For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

পাকিস্তানি শিল্পীদের আটকানো হবে কেন? আমরা কি রাজ ঠাকরের 'কিল-ঘুষি' নীতিমাফিক কাজ করব?

একজন পাকিস্তানি শিল্পীকে নিয়ে রাজ ঠাকরে যতটা মাথা ঘামাচ্ছেন, ততটা কি মহারাষ্ট্রের কৃষক আত্মহত্যার অনন্ত আখ্যান নিয়ে ভাবেন একবারও ? নাকি সেই ভাগ্যহীন কৃষকরাও পাকিস্তানের লোক?

  • By SHUBHAM GHOSH
  • |
Google Oneindia Bengali News

ভারত বলতে কি আমরা আজকাল স্রেফ মুম্বই বা মহারাষ্ট্র বুঝি? যেভাবে একটি বলিউড চলচ্চিত্রে পাকিস্তানি অভিনেতা ফাওয়াদ খানের উপস্থিতি নিয়ে পশ্চিমী রাজ্যটির কতিপয় কিছু 'দেশপ্রেমী' দল এবং গোষ্ঠী দৈনন্দিন হাঙ্গামা বাধাচ্ছে, তাতে তো তাই মনে হচ্ছে।

শনিবার (অক্টোবর ২২) মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশের সঙ্গে বিতর্কিত এই ছবি 'অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল'-এর মুক্তির প্রসঙ্গে দেখা করেন তার পরিচালক করণ জোহর এবং মহারাষ্ট্র নবনির্মান সেনা বা এমএনএস প্রধান রাজ ঠাকরে। ঠাকরের দল সোজা জানিয়ে দিয়েছে যে পাকিস্তানি কুশীলবরা রয়েছেন এমন কোনও ছবি তারা চলতে দিতে রাজি নয় ভারতের কোথাও।

পাকিস্তানি শিল্পীদের এদেশে আসা বন্ধ করার রাজ ঠাকরে কে?

জোহরের ছবিটি অক্টোবর ২৮, অর্থাৎ 'দিওয়ালি'-র আগের মুক্তি পাওয়ার কথা। ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন প্রোডিউসার্স গিল্ড অব ইন্ডিয়ার সভাপতি মুকেশ ভাটও উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে।

বৈঠকের পরে ভাট জানান যে "অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল" ঠিক সময়ে মুক্তি পেলেও গিল্ড ভবিষ্যতে পাকিস্তানি অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী ফড়নবীশকে। অর্থাৎ, এবারের মতো জোহরের ছবিটি পার পেয়ে গেলেও ভবিষ্যতে চলচ্চিত্র বা অন্যান্য শিল্পশৈলীতে যে ভারত-পাক সহযোগিতার রাস্তা বলতে গেলে বন্ধই হয়ে গেল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে।

ভারতীয় সেনাকে স্যালুট ঠুকে এবারের মতো পিঠ বাঁচালেন জোহর (তাঁর ছবি শুরু হওয়ার আগে ভারতের শহিদদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক) এবং ভাট (তিনি বলেন গিল্ড-এর তরফ থেকে সেনা তহবিলে দান করাও হবে)। কিন্তু, ভবিষ্যতের রাস্তাটি উদ্যোগ নিয়েই বন্ধ করা হল।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ভারতীয় ছবিতে পাকিস্তানি শিল্পীরা থাকবেন কিনা, তা নিয়ে ঠাকরের দল আপত্তি করার কে? দেশের সরকার-প্রশাসনের পাশাপাশি এই 'সমান্তরাল শাসনব্যবস্থা' চালানোর গুরুদায়িত্ব এই দলগুলিকে কে দিয়েছে? বলিউডের পরিচালক-শিল্পীগোষ্ঠীকে রোজ এদের সঙ্গে ঘর করতে হয় বলে ওঁরা তাদের চটাবেন না সেটা স্বাভাবিক, কিন্তু তার জন্য দেশের শিল্প অভ্যাস কেন ভুগবে?

এটা কি আদৌ দেশপ্রেম? নাকি স্রেফ আক্রমণাত্মক খণ্ডজাতীয়তাবাদ?

এই 'নবনির্মাণ'বাদী দলগুলি যাকে দেশপ্রেম বলে এত শোরগোল করে, সেটা আদৌ দেশপ্রেম কিনা তা ভেবে দেখা আবশ্যিক। বরং, একে একধরনের খণ্ডজাতীয়তাবাদের হুঙ্কার বলাই ভালো যাকে দেশপ্রেমের সঙ্গে গুলিয়ে দেওয়া হয় রাজনৈতিক ফসল ফলানোর স্বার্থে। কিন্তু রাজ ঠাকরেদের এই রাজনীতি যে এখন আর প্রাসঙ্গিক নয়, তা গত মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনেই প্রমাণিত। এ শুধুই বাজার গরম করার প্রচেষ্টা।

কোনও পাক শিল্পী আজ যদি দেশের অন্যত্র কাজ করেন, তাহলে সেনা কি সেখানেও ছুটবে?

আজ যদি পাকিস্তানের কোনও শিল্পী দেশের কোনও আঞ্চলিক ছবিতে অভিনয় করতে চায়, তবে কি ঠাকরের দল ছুটে যাবে সেখানে প্রতিবাদ জানাতে? কতটুকু পানি তারা হালে পাবে? প্রায় কিছুই নয়। কারণ মহারাষ্ট্রের বাইরে ওই খণ্ডজাতীয়তাবাদের কোনও মূল্যই নেই।

নির্বাচনে সাফল্য না পাওয়া দলকে ধরে রাখতে এই কৌশলই নিতে হয়

আর রাজ ঠাকরের মতো লোকেদের জন্য চাই অন্যের পিঠ যাতে চড়ে তাঁরা নিজেদের 'উচ্চতা'র পরিচয় দিতে পারেন। এব্যাপারে দুনিয়াব্যাপী পরিচিত বলিউডকে 'সফ্ট টার্গেট' বানানো খুব সোজা। বিরোধিতাও খুব একটা হবে না আবার সম্পূর্ণ পাবলিসিটিও পাওয়া যাবে। নিজের সমর্থকদের বোঝানো যাবে - দেখো বলিউড আমার কথায় ওঠবোস করে, যা মারাঠি আত্মগরিমার কাছে এক বিরাট আবেদন ফেলবে। নির্বাচনে সাফল্য না পেয়েও দলের সংগঠনকে মজবুত রাখতে এ এক অনন্য উপায়।

উপরি লাভ, দেশের বাস্তবিক সমস্যা নিয়ে না ভাবনাচিন্তা করলেও চলবে। ও তো অনেক কঠিন কাজ। তার চেয়ে পাকিস্তানের মুণ্ডপাত করা, সেখানকার মানুষজনকে হুমকি দেওয়া, ভাঙচুর করা - এইসমস্ত রাজনৈতিক অপসংস্কৃতিকে আঁকড়ে ধরে চলা বেশ সহজ।

যারা বিহার-উত্তরপ্রদেশের মানুষকেই রেয়াত করে না, তারা পাকিস্তানিদের যে ছেড়ে দেবে না সে আর আশ্চর্যের কী?

এব্যাপারে আরেকটি প্রশ্নও মনে আসছে। এই এমএনএস নামক দলটি তো স্বদেশীয়দেরই ছাড় দেয় না। উত্তরপ্রদেশ-বিহার থেকে মহারাষ্ট্রে রুজি রোজগারের জন্য কাজ করতে আশা সাধারণ গরিবগুর্বো মানুষদেরই এই সেনা যখন তখন আক্রমণ করে। তাঁরা নাকি ভূমিপুত্রদের কাজ নিয়ে নিচ্ছে, এই অভিযোগে।

রাজের প্রয়াত জ্যাঠামশাই এবং শিবসেনার প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরেও এই একই আক্রমণাত্মক রাজনীতি করতেন তাঁর সময়ে। তাঁর লক্ষ্য ছিল সেই সময়ে মহারাষ্ট্রে বসবাসকারী দক্ষিণ ভারতীয়রা; আর রাজ্যের ক্ষেত্রে মার খাচ্ছেন উত্তর ভারতীয়রা। তফাৎ এটুকুই।

অতএব, যারা নিজের দেশের মানুষকেই কোনওরকম রেয়াত করতে রাজি নয়, তারা যে পাকিস্তানের মানুষকে ন্যূনতম শ্রদ্ধাটুকুও দেখাবে না, তাতে আর আশ্চর্য কী! কিনতু আবার সেই একই জিজ্ঞাস্য: এই কয়েকটি কট্টরপন্থী গোষ্ঠীর জন্য সারা দেশের মুখে কালি কেন পড়বে?

মহারাষ্ট্রের কৃষক আত্মহত্যা বন্ধ করার কোনও পথ রাজ ঠাকরে বাতলাতে পেরেছেন আজ পর্যন্ত?

একজন পাকিস্তানি শিল্পীকে নিয়ে রাজ ঠাকরে যতটা মাথা ঘামাচ্ছেন, ততটা কি মহারাষ্ট্রের কৃষক আত্মহত্যার অনন্ত আখ্যান নিয়ে ভাবেন একবারও ? নাকি সেই ভাগ্যহীন কৃষকরাও পাকিস্তানের লোক? আর যদিও বা কৃষকের দুর্দশা নিয়ে কিছু বলেনও বা, তাতেও থাকে জঙ্গিবাদের ছোঁয়া। যত না সমস্যার সমাধান করার জন্য বিকল্পের খোঁজ দেন, তার থেকে বেশি কিল-ঘুঁষি-অস্ত্রের কথা বলেন।

এই মারাঠি খণ্ডজাতীয়তাবাদী নায়কের ছেলেভুলানো 'দেশপ্রেম'-এর সামনে সরকার-প্রশাসন যদি মাথা নোয়ায়, তাহলে তা দেশের পক্ষে প্রভূত ক্ষতি। এই ব্যাপক রাজনীতিকরণের হাত থেকে আমাদের বেরোনোর পথ দেখাবে কে?

English summary
Why should we allow people like Raj Thackeray to decide on our stand on Pakistani artistes?
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X