বামেদের সাইনবোর্ডটুকুও খুলে পড়ল বলে, সামনের পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী দিতে পারবেন তো সূর্যবাবুরা
এখন যা অবস্থা তাতে আগামী বছরের সবচেয়ে বড় পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব জায়গায় সিপিএম তথা বামেরা প্রার্থী দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
আরও একটা ভোট এল এবং রাজ্য বামফ্রন্ট ফের কুপোকাত হল। একসময়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ বাম জোট তথা সবচেয়ে বড় বাম দলের ইজ্জত এখন ধুলোয় লোটাচ্ছে। ভোট আসছে আর যাচ্ছে। আর ততই কমছে আসন সংখ্যা ও ভোটের শতাংশ। এখন প্রায় সাইনবোর্ডে পরিণত হয়েছে এরাজ্যের বাম দলগুলি। ক্ষয়িষ্ণু বামেদের রাজনৈতিক ঐতিহ্যও।
এদিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে মোট সাতটি পুরসভার ভোটের ফলাফল বের হল। হলদিয়া, কুপার্স ক্যাম্প, বুনিয়াদপুর, দুর্গাপুর, ধূপগুড়ি, নলহাটি ও পাঁশকুড়া পুরসভার সবকটিতে একচ্ছত্রভাবে তৃণমূল জয়ী হয়েছে।
সবকটি পুরসভাতেই প্রায় শতকরা একশো শতাংশ আসন ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। হলদিয়ায় ২৯টির মধ্যে সবকটি, কুপার্স ক্যাম্পের ১২টির মধ্যে সবকটি আসন, দুর্গাপুরে ৪৩টি আসনের মধ্যে ৪৩টি তৃণমূল জিতেছে। বাকী থাকা বুনিয়াদপুর, ধূপগুড়ি, নলহাটি, পাঁশকুড়া পুরসভায় বিরোধীরা ১-২টি করে আসন পেয়েছে।
সবচেয়ে আশ্চর্যের হল- এই সাতটি পুরসভাতেই সিপিএম বা কংগ্রেস কোনও পুর আসনে জয় পায়নি। বামফ্রন্টের শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক নলহাটিতে ১টিই মাত্র আসনে জয় পেয়েছে। বাকী বাম ভাগ্যে আমআঁটি ছাড়া আর কিছু জোটেনি।
এখন ঘটনা হল, ঐতিহাসিকভাবে ক্ষয়িষ্ণু বাম আর্দশে ভর করে বিরোধী রাজনীতিতে ক্রমশ শক্ত ঠাঁই তৈরি করছে বিজেপি। এখন রাজ্যে শাসক দলের ঘোষিত বিরোধী দিলীপ ঘোষের দলই। পুরভোট, বিধানসভা-লোকসভা উপনির্বাচন হোক অথবা, কোনও এলাকার পুর-পঞ্চায়েত ভোট, সব জায়গাতেই বামেদের যা অবস্থা তাতে আগামী বছরের সবচেয়ে বড় পঞ্চায়েত নির্বাচনে সব জায়গায় সিপিএম তথা বামেরা প্রার্থী দিতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
নতুন প্রজন্মের কেউ বামেদের সঙ্গে নেই। হয় তাঁরা তৃণমূল অথবা বিজেপিতে নাম লিখিয়েছে। এই অবস্থায় সূর্যকান্ত মিশ্রর দল ও তার সাঙ্গরা কটি আসেন প্রার্থী দিতে পারেন, সেই প্রশ্নটা উসকে দিয়ে গেল এই সাতটি পুরসভায় বামেদের বিপর্যয়ের চিত্র। একসময়ে যে এলাকাগুলি ছিল বাম গড়, সেখানেই দল নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। সূর্যবাবু, বিমানবাবুরা আর কতগুলি নির্বাচন গেলে ঘুরে দাঁড়াবেন তা বোধহয় এখন ঈশ্বরও জানেন না।