২০২২ সালে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় কারা রয়েছেন ও তাঁদের মোট সম্পত্তি পরিমাণ কত, জানেন আপনি
২০২২ সালে ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় কারা রয়েছেন ও তাঁদের মোট সম্পত্তি পরিমাণ কত, জানেন আপনি
এই পৃথিবীতে ধনী ব্যক্তিদের সকলেই যে কেউ অন্য চোখে দেখেন তা সকলেরই জানা। ভারতে শীর্ষ তালিকায় এমন হয়তো অনেক ধনী ব্যক্তি রয়েছেন যাঁদের নাম আমাদের অজানা। জেনে নিন দেশের দশ ব্যক্তির নাম। ২০২২ সালে এই ব্যক্তিরাই শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের জায়গা দখল করেছেন।
মুকেশ আম্বানি
ভারতের কোটিপতি এবং ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন মুকেশ আম্বানি। তিনি রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান। তিনি দেশের মধ্যে প্রথম এবং বিশ্বের ১২তম ধনী ব্যক্তি। তিনি মোট ১৩ বার ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় নিজের নাম করেছিলেন। রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মধ্যে এটি বৃহত্তম শিল্পগুলো মধ্যে একটি। এখানে পেট্রোল, গ্যাস, তেল, টেক্সটাইল, টেলিকম যোগাযোগ নেটওয়ার্কে ব্যবসা। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৯০.৭ বিলিয়ন। যা চলতি বছরের ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি তাঁর প্রয়াত পিতার নামে জামনগরে একটি কমপ্লেক্সের চারটি বিশাল কারখানা তৈরি করছেন। তিনি তাঁর শিল্পের জন্য আগামী ১৫ বছরে ৮০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা করছেন। তিনি নিতা আম্বানিকে বিয়ে করে বর্তমানে সুখেই সংসার করছেন।
গৌতম আদানি
ভারতে দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি এবং বিশ্বের ১১তম ধনী ব্যক্তির তালিকায় তাঁর নাম। তিনি আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রতিষ্ঠাতা। ভারতের আহমেদাবাদ ভিত্তিক বন্দর ও উন্নয়ন ও পরিচালনকারী বহুজাতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত তিনি। তিনি প্রীতি আদানিকে বিয়ে করে বর্তমান তাঁর সঙ্গে সংসার করছেন। ২০৩০ সালের মধ্যে ৭০ বিলিয়ন বিনিয়োগ করে তিনি ব্যবসাকে আরও সাফল্য পথে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি ১০.৫ বিলিয়ন ডলার অম্বুজা সিমেন্টের দখল নিয়ে তিনি। বর্তমানে তাঁর দুটি ছেলেও রয়েছে।
শিব নাদার
ভারতে তৃতীয় ধনী ব্যক্তি এবং বিশ্বের ৪৭তম স্থানে তাঁর নাম রয়েছে। তিনি বর্তমানে এইচসিএল প্রযুক্ত সহ প্রতিষ্ঠাতা, চেয়ারপার্সন এবং উপদেষ্টা। তিনি ২৮.৭ বিলিয়ন সম্পদের অধিকারী। চলতি বছরে তাঁর ২২ শতাংশ সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর রেখে তিনি শিব নাদার ফাউন্ডেশন খুলেছেন। তিনি কিরণ শিব নাদারকে বিয়ে করেছেন। তাঁর একটি কন্যা সন্তান আছে। তাঁর মেয়ে রশ্মিনী নাদার মালহোত্রা ৫২টি দেশে প্রায় ২ লক্ষ কর্মী নিয়ে কোম্পানী পরিচালনা করেন।
সাইরাস পুনাওয়ালা
তিনি সিরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা। ভারতের চতুর্থ স্থানে এবং বিশ্বের ৫৬তম স্থানে ধনী ব্যক্তির তালিকায় নিজের নাম নথিভুক্ত করেছেন তিনি। দেশের করোনা বিরুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন এই ইনস্টিটিউট। তাঁদের তৈরি টিকা দেশের কয়েক কোটি মানুষকে নতুন জীবন দিয়েছেন। তাই চলতি বছরের সাইরাস পুনওয়ালাকে পদ্মভূষণে ভূষিত করা হয়েছে। এই ইনস্টিটিউট পোলিসহ হাম রোগের ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছেন। তাঁর স্ত্রী ভিলিও পুনাওয়ালা ২০১০ সালে মারা যান। বর্তমানে তাঁর একটি পুত্র সন্তান রয়েছেন। তাঁর নাম আদার পুনাওয়ালা।
রাধাকৃষ্ণন দামানি
স্টক মার্কেটে একজন স্টক বিনিয়োগকারী হিসেবে তিনি বিখ্যাত। ২ শতক আগে তিনি ডি মার্টের প্রতিষ্ঠাতা। ২ শতক আগে তিনি মুদি দোকানের সঙ্গে খুচরো ব্যবসায় শুরু করেছিলেন। পরে সুপার মার্কেটে একটি চেইন চালু করে এভিনিউ সুপার মার্কেট খুলেছেন। দেশে তাঁর মোট ২৭১টি ডি মার্ট স্টোর রয়েছে। তিনি ভারতের পঞ্চম ধনী ব্যক্তি এবং বিশ্বের ৮১তম ধনী ব্যক্তি। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলার। অম্বুজার সিমেন্টের সঙ্গে অংশীদার হিসেবে সহযোগিতার করার চেষ্টা করছেন তিনি। সেখানে থেকে ১০০০ কোটি বিনিয়োগ করতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। তিনি তাঁর ভাই গোপীকৃষ্ণনের সঙ্গে মুম্বইতে ১০০ মিলিয়ন ডলার একটি বাড়ি কিনেছেন। তিনি বিবাহিত। বর্তমানে তাঁর তিনটি সন্তান রয়েছে।
লক্ষ্মী মিত্তাল
লক্ষ্মী মিত্তাল বিশ্বের বৃহত্তম ইস্পাত ও খনি কোম্পানির আর্সেলের মিত্রল চেয়ারপার্সন। তিনি ২০২১ সালে ৭৬.৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছেন। মিত্তাল এর আগে ৭৩৩ মিলিয়ন লোকসানের কারণে ভারতের ষষ্ঠ স্থান এবং বিশ্বের ৮৯তম স্থানে ধনী তালিকায় রয়েছেন। তাঁর বর্তমানে সম্পত্তির পরিমাণ ১৭.৯ বিলিয়ন। তিনি বর্তমানের ক্যারিক লিমিটেড এবং কুইন্স পার্ক এবং রেঞ্জর্সের সহ মালিক। যুক্ত রাজ্যে ১২৮ মিলিয়ন এবং দিল্লিতে ৩০ মিলিয়ন ডলারে বাড়ির মালিক তিনি। তিনি উষা মিত্রলকে বিয়ে করেছেন। তাঁর দুটি সন্তান রয়েছেন। তাঁদের নাম ভ্যানিশা ও আদিত্য মিত্রাল।
সাবিত্রী জিন্দাল
বর্তমানে জিন্দাল গ্রুপ অফ কোম্পানিসের চেয়ারপার্সন তিনি। দেশের সবচেয়ে ধনী নারীর মধ্যে তিনি একজন। ১৯৭০ সালে ওমপ্রকাশ জিন্দালের সঙ্গে বিয়ে করে সংসার পেতে ছিলেন তিনি। তাঁর স্বামী জিন্দাল গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেখানে প্রধানত ইস্পাত ও বিদ্যুতের কাজ করা হয়। হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান তাঁর স্বামী। তারপরে ব্যবসার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন সাবিত্রী দেবী। তিনি হরিয়ানার সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন। এবং আইনসভার সদস্য ছিলেন তিনি। ২০২০ সালে ১৯তম ধনীর তালিকায় সাবিত্রী দেবীর নাম প্রকাশিত হয়। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ সাড়ে ৬০০ কোটি ডলার। তিনি দেশের সপ্তম ও বিশ্বে ৯১ তম স্থানে রয়েছেন।
কুমার বিড়লা
তিনি আদিত্য বিড়লা গ্রুপের চেয়ারম্যান। তিনি ভারতীয় ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে অষ্টম এবং বিশ্বে ১০৯তম স্থানে রয়েছেন। তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমার ১৬.৫ বিলিয়ান ডলার। ২০১৮ সালে তিনি আইডিয়া এবং ভোডাফোনের একাত্বীভূত হওয়ার কারণে চেয়ারপারর্সনকে পদত্যাগ করেছিলেন। এবং অনেক লোকসানও হয়েছে। তিনি নীরোজা বিড়লাকে বিয়ে করেছে। তাঁর দুটি মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে।
দিলীপ সাংভি
সান ফার্মাসিউটিক্যালস এর প্রতিষ্ঠাতা তিনি। চলতি বছরের দেশে ৯তম এবং দেশের ১১৫ তম ধনী ব্যক্তির তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তিনি একাই ৪.৫ বিলিয়ান ডলার উপার্জান করে ৩৯ বছর ধরে সানের ব্যবস্থাপনার পরিচালনার কাজ করছেন। তাঁর কোম্পানি বিশেষত ওষুধের কোম্পানি। তিনি ২০১৯ সালে সেরা ব্যবসায়ীক বইয়ের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। তিনি বিভা সাংভিকে বিয়ে করেছেন। তাঁর একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। তাঁদের নাম অলক ও বিদ্যা।
উদয় কোটাক
কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা। দেশের ১০তম ধনী ব্যক্তি এবং বিশ্বের তালিকায় ১২৯ তম জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ১৫.৩ বিলিয়ন ডলার। তিনি ফাইনান্স কোম্পানি মালিক ছিলেন ২০০৩ সালে। ব্যাঙ্কিং লাইসেন্স অর্জন করেন এবং কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্ক স্থাপন করেন।