বিতর্কিত এই ধর্মগুরুদের বিচিত্র গাঁথা আগেও দেখেছে ভারতবাসী, আর কারা রয়েছে সেই তালিকায়
এই ধরনের স্বঘোষিত গডম্যানরা নানা দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। কখনও জালিয়াতি তো কখনও খুন-ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। কে কে সেই তালিকায় রয়েছে, দেখে নেওয়া যাক একনজরে।
রাম রহিমের ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর দেশের অন্য ধর্মগুরুদের প্রতিও মানুষ সন্দেহ নিয়ে তাকাবে তা স্বাভাবিক। আর তাকানোও উচিত। কারণ বছরের পর বছর ধরে এই ধরনের স্বঘোষিত গডম্যানরা নানা দুর্নীতিতে জড়িয়েছেন। কখনও জালিয়াতি তো কখনও খুন-ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আর কে কে সেই তালিকায় রয়েছে, দেখে নেওয়া যাক একনজরে।
[আরও পড়ুন: রাম রহিমকে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত করেছেন এই বিচারক, শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসছেন তিনি]
গুরমিত রাম রহিম
ডেরা সাচা সৌদার প্রধান গুরমিত রাম রহিমকে ধর্ষণের মামলায় বিশেষ সিবিআই আদালত দোষা সাব্যস্ত করেছে। ১৯৯৯ সালে দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের অভিয়োগে আদালত এই রায় দিয়েছে। সেই ঘটনার পর তাণ্ডবের জেরে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে হরিয়ানায়।
রামপাল
হরিয়ানার এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু খুন ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে আপাতত জেলে রয়েছেন। সতলোক আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা এই রামপালকে পুলিশ গ্রেফতার করতে গেলে ২০১৪ সালে তার অনুগামীরা এক সপ্তাহ ধরে রাস্তা ও রেল অবরোধ করে রাখে। মোট ৪২ বার আদালতের সমন উপেক্ষা করেছেন রামপাল। তবে শেষপর্যন্ত পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে হাজতে নেয়।
রামবৃক্ষ যাদব
স্বাধীন ভারত সুভাষ সেনার নেতা রামবক্ষ যাদব মথুরায় জওহর বাগ এলাকায় হিংসার জন্য অভিযুক্ত ছিলেন। অন্যায়ভাবে ২৮০ একর জায়গা তিনি ও তার অনুগামীরা দখল করে রেখেছিলেন। তার দাবি ছিল ভারতীয় টাকা সরিয়ে আজাদ হিন্দ ফৌজ কারেন্সি চালু করতে হবে। পেট্রোল-ডিজেল ১ টাকায় দিতে হবে। এমন হাজারো আবদার করে বছরের পর বছর ওই এলাকায় প্রশাসনকে ব্যতিব্যস্ত করে গিয়েছেন তিনি। অবশেষে ২০১৬ সালে মারা গিয়েছেন।
আশুতোষ মহারাজ
আশুতোষ মহারাজ মারা যাওয়ার পরও তাঁর দেহ সতকার করতে দেয়নি ভক্তরা। প্রায় ১১ মাস দেহ রাখা ছিল। মনে করা হয়েছে তিনি ধ্যানমগ্ন রয়েছেন। তার সঙ্গে কট্টর শিখদের বিরোধ লেগেই থাকত৷ তিনি শিখদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানেন বলে অভিযোগ৷ জলন্ধরে তা নিয়ে ব্যাপক গোলমাল হয়।
বালক ব্রহ্মচারী
পশ্চিমবঙ্গে বালক ব্রহ্মচারীকে নিয়ে নানা বিতর্ক হয়েছে। ১৯৯৩ সালে তিনি মারা যাওয়ার পরে পুলিশ দিতে দেহ দাহ করতে ৫৫ দিন সময় লেগেছে। বারবার নোটিশ দেওয়ার পরে অবশেষে ২ হাজার শিষ্যকে সরিয়ে প্রায় পাঁচশো পুলিশ দেহ বের করে এনে দাহ করে। নানা দুর্নীতি ওবিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন এই স্বঘোষিত গুরু।
আনন্দ মূর্তি
আনন্দ মার্গের প্রধান আনন্দ মূর্তির আসল নাম ছিল প্রভাস রঞ্জন সরকার। ছয়জনকে হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। সেই ঘটনায় ১৯৭১ সালে জেলও হয়। বিশ্বের ৮৫টি দেশ মিলিয়ে ৪০ লক্ষ অনুগামী ছিল। পুরুলিয়া অস্ত্র বর্ষণ মামলাতেও এই সংগঠনের নাম ছিল।
নিত্যানন্দ
ধর্ষণের মামলায় জেলে যেতে হয়েছিল নিত্যানন্দকে। এখন জামিনে মুক্ত রয়েছেন। ২০১০ সালে এক তামিল অভিনেত্রীর সঙ্গে অপ্রস্তুত অবস্থায় তাকে দেখা গিয়েছিল। এক শিষ্যাও নিত্যানন্দেপ বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন।
আসারাম বাপু
ধর্ষণের মামলায় বেশ কয়েকবছর জেলে রয়েছেন এই স্বঘোষিত ধর্মগুরু। তার ছেলে নারায়ণ সাই-ও ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত। ধর্মগুরু হওয়ার আগে আসারাম সাইকেল মেকানিকের কাজ করতেন।
ইচ্ছাধারী ভীমানন্দ
যৌনচক্র চালানোর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছে ভীমানন্দ। আসল নাম শ্রীমুরত দ্বিবেদী। ভীমানন্দ নাম গ্রহণের আগে সে দিল্লিতে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করত। ২০১০ সালে তাকে যৌনচক্র চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
চন্দ্রস্বামী
জালিয়াতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছে চন্দ্রস্বামী। আসল নাম নেমি চাঁদ জৈন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসীমা রাওয়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন তিনি। এছাড়াও আরও অনেক অপরাধমূলক মামলা ছিল চন্দ্রস্বামীর বিরুদ্ধে। রাজীব গান্ধী হত্যা মামলাতেও তার বিরুদ্ধে তদন্ত হয়।