ডোনাল্ড ট্রাম্প ফের রাত জেগে টুইটারে আক্রমণ শানাতে ব্যস্ত; এবারে লক্ষ্য সংবাদমাধ্যম
অবৈধ ভোটাররা ভোট দিয়েছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট যতই চেঁচান, প্রমাণ এখনও পর্যন্ত কিছুই করতে পারেননি
মার্কিন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার রাত জেগে টুইটাক্রমণ শুরু করেছেন। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে একবার রাত তিনটের সময়ে ট্রাম্প তাঁর প্রতিপক্ষ হিলারি ক্লিন্টন এবং এক প্রাক্তন ল্যাতিন বিশ্বসুন্দরীকে লক্ষ্য করে আক্রমণাত্মক টুইট করে ট্রাম্প নানা মহলে নিন্দিত হয়েছিলেন।
আর এবার তাঁর লক্ষ্য মার্কিন মিডিয়া। সম্প্রতি ট্রাম্পের "লক্ষ লক্ষ অবৈধ ভোটার এবারের মার্কিন নির্বাচনে ভোট দিয়েছে" মন্তব্যের বিরোধিতা করে সংবাদমাধ্যম আর তার পাল্টা দিতেই ট্রাম্প টুইটারের শরণাপন্ন হন।
ট্রাম্প বিশেষ করে খড়গহস্ত হন সিএনএন-এর সাংবাদিক জেফ জেলেনির উপর। চল্লিশ মিনিটের মধ্যে তিনি পাঁচ পাঁচটি টুইট করে জেলেনিকে তীব্র আক্রমণ করেন। জেলেনির অপরাধ? তিনি তাঁর প্রতিবেদনে ট্রাম্পকে "বিক্ষুব্ধ বিজয়ী" বলে অবহিত করেছিলেন এবং বলেছিলেন তাঁর "ভুয়ো ভোটার"-এর তত্ত্বের কোনও প্রমাণ নেই।
এবারের নির্বাচনে হিলারি মানুষের ভোট অনেকটা বেশি পেলেও মার্কিন নির্বাচনের ইলেক্টোরাল কলেজ ব্যবস্থা মাফিক শেষ হাসি হাসেন ট্রাম্পই। আর সেই নিয়ে বিভিন্ন প্রদেশে পুনর্গণনা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে শোরগোল পড়তেই ট্রাম্প ক্ষিপ্ত হয়ে একহাত নেন সংবাদমাধ্যমকেই।
ট্রাম্পের পাল্টা দাবি ইলেক্টোরাল কলেজ ব্যবস্থায় তো বটেই, সাধারণ মানুষের ভোটও তিনি বেশি পেয়েছেন যদি "অবৈধ" ভোটগুলি বাদ দিয়ে দেখা হয়। যদিও তাঁর দাবিকে প্রতিষ্ঠা করতে তিনি কোনও প্রমাণ দিতে পারেননি।
কিনতু ট্রাম্প এই "ভুয়ো ভোটার" তত্ত্বের আমদানি করলেন কথা থেকে? বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, বেশ কিছু ট্রাম্পপ্রেমী ওয়েবসাইট দাবি তুলেছে যে গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে তিন মিলিয়ন (৩০ লক্ষ) অবৈধ অনুপ্রবেশকারী মতদান দিয়েছে। যদিও এই ষড়যন্ত্রের তত্ত্বের কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি কেউই। বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের মতো পপুলিস্ট নেতা এই তত্ত্বটিকেই লুফেছেন জনমানসে তাঁর সমর্থন জিইয়ে রাখার জন্য।
সম্প্রতি গ্রিন পার্টির রাষ্ট্রপতি প্রার্থী জিল স্টেন উইসকনসিন সহ বিভিন্ন প্রদেশে ভোটের পুনর্গণনার দাবি তোলার পরেই ট্রাম্প সমর্থকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। আর ট্রাম্প তাতে আরও ঘৃতাহুতি দেন যাতে তাঁর সমর্থকদের মনে হয় সত্যিই তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অবৈধ অনুপ্রবেশ ইত্যাদি থেকে রেহাই দিয়ে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে চান।