এবার আপ কি পারবে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে? পাঞ্জাবই তাদের ভরসা
দু'হাজার তেরোর ডিসেম্বরে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে সাড়া ফেলে দেওয়ার পরে আম আদমি পার্টি বা আপ-কে নিয়ে বেশ আগ্রহ তৈরী হয়েছিল পরের বছরের লোকসভা নির্বাচনে।
দু'হাজার তেরোর ডিসেম্বরে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে সাড়া ফেলে দেওয়ার পরে আম আদমি পার্টি বা আপ-কে নিয়ে বেশ আগ্রহ তৈরী হয়েছিল পরের বছরের লোকসভা নির্বাচনে। দলের নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল বারাণসী কেন্দ্রে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চ্যালেঞ্জ করে লড়েন, যদিও হারেন বেশ বড় ব্যবধানে। তার পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৫ সালে দিল্লিতে বিজেপিকে ধরাশায়ী করে ক্ষমতায় আসে আপ কিন্তু তাদের রাজনৈতিক যাত্রায় সেটিই এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ সাফল্য।
দু হাজার চোদ্দোর লোকসভা নির্বাচনে আপ সারাদেশে ৪৩২টি আসনে লড়লেও যেতে মাত্র চারটি আসনে, এবং তার প্রত্যেকটিই আসে পাঞ্জাব রাজ্যে। পুরো নির্বাচনে দুই শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেলেও পাঞ্জাবে আপের ভোট শতাংশ ছিল ২৪-এর বেশি -- কংগ্রেসের ৩৩ এবং শিরোমনি অকালি দলের ২৬ শতাংশের পরেই।
২০১৭-র পাঞ্জাব নির্বাচনে সুবিধে করতে পারেনি আপ
এর পরে ২০১৭-র পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে আপকে ঘিরে প্রত্যাশা তৈরী হয় কিন্তু শেষ ফলাফলে দেখা যায় তারা বিশেষ কিছু সুবিধা করতে পারেনি। ১১৭ আসন বিশিষ্ট বিধানসভায় তারা পায় মাত্র ২০টি আসন, ২৪ শতাংশের আশেপাশে ভোট পেয়ে।
এবারে পাঞ্জাবের ১৩টি আসনে ভোট সম্পন্ন হল ১৩ মে, নির্বাচনের সপ্তম অর্থাৎ অন্তিম দফায়। সাধারণত দ্বিমুখী রাজনীতিতে বিশ্বাসী পাঞ্জাবে একটি তৃতীয় এবং নতুন বিকল্প হিসেবে আপ-এর সম্ভাবনার কথা অনেকেই আশা করেছিলেন কিন্তু অন্তর্কলহ এবং স্থানীয় নেতৃত্বের দলত্যাগের কারণে আপ-এর সম্ভাবনা বেশ বড় ধাক্কা খেয়েছে। ২০১৭-র নির্বাচনে "রাজ্যের প্রধান বাইরের থেকেও কেউ হতে পারে" এমনতর প্রস্তাবনাও আপ-এর পায়ের তলা থেকে মাটি সরিয়ে দিয়েছে অনেকটাই এই রাজ্যে।
পাঞ্জাবে নিজেদের আসনগুলি ধরে রাখতে পারবে আপ?
এবারের লোকসভা নির্বাচন তাই আপ-এর পক্ষে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। যদি পাঞ্জাবে নিজেদের আগেরবার পাওয়া চারটি আসনও আপ এবারে ধরে রাখতে না পারে, তাহলে জাতীয় স্তরে তো বটেই, দিল্লির আমজনতার কাছেও সামনের বছরের বিধানসভা নির্বাচনের আগে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দলের ভাবমূর্তি বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি, এবারের নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে আপ-এর গাঁটছড়া বাঁধার বিষয়টিও যে জনসমক্ষে খুব একটি ইতিবাচক বার্তা পাঠিয়েছে, তা নয়। এবারে পাঞ্জাবে তাদের অন্যতম কেন্দ্র সাংরুর-এও কেজরিওয়ালকে কালো পতাকা দেখানো হয় বলেও খবর। আপ পাঞ্জাবে এখনও স্থানীয় নেতৃত্ব গড়ে তুলে উঠতে পারেনি আর সেই ব্যর্থতাও তারা উপেক্ষা করতে পারে না।
সব মিলিয়ে, এবারের লোকসভা নির্বাচন আপ-এর কাছে অস্তিত্বরক্ষার লড়াই বললে ভুল হবে না যদিও দলের সমস্ত আশা সেই সবেধন নীলমণি কেজরিওয়াল-এর উপরেই বর্তায়।