এটিএম ফাঁকা, ২ হাজারের নোট ফিরছে না ব্যাঙ্কে, পিছনে কোন ষড়যন্ত্র! জানুন বিতর্কের হাল-হকিকত
দেশের নানা প্রান্তে নগদের আকাল নিয়ে দুদিন ধরে ধুন্ধুমার চলছে। বিরোধীদের আক্রমণে ফুটিফাটা অবস্থা কেন্দ্র সরকারের।
দেশের নানা প্রান্তে নগদের আকাল নিয়ে দুদিন ধরে ধুন্ধুমার চলছে। বিরোধীদের আক্রমণে ফুটিফাটা অবস্থা কেন্দ্র সরকারের। নোট বাতিলের সময় নোটের আকাল, ফাঁকা এটিএম এসব লক্ষ্য করা গিয়েছিল। দেড় বছর পরে তা আবার ফিরে এসেছে। এবং সমালোচনা হওয়ায় কেন্দ্র সরকার নিজেদের পিঠ বাঁচাতে সচেষ্ট হয়ে উঠেছে।
কয়েকটি রাজ্যে গোলমাল
অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলাঙ্গানা, কর্ণাটক, বিহার, মধ্যপ্রদেশের মতো বেশ কিছু রাজ্যে এটিএমগুলিতে নগদ নেই। এর দায় ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কিছু অ্যাকাউন্টহোল্ডারদের ঘাড়ে ফেলেছে। অনেকে নগদ জমা করছেন না। যার ফলে আকাল বলে দাবি করা হয়েছে। তবে সরকার বা আরবিআই কোনও গ্রহণযোগ্য কারণ দর্শাতে ব্যর্থ হয়েছে।
২ হাজারের নোট
বিভিন্ন ব্যাঙ্ক আধিকারিকদের অভিযোগ, ২ হাজার টাকার নোট ব্যাঙ্কে ফেরত আসছে না। ইঙ্গিত, কালো টাকা হিসাবে তা কোথাও গচ্ছিত হচ্ছে। এত বেশি অঙ্কের নোট হওয়ায় সহজে অনেক কম জায়গায় অনেক টাকা রাখা যায়। যার ফলে ২ হাজার টাকার নোট চেপে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর।
ভোটের জন্য চেপে দেওয়া হচ্ছে নোট
আর একটি সম্ভাবনা উঠে এসেছে। তা হল, সামনের মাসে কর্ণাটক নির্বাচন রয়েছে। যার ফলে দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে রাজনৈতিক দলগুলি নগদ জমিয়ে আকাল তৈরি করেছে। নির্বাচনের সময় যাতে নানা কাজে নগদের অসুবিধা না হয়, সেজন্য একাজ করা হয়েছে।
জেটলির ব্যাখ্যা্
অসুস্থ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, নগদের আকালের ঘাটতি সাময়িক। বাজারে যথেষ্ট পরিমাণে নগদ রয়েছে। কোনও কোনও রাজ্যে মাত্রাতিরিক্ত টাকা তোলা হয়েছে। তাই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও শোনা গিয়েছে জোগান বাড়ানোর পরিবর্তে আরবিআই ২ হাজার টাকার নোটের জোগান কমিয়ে দিয়েছে।
২ হাজারের জায়গা খালি
এটিএম মেশিনে চারটি নোট রাখার জায়গা থাকে। একটিতে ২ হাজার, ২টি ৫০০ টাকার নোট ও অন্যটিকে ১০০ টাকার নোট। তবে ২ হাজারের জোগান কম থাকায় ও তা ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে বেশি ফেরত না আসায় এটিএম খালি থেকে যাচ্ছে।
সরকারের বিবৃতি
সরকার বলছে, আগের চেয়ে এটিএমে নগদের জোগান বাড়ানো হয়েছে। প্রতিদিন এটিএমে ১০ হাজার কোটি টাকা সাপ্লাই হচ্ছে। যা আগে হতো ৬-৭ হাজার কোটি টাকা। যার আর একটি অর্থ হল, ডিজিটাইজেশনকে উৎসাহ দিলেও নোট বাতিলের পর নগদের চাহিদা সারা দেশে অনেক বেড়ে গিয়েছে। সেটাও সরকারের আর এক ব্যর্থতা।
সমস্যা শুরু দক্ষিণে
সমস্যা প্রথম শুরু হয় অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলাঙ্গানায়। সেখানে দেশের অন্যতম বড় কন্ট্রাক্টর ফার্মগুলি রয়েছে। যাদের সবসময় নগদের প্রয়োজন হয়। সেখান থেকে মধ্যপ্রদেশ, বিহার, কর্ণাটক হয়ে গুজরাতেও নগদের হাহাকার টের পাওয়া গিয়েছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন সেরাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী নিতিন প্যাটেল।
নোট ছাপার পরিমাণ বেড়েছে
সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, নোটের আকাল বন্ধ করতে প্রতিদিন ২৫০০ কোটি টাকা করে নোট ছাপানো হচ্ছে। যা একমাসের মধ্যে ৭৫ হাজার কোটি নগদ বাজারে এনে ফেলবে। তাতে নগদের ঘাটতি মিটে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।