গুজরাতেও সম্ভাব্য হারের মুখে রাহুল! কী হবে কংগ্রেসের ভবিষ্যত, কী বলছে সমীক্ষা
টাইমস নাও ও ভিএমআরের ওপিনিয়ন সার্ভেতে যে রিপোর্ট উঠে এসেছে তাতে গুজরাতে প্যাটেল, পতিদার সহ বিভিন্ন ছোট ছোট শক্তিগুলি কংগ্রেসকে সমর্থন করলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, গোয়া- একেরপর এক রাজ্যের নির্বাচনে গো হারা হারতে হয়েছে কংগ্রেসকে। সাম্প্রতিক সময়ে এটাই হল কংগ্রেসের রাজনৈতিক অবস্থা। সারা দেশে মাত্র একটিই বড় রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় রয়েছে। তা হল কর্ণাটক। সেখানেও সামনের বছর ভোটের হাওয়া উল্টো দিকে ঘুরে যেতে পারে। তবে তার আগে হিমাচলপ্রদেশ ও গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ফলাফলের উপরে নির্ভর করবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস কতটা শক্ত ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে লড়বে।
এই প্রেক্ষিতে আসন্ন গুজরাত নির্বাচন কংগ্রেসের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনওভাবেই হোক দলের অবস্থানকে প্রাসঙ্গিক করে রাখতে হবে। নাহলে আগামী লোকসভা ভোটে বিপদ বাড়বে। গতবছরে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে জোট বেধে ভোটে দাঁড়িয়ে লড়েছিল।
সেই ভোটের ফলাফল কী হয়েছিল সকলেই জানেন। বামেদের একেবারে টেনে নিচে নামিয়ে আনে রাহুল গান্ধীর দল। একই অবস্থা হয়েছে উত্তরপ্রদেশ সমাজবাদী পার্টির। সমাজবাদী পার্টি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে একেবারে জামানত জব্দ করেছে বলা যেতে পারে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে এক চতুর্থাংশের বেশি আসন ছেড়ে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনেন অখিলেশ সিং যাদব। এই একটি রাজ্যেই দাপট ছিল সপা-র। সেটাও বিপন্ন হয়েছে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধার পর।
এদিন টাইমস নাও ও ভিএমআরের ওপিনিয়ন সার্ভেতে যে রিপোর্ট উঠে এসেছে তাতে গুজরাতে প্যাটেল, পতিদার সহ বিভিন্ন ছোট ছোট শক্তিগুলি কংগ্রেসকে সমর্থন করলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এই প্রেশার গ্রুপগুলির কাছে প্রশ্ন একটাই, কংগ্রেসের সঙ্গে পথ চলা কী উচিত হবে?
সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, গুজরাতে হার্দিক প্যাটেল সহ বিভিন্ন জাতপাত আন্দোলনের নেতারা যদি কংগ্রেসের পক্ষে দাঁড়ান তাহলেও অন্তত ৫২ শতাংশ মানুষ বিজেপিকে ভোট দেবে। অর্থাত সবমিলিয়ে কোনওভাবেই জয়ের জায়গায় কংগ্রেস ও বাকীরা পৌঁছতে পারবে না। উল্টে হার্দিক, অল্পেশের মতো আন্দোলনকারী নেতাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পারে। সমর্থন কমে যেতে পারে।
প্রশ্ন ছিল হার্দিকের এক্ষেত্রে কী করা উচিত। এক্ষেত্রে ২৮ শতাংশ মানুষ বলেছেন কংগ্রেসের সঙ্গে থাকা উচিত। ১৯ শতাংশ বলেছে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা করা উচিত। অন্যান্য পথ নিতে মত দিচ্ছেন ১২ শতাংশ মানুষ। আর ৪১ শতাংশ মানুষ বলছেন এই নির্বাচনে হার্দিকের নিরপেক্ষ থাকা উচিত।
এছাড়া আরও একটি বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তা হল হার্দিকের আন্দোলনের কী প্রভাব গুজরাত নির্বাচনে পড়বে। এক্ষেত্রে ৩৪ শতাংশ বলেছেন প্রভাব রয়েছে। কোনও প্রভাব পড়েনি বলেছেন ২৬ শতাংশ মানুষ। ফলে বোঝা যাচ্ছে হার্দিকে অবস্থান নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। ফলে তার সঙ্গে রাহুল গাঁটছড়া বাঁধলে তা যে খুব বেশি ইতিবাচক হবে না তা বলাই যায়।
পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসকে কুপোকাত করতে বামেদের সঙ্গে জোট বেঁধেছিল কংগ্রেস। বামেদের ঘট উল্টে গেলেও কংগ্রেস কিন্তু ৪০টি আসন ধরে রেখেছে। এদিকে উত্তরপ্রদেশের ট্রেন্ডও একই থেকেছে। সপার ভরাডুবি হলেও কংগ্রেস জোট বেঁধে লাভবান হয়েছে। তবে গুজরাতে জোট বাঁধুন বা না বাঁধুন, ফের একবার রাহুল গান্ধীকে কড়া পরীক্ষায় পড়তে হবে বলেই মনে করছে টাইমস নাও ও ভিএমআরের ওপিনিয়ন সার্ভে।