(ছবি) অপ্রতিরোধ্য মোদীকে কি রুখতে পারবেন এই নেতানেত্রীরা?
বেঙ্গালুরু, ১৮ মার্চ : উত্তরপ্রদেশে যেভাবে বহুমত নিয়ে ক্ষমতায় এল বিজেপি তাতে বিরোধীদের উদ্বিগ্ন হওয়ারই কথা। আর তাই বিরোধীদলগুলি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চ্যালেঞ্জ জানাতে একসঙ্গে লড়ার কথা চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে। মোদী ঝড় থামাতে এবং অমিত শাহর নেতৃত্বাধীন বিজেপিকে বাজিমাত দিতে প্রায় একপ্রকার সব দলগুলিই একজোট হতে চলেছে।
উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে বিজেপির দুরন্ত পারফরম্যান্স দেখে বিরোধী দলগুলির কপালে উদ্বেগের ভাঁজ পরেছে। ফল ঘোষণার পর থেকেই মোদীকে আটকানোর পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে। অনেক মাথা খাটিয়েও মোদীকে রোখার একমাত্র মহাজোট ছাড়া অন্য কোনও পথই দেখতে পাচ্ছে না দলগুলি। তবে সব দল একত্রিত হয়ে লড়লেও দলের নেতৃত্বে কে থাকবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।

নীতিশ কুমার
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আটকাতে এই মুহূর্তে সবচেয়ে এগিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের সঙ্গে মহাজোট স্থাপন করে রাজ্য থেকে বিজেপিকে উৎখাত করতে সফল হয়েছে নীতিশ কুমার নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত জনতা দল। তাছাড়া নীতিশ কুমার নিজেই ইঙ্গিত দিয়েছেন মহাজোট হলে তাঁর দল সংযুক্ত জনতা দলই তার নেতৃত্ব দেবে। এই মুহূর্তের অঙ্কের হিসাবে তাই মহাজোটকে নেতৃত্ব দেওয়ার দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে নীতিশ কুমার।

রাহুল গান্ধী
ভারতের প্রবীনতম দল কংগ্রেসের সহ সভাপতি পদে থাকা ছাড়া আপাতত কোনও সাফল্য তাঁর রাজনৈতিক জীবনে নেই। যদিও কংগ্রেসের আস্থা এখনও রাহুল গান্ধীতে রয়েছে আর সেই কারণে কংগ্রেস জোর দিতে পারে মহাজোটের নেতৃত্বে থাকুন রাহুল গান্ধী তবে বাকি দলগুলি যে সেই প্রস্তাবে সম্মতি দেবে এমনটা মনে হয় না। তার পিছনে মুখ্য কারণ বল নির্বাচনে জেতার ক্ষেত্রে রাহুলের অত্যন্ত খারাপ ট্র্যাক রেকর্ড।

অরবিন্দ কেজরিওয়াল
জোটে থাকলেও অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে জোটের নেতৃত্বে রাখার কথা কোনও দলই ভাবতে পারবে না। মহাজোটের সবচেয়ে নবীনতম দল কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে অসামান্য সাফল্য পেলেও জাতীয় নেতা হিসাবে উঠে আসতে পারেননি কেজরিওয়াল। সম্প্রতি গোয়া ও পাঞ্জাব নির্বাচনেও আশাপ্রদ ফল করতে পারেননি তিনি। থবে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এমনকী বাম নেতাদের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্কের সমীকরণটা ভাল। তবে তাও নেতৃত্ব দেওয়ার দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বাংলার মুখ্যমত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যার কাছে মানুষের বিশাল সমর্থন রয়েছে। ৩৪ বছরের বাম সরকারকে রাজ্য থেকে উৎখাত করেছেন তিনি। ২০১১ সালে বামেদের দূর্গ ভেঙে ক্ষমতায় বসেন মমতা। ২০১৬ সালে মমতাকে আটকাতে জোট বেঁধেছিল ভিন্ন মতাদর্শে বিশ্বাসী বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস। তা সত্ত্বেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয়বারও সরকার গঠন করে মমতার তৃণমূল। ২০১৯ সালের নির্বাচনেও তৃণমূল গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হবেই।
তাঁর উপর কেন্দ্রে মন্ত্রী হওয়ার অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাঁর। ফলে জোটকে নেতৃত্ব দেওয়ার দৌড়ে প্রথম সারিতেই রয়েছেন তিনি। তবে মমতার ক্ষেত্রে একটা নেতিবাচক বিষয় হল মমতার গগনচুম্বী জনপ্রিয়তা শুধু রাজ্যেই সীমিত।

নবীন পট্টনায়ক
ওড়িশার তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক। বিতর্ক থেকে দুরে, জোটের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য শরিক বটেই। কিন্তু ওড়িশার পঞ্চায়েত ভোটে যেভাবে বিজেপি উঠে এসেছে তাতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজু জনতা দলের ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।

মায়াবতী
মহাজোটের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতম প্রার্থী বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতী। কিন্তু সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে দলের নৌকাডুবির পর এই দৌড়ে তাঁর স্থান অনেকটা নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও সুযোগ যে একেবারে হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে তা বলা যাবে না।

মুলায়ম সিং যাদব
উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ রাজত্ব শেষ হলেও মহাজোটের ছবিতে কিন্তু উজ্জ্বল বিন্দু মুলায়ম সিং যাদব। একে পরিবারে কোন্দল তার উপর নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির অপ্রত্যাশিত খারাপ ফল। যদিও কামব্যাকের দারুণ রেকর্ড রয়েছে সপা নেতার।