কাবেরী রায়ে হাসি চওড়া কংগ্রেসের, কর্ণাটক ভোটে বিজেপির সব আশা কি শেষের পথে
এদিন কাবেরী নদীর জল নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কর্ণাটক সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছে। এবার থেকে বেশি জল পাবে কর্ণাটক। এই রায় আগামী ভোটে বিশেষ সুবিধা দেবে কংগ্রেসকে।
কর্ণাটকে এবছরই বিধানসভা ভোট। তার আগে যুযুধান দুই পক্ষ বিজেপি ও কংগ্রেস একে অপরের বিরুদ্ধে বহুদিন আগে থেকেই কোমর বেঁধে নেমে পড়ছে। সিদ্দারামাইয়ার কংগ্রেস সরকারকে দুর্নীতি সহ একাধিক ইস্যুতে আক্রমণ করেছে বিজেপি। গতবছরে একটা সময় মনে হতে শুরু করেছিল, বিজেপি বুঝি ভোট হলেই দক্ষিণের এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে।
[আরও পড়ুন:কাবেরী জল-যুদ্ধে কর্ণাটকের দিকে ঝুঁকল সুপ্রিমকোর্ট, ভোটের আগে স্বস্তি সিদ্দারামাইয়ার]
তার কিছুটা আভাস অবশ্যই পাওয়া গিয়েছিল বেঙ্গালুরু পুরভোটে। বিজেপি বছর দুয়েক আগে সেই ভোটে জিতে ক্ষমতায় এসেছে। তবে শহরে বিজেপির দাপট বেশি থাকলেও শহরতলি ও গ্রাম এলাকায় কংগ্রেস নিজের মতো করে আখের গুছিয়ে নিয়েছে।
আর তাতে সবচেয়ে বড় অবদান মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার। বিজেপির শত প্রচারের মাঝেও গ্রামীণ এলাকায় উন্নয়নের কা করে গিয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। ভোটের আগে প্রায় প্রতিটি জেলার রাস্তায় পিচের প্রলেপ পড়েছে গ্রামীণ জনজীবন উন্নত করা ও অন্যদিকে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াতে নানা ধরনের প্রকল্পের ঘোষণা ও তা সম্পূর্ণ করা। এই ছকেই কর্ণাটকে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়াকে ঘুরিয়ে নিজের সমর্থনে নিয়ে আসতে পেরেছেন সিদ্দারামাইয়া।
অন্যদিকে বিজেপি যাকে কেন্দ্র করে ভোটের জন্য লড়ার প্রস্তুতি শুরু করেছিল সেই বিএস ইয়েদুরাপ্পা ক্রমশ লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়েছেন। একে তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তো রয়েইছে, পাশাপাশি দলের একটা অংশ সরাসরি ইয়েদুরাপ্পার বিরোধিতা করেছে। যার ফলে লড়াই ক্রমশ কঠিন হয়েছে বিজেপির জন্য।
কর্ণাটক বিধানসভায় মোট ২২৪টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য চাই ১১৩টি আসন। এই মুহূর্তে কংগ্রেসের হাতে রয়েছে ১২৩টি আসন। বিজেপির হাতে রয়েছে ৪৪টি আসন ও জেডি(এস)-এর হাতে রয়েছে ৪০টি আসন।
বিজেপি কর্ণাটকে ভোটের প্রচার শুরু করে ৭৫ দিনের 'নব কর্ণাটক নির্মাণ পরিবর্তন যাত্রা' করেছে। তবে তা ৮৫দিন পর্যন্ত চলে। বেঙ্গালুরুতে এসে তা শেষ হয় নরেন্দ্র মোদীর ভাষণের মধ্য দিয়ে। এদিকে কংগ্রেস আলাদা করে ঢাকঢোল পিটিয়ে ভোটের প্রচার না করে রাজ্যের ৫৬ হাজার ২৬১টি জায়গায় বুথ-পর্যায়ে কমিটি তৈরি করে জনসংযোগ শুরু করেছে। আর এভাবেই লোকদেখানো প্রচারের তলে তলে রাজ্যে জমি শক্ত করে ফেলেছে কংগ্রেস।
তার মাঝেই এদিন কাবেরী নদীর জল নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট কর্ণাটক সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছে। এবার থেকে বেশি জল পাবে কর্ণাটক। যে রায়কে জয় হিসাবেই দেখছে সিদ্দারামাইয়া সরকার। কাবেরী জল ইস্যুতে আবেগ ও রাজনীতি একসঙ্গে মিশে রয়েছে। ভোটের আগে কাবেরী রায় কংগ্রেসের পক্ষে যাওয়ায় শাপে বর হয়েছে। এদিকে বিজেপি না চাইতেও আরও পিছিয়ে পড়ল।
[আরও পড়ুন:আগামী ১৫ বছর কাবেরীর জলে কর্ণাটকের অধিকার বেশি, সুপ্রিমকোর্টে ধাক্কা খেল তামিলনাড়ু]