'চিপকো আন্দোলন'কে কুর্ণিশ গুগল ডুডলের, জানুন এই লড়াইয়ের রক্তাক্ত ইতিহাস
সবুজকে বাঁচানোর লড়াইয়ে এদেশের ইতিহাস অন্যতম উল্লোখযোগ্য অধ্যায় চিপকো আন্দোলন।
সবুজকে বাঁচানোর লড়াইয়ে এদেশের ইতিহাসে অন্যতম উল্লোখযোগ্য অধ্যায় চিপকো আন্দোলন। সবুজের জঙ্গল কেটে কংক্রিটের জঙ্গল গড়ার প্রতিবাদে সোচ্চার কয়েকজন মানুষের অক্লান্ত লড়াইয়ের নাম 'চিপকো আন্দোলন'। যার ৪৫ বছর পূর্তিতে গুগল-ডুডল জানিয়েছে কুর্ণিশ।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ,এই আন্দোলনের ইতিহাস।
সবুজকে রক্ষা ও রক্তপাতের ইতিহাস
সময়টা ১৭৩০ খ্রীষ্টাব্দ। রাজস্থানের প্রত্যন্ত গ্রাম খেজরিলিতে সবুজের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াইয়ে কোথাও মিশে গিয়েছিল মানবিকতার অস্তিত্বের লড়াই। গ্রামের ৩৬৩ জন বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের সদস্য সেই লড়াইয়ে আত্মবলি দিতে বাধ্য হন। কারণ, তাঁদের লক্ষ্য একটাই ছিল, বাঁচাতে হবে গ্রামের খেজরি গাছগুলিকে। তাই গাছগুলিকে বাঁচাতে তাদের জড়িয়ে ধরেই শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়েছিলেন বিষ্ণোইরা। আর সেখানে গাঠকে আঁকড়ে জড়িয়ে ধরা অবস্থাতে রাজার সৈন্যদের হাতে মৃত্যু হয় বিষ্ণোইদের।
কেন শুরু হয় লড়াই?
খেজরিলি গ্রামে খেজরি গাছ কেটে সেখানে নতুন রাজপ্রাসাদ গড়ার পরিকল্পনা ছিল মেওয়ারের রাজা অভয় সিং-এর। আর সেজন্যই চলছিল গাছ কাটার কাজ। যা রুখতে তৎপর হন গ্রামের মহিলা অমৃতা দেবী। ৩ সন্তানের মা অমৃতা দেবীর এই লড়াইয়ে সামিল হন গ্রামের সমস্ত বিষ্ণোই সম্প্রদায়ের সদস্যরা।
পরবর্তীকালে এই আন্দোলনের ইতিহাস
১৯৭৩ সালে উত্তর প্রদেশ থেকে এই আন্দোলন নিজের কঠোর রূপ ধারণ করে। নেতৃত্বে ছিলেন প্রখ্যাত পরিবেশবিদ সুন্দরলাল বহুগুণা।
কেন হয়েছিল এই আন্দোলন উত্তরপ্রদেশে?
উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদের করাত কল মালিকদের গাছ কাটার অনুমতি দেয় তৎকালিন উত্তরপ্রদেশ সরকার। যদিও বনের আদিবাসীদের , জীবন ধারণের জন্য বছরে ১০টি গাছ কাটারও অনুমতি দেয়নি বন বিভাগ। অথচ বনভূমির সবচেয়ে বড় রক্ষক ও অংশীদার তারাই। আদিবাসীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গাছ কাটার সুযোগ করে নেয় সরকার ও করাতকল সংস্থা।
এরপর কী হয়?
করাতকলের সদস্যরা গাছ কাটতে এলে সেখানে রুখে দাঁড়ান গওরা দেবী ও তাঁর সঙ্গী মহিলা মঙ্গল মণ্ডল। গাছকে জড়িয়ে থেকে প্রতিবাদে সরব হন জঙ্গলের বাসিন্দারা। পরবর্তীকালে বহু লড়াইয়ের পর গওয়ার দেবীরা সবুজে বাঁচাওয়ের আন্দোলন জিতে যান।
কেন নাম চিপকো আন্দোলন?
গাছের
সঙ্গে
মানবিক
অস্তিত্বকে
আটকে
রাখার
এই
লড়াইয়ের
নাম
চিপকো।
হিন্দিতে
'চিপকো'
শব্দের
অর্থ
আটকে
রাখা
।
এখানে
গাছের
সঙ্গে
নিজেকে
আটকে
রাখারই
বার্তা
দেওয়া
হয়েছে।
আর
এই
গাছকে
জড়িয়ে
ধরেই
মৃত্যু
হয়
রাজস্থানের
বিষ্ণোইদের।