এরাজ্যে জেলে থেকে ভোট লড়ে এর আগে কারা জিতেছেন? জেনে নিন
২০১৪ সালের ১২ ডিসেম্বর সারদা চিটফান্ড মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে সিবিআই গ্রেফতার করে তদানীন্তন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্রীড়া ও পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রকে। তারপর থেকে এতদিন হয়ে গেল প্রায় একটানা জেলবন্দি রয়েছেন এই তৃণমূল নেতা।
বাংলায় এর আগে পাঁচ বার রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়েছে, জেনে নিন ইতিহাস
২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়ায় কামারহাটি বিধানসভা কেন্দ্র বাম প্রার্থী মানস মুখোপাধ্যায়কে প্রায় ৩৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হন মদনবাবু। এরপরে তাঁকে রাজ্যের পরিবহণ ও ক্রীড়া দফতর সামলানোর নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরপরে সারদা কেলেঙ্কারির খবর সামনে এসে পড়ায় মদনবাবুকে জেলে যেতে হয়। তবে তা সত্ত্বেও এতটুকু নাকি কমেনি মদনগোপাল মিত্রর জনপ্রিয়তা। এমনটাই দাবি কামারহাটির তৃণমূল নেতা-কর্মীদের।
এবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া টিকিটে জেলবন্দি অবস্থাতেই কামারহাটি থেকেই ভোটে দাঁড়িয়েছেন মদন মিত্র। জিতবেন বলেই মনে করছেন তাঁর শুভানুধ্যায়ীরা। যদিও ভোটের ফলাফল বেরলেই বোঝা যাবে আসল ঘটনা।
তবে এরাজ্যে জেলে থেকে ভোটে লড়ার ইতিহাস কিন্তু রয়েছে। খুব বেশি মানুষ এই সৌভাগ্যের অংশীদার হতে পারেননি। মাত্র দু'জন এর আগে ভোটে দাঁড়িয়ে লড়ে জিতেছেন। একজন হলেন অধীর চৌধুরী, প্রদেশ কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি ও আর একজন হলেন সত্তরের দশকের নকশাল নেতা সন্তোষ রানা।
১৯৯৬ সালে খুনের মামলায় জেলবন্দি থাকা অবস্থায় মুর্শিদাবাদ থেকে ভোটে লড়েন অধীর চৌধুরী। এবং বিপুল ভোটে জয়ও পান। সেইসময়ে অধীরের রেকর্ড করা বক্তৃতা মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে দিনের পর দিন চালানো হয়েছে। এমনকী অধীরকে শহিদের সঙ্গে তুলনাও করা হয়েছে।
অন্যদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইডি পড়তে পড়তে নকশাল আন্দোলনে প্রভাবিত হয়ে সন্তোষ রানা পড়ার পাঠ চুকিয়ে জঙ্গলমহলে নকশাল আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৭২ সালে নকশাল আন্দোলনের জেরে তাঁকে গ্রেফতারও হতে হয়। রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা শুরু হয় সন্তোষ রানার বিরুদ্ধে।
সেই অবস্থাতেই জেলে থেকে ১৯৭৭ সালের বিধানসভা ভোটে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীবল্লভপুর আসন থেকে নির্দল হিসাবে লড়ে বিপুল ব্যবধানে জয় পান তিনি। পরে বাম সরকার ক্ষমতায় এসে তাঁকে রাজনৈতিক বন্দি হিসাবে মুক্তি দেয়।
ঠিক একইভাবে মদন মিত্রও জেলবন্দি অবস্থাতেই এবারের ভোটে লড়ছেন। গতবারের ৩৪ হাজার ভোটের লিড কমে হেরে যাবেন এলাকার 'জনপ্রিয়' নেতা নাকি ফের একবার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে তা জানা যাবে আগামী ১৯ মে।