গুজরাত ২০১৯: ২৬টির মধ্যে ২৬টি আসনই ধরে রাখা বিজেপির কাছে বিশাল চ্যালেঞ্জ
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, গুজরাত রাজ্যের ২৬টি আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হল এবারের লোকসভা নির্বাচনে।
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, গুজরাত রাজ্যের ২৬টি আসনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হল এবারের লোকসভা নির্বাচনে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের নিজের রাজ্য বলে তো বটেই, গুজরাত এবারের সাধারণ নির্বাচনে আরও অনেক কারণেই গুরুত্বপূর্ণ একটি যুদ্ধক্ষেত্র। এবং এই যুদ্ধে অন্তিম হাসি কে হাসবে, তা পরিষ্কার হবে আগামী ২৩ মে।
এবারের গুজরাতে মোদী-শাহের সম্মানের লড়াই
গুজরাতের নির্বাচনী লড়াই বলতে গেলে মোদী-শাহের কাছে এক সম্মানের লড়াই। ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে এই রাজ্যের ২৬টি আসনের সবকটিই পায় বিজেপি। একপেশে সেবারের লড়াইতে বিজেপি পায় ৬০ শতাংশ ভোট আর কংগ্রেসের ঝুলিতে পড়ে মাত্র ৩৪ শতাংশ। পাঁচ বছর পরে বিজেপির কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সেই লিড ধরে রাখা। অন্যদিকে, কংগ্রেস যদি একটি আসনও জিততে পারে এবারে, তাহলেই বিজেপি-বিরোধীদের মুখে খই ফুটবে, বলা হবে গেরুয়াবাহিনী নৈতিক লড়াইতে হেরে গিয়েছে।
বিজেপির পক্ষে ২০১৪-র নির্বাচনের পরবর্তী গুজরাতে সময় খুব ভালো যায়নি। একে রাজ্য থেকে মোদী ও শাহের জাতীয় রাজনীতিতে চলে যাওয়া আর পাশাপাশি পতিদার আন্দোলন, নোটবন্দি-পরবর্তী সময়ে ব্যবসায়ী শ্রেণীর ক্ষোভ ইত্যাদির ফলে বিজেপি এবারেও ২৬টি আসনই জিততে পারবে কী না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে, যদিও প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং এবং তাঁর সেনাপতি বারংবার মানুষকে আর্জি জানিয়েছেন ২০১৪-র পুনরাবৃত্তি করতে।
২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস কিছুটা হলেও জমি ফিরে পেয়েছে
২০১৭ সালে গুজরাতে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জিতলেও সেবারে কংগ্রেসের প্রত্যাবর্তনও ছিল উল্লেখযোগ্য। মোদী-পরবর্তী যুগে রাহুল গান্ধীর দল সে-রাজ্যে কিছুটা হলেও নিজেদের পায়ের তলায় জমি ফিরে পায়। একষট্টি থেকে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা পৌঁছয় ৭৭-এ আর সেখানে বিজেপির আসন সংখ্যা নেমে আসে ১০০-র নিচে (৯৯)। ১৯৮৫ সালের পর এটাই গুজরাতে কংগ্রেসের সেরা পারফরম্যান্স। এবারে কংগ্রেস আরও মনোনিবেশ করেছে সৌরাষ্ট্র এলাকায় কারণ সেখানে তারা গত বিধানসভা নির্বাচনে ভালো ফল করে।
[আরও পড়ুন:কৃষ্ণনগরে এবারে তৃণমূল-বাম-বিজেপির লড়াই; ভোট ২৯ এপ্রিল ]
পতিদার আন্দোলন ইত্যাদি নিয়েও গুজরাতে ঘটে গিয়েছে পরিবর্তন
পাশাপাশি, সংরক্ষণ নিয়ে পতিদার আন্দোলনের ফলে গুজরাতের আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিতে যে মন্থন হয়েছে গত কয়েকটি বছরে, তার প্রভাবও যে রাজ্যের রাজনীতিতে পড়বে এবারে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। হার্দিক প্যাটেল, জিজ্ঞেস মেভানি বা অল্পের ঠাকুরের মতো তরুণ নেতারা ইতিমধ্যেই উঠে এসে গুজরাতে বিজেপি-কংগ্রেসের চিরাচরিত দ্বিমেরুর রাজনীতিতে আঘাত হেনেছেন একথা অস্বীকার করা যায় না। পতিদার, অনগ্রসর শ্রেণী, দলিত ইত্যাদি সম্প্রদায়ের এই যুবা নেতারা এখন মোদী-উত্তর গুজরাতে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করছেন; দিকনির্দেশ দিচ্ছেন আর সেখানেই এবারের নির্বাচনের গুরুত্বটি লুকিয়ে রয়েছে।