছে।
শিশুর অপুষ্টি
পাঁচ বছরের নিচে অপুষ্টিতে ভোগা শিশুর ক্ষেত্রে ভারতে সংখ্যাটা শতকরা হিসাবে ৩৮.৭ শতাংশ। পাকিস্তানে তা ৪৫ শতাংশ ও বাংলাদেশে ৩৬.১ শতাংশ। অর্থাৎ উন্নত দেশ হলেই যে এই সমস্যাগুলি থেকে পুরোপুরি মুক্ত হওয়া যায় তেমনটা নয়।
শিশুমৃত্যুর হার
অপুষ্টিতে ভারত এগিয়ে থাকলেও শিশু মৃত্যুর হারে ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান। সেদেশে প্রতি হাজার জে শিশুমৃত্যুর হার ৮১.১ শতাংশ। এদিকে ভারতে সেই হার ৪৭.৭ শতাংশ ও বাংলাদেশে ৩৭.৬ শতাংশ।
অসুরক্ষিত কর্মসংস্থান
এক্ষেত্রেও ভারতে শতাংশের বিচারে অসুরক্ষিত কর্মসংস্থানের হার সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে ৫৭.৮ শতাংশ ক্ষেত্রে নাগরিকদের কর্মসংস্থান ততটা সুরক্ষিত নন। তার চেয়ে খারাপ অবস্থা পাকিস্তানে। সেদেশে শতকরা হার ৬৩.১ শতাংশ। আর ভারতে অসুরক্ষিত কর্মসংস্থানের হার ৮০.৮ শতাংশ। ভারতে অসংগঠিত ক্ষেত্রে বিনা বেতনে বহু মানুষ কাজ করেন। সেইজন্যই এই সংখ্যা আকাশ ছুঁয়েছে।