
শুক্রে কি অক্সিজেন আছে? গ্রহের রহস্য উন্মোচনে নয়া মিশনের পরিকল্পনা বিজ্ঞানীদের
পৃথিবীর কাছাকাছি কোন গ্রহের মধ্যে রয়েছে প্রাণ, তা জানতে আগ্রহের শেষ নেই। পৃথিবী থেকে বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছে কাছের কোনও গ্রহ সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে। সেই লক্ষ্যে মহাকাশ প্রথম গন্তব্য মঙ্গল। অবশ্যই তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে শুক্র গ্রহ। কারণ পৃথিবীর সবথেকে কাছে রয়েছে এই গ্রহ।

শুক্রে পাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে
সম্প্রতি পৃথিবীর সবথেকে কাছের গ্রহ শুক্রে বেশ কয়েকটি মিশনের পরিকল্পনা শুরু করেছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাগুলি। শুক্রে পাড়ি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে গ্রহের জৈব এবং রাসায়নিক গঠনটি বের করা প্রয়োজন। এই অনুসন্ধানে সাহায্য করার জন্যই ডাভিঞ্চির সহায়তার থেকে আর কে ভালো হতে পারে!

শুক্রে অক্সিজেনের পরিমাণ খুঁজে বের করার জন্য
ডিপ অ্যাটমোস্ফিয়ার ভেনাস ইনভেস্টিগেশন অফ নোবেল গ্যাস, কেমিস্ট্রি এবং ইমেজিং মিশন ওরফে ডেভিন্সি 2029 সালে শুক্রে লঞ্চ করবে। গ্রহের পৃষ্ঠের কাছে উপস্থিত অক্সিজেনের পরিমাণ খুঁজে বের করার জন্য মহাকাশযানের একটি বিশেষ যন্ত্র থাকবে। এটি ভেনাস অক্সিজেন ফুগাসিটি দিয়ে সাজানো থাকবে। একটি ছোট ও বোতাম-আকারের সেন্সর যা যুগান্তকারী পরিমাপ পরিচালনা করবে।

ভেনাস অক্সিজেন ফুগাসিটির পরিমাপ বিশ্লেষণে
নাসা বলেছে, এই গ্রাউন্ড-ব্রেকিং ভেনাস অক্সিজেন ফুগাসিটির পরিমাপ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা প্রথমবারের মতো হাইল্যান্ডে শুক্রের পৃষ্ঠে কোন খনিজগুলি সবথেকে বেশি স্থিতিশীল তা শনাক্ত করবে এবং তাদের সাম্প্রতিক পরিবর্তনের ইতিহাসের সঙ্গে শিলা গঠনের ইতিহাস তুলনা করে দেখবে। তা এই মিশন ভেনাসে যুক্ত করে কার্যকরী করে তোলার চেষ্টা করবে নাসা।

ভেনাস অক্সিজেন ফুগাসিটি কী?
ভেনাস অক্সিজেন ফুগাসিটি ভেনাসের বায়ুমণ্ডলে ডাভেঞ্চি মিশনের জন্য স্নাতক এবং স্নাতক ছাত্রদের দ্বারা ডিজাইন করা সেন্সর। সেন্সরটি ডিসেন্ট স্ফিয়ারের বাইরে মাউন্ট করা হবে, যেখানে এটি শুক্রের মেঘের নীচে গভীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের আংশিক চাপ পরিমাপ করবে। ডিসেন্ট প্রোব শুক্রের কক্ষপথে আসার দুই বছর পর শুক্রে প্রবেশ করবে।

ভিএফএক্স আসলে অটোমোবাইল ইঞ্জিনে অক্সিজেন সেন্সর
ততদিন ডিসেন্স প্রোব বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাসগুলি গ্রহণ করবে ও বিশ্লেষণ করবে। তারপর আলফা রেজিও অঞ্চলে গ্রহের পৃষ্ঠে নেমে আসার সঙ্গে সঙ্গে ছবি সংগ্রহ করবে। ভেনাস অক্সিজেন ফুগাসিটি বা ভিএফএক্স আসলে অটোমোবাইল ইঞ্জিনে অক্সিজেন সেন্সরের অনুরূপভাবে কাজ করবে, যা জ্বালানির অন্যান্য উপাদানের তুলনায় জ্বালানি সিস্টেমে অক্সিজেনের পরিমাণ পরিমাপ করে।

শুক্রের গভীরতম বায়ুমণ্ডলে কতটা অক্সিজেন রয়েছে, জানতে
নাসা এক বিবৃতিতে বলেছে, "শুক্রের বায়ুমণ্ডলে কতটা অক্সিজেন রয়েছে তা বোঝা যাবে এই মিশনে। এবং ভবিষ্যতে আমাদের সৌরজগতের বাইরে শুক্র-সদৃশ জগতগুলিকে চিহ্নিত করার প্রস্তুতি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হবে৷ শুক্রের গভীরতম বায়ুমণ্ডলে কতটা অক্সিজেন রয়েছে তা বিজ্ঞানীদের এই দূরবর্তী বিশ্বে থেকে গবেষণায় সহায়তা করবে।

ডাভেঞ্চি মিশন কী?
ডাভিন্সি মিশন শুক্রের বায়ুমণ্ডলের গঠন পরিমাপ করবে কীভাবে সেই লক্ষ্য নিয়ে এটি গঠিত হয়েছিল এবং বিবর্তিত হয়ে চলেছে। সেইসঙ্গে গ্রহটিতে কখনও সমুদ্র ছিল কি না তা নির্ধারণ করবে। মিশনের লক্ষ্য হবে শুক্র গ্রহে বিদ্যমান জীবনের সম্ভাবনার প্রথম সূত্র খুঁজে বের করা।

মহাকাশযানটি গ্রহের পরিবর্তনের লক্ষণগুলি পর্যবেক্ষণ করবে
শুক্র এবং পৃথিবী আকার এবং ঘনত্বে প্রায় একই। তাই অনুমানগতভাবে, এই গ্রহগুলি একই রকম হতে পারে। কিন্তু এখনও তারা আকর্ষণীয়ভাবে ভিন্ন। মহাকাশযানটি গ্রহের পরিবর্তনের লক্ষণগুলি পর্যবেক্ষণ করবে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীতেও প্রতিলিপি হতে পারে। ডাভেঞ্চি ঠিক তার নামের মতোই এই পৃথিবীর প্রথম উচ্চ-রেজোলিউশনের চিত্রগুলিকে তার ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যগুলির বিশদ বিবরণ দেবে, যা পৃথিবীর মহাদেশগুলির সঙ্গে তুলনীয় হতে পারে।
আকাশগঙ্গা ছায়াপথে আরও চার ভিনগ্রহী সভ্যতা রয়েছে, দাবি গবেষকদের