বাবরি মসজিদ ধ্বংস কাণ্ডে বাজপেয়ীর ভূমিকা কী ছিল, পরে তিনি কী বলেছিলেন
১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে অযোধ্যার বিতর্কিত বাবরি মসজিদ ধ্বংস হয়। ঠিক কী হয়েছিল সেইসময়ে অটল বিহারীকে ঘিরে, জেনে নেওয়া যাক একনজরে।
১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে অযোধ্যার বিতর্কিত রাম মন্দির তথা বাবরি মসজিদ প্রাঙ্গনে একদল করসেবক প্রবেশ করে হামলা চালায়। তছনছ করে ফেলা হয় বাবরি মসজিদকে। সেই ঘটনা উস্কানি দেওয়ায় নাম জড়ায় লালকৃষ্ণ আডবাণী, উমা ভারতী, কল্যাণ সিং, অশোক সিংহল সহ একাধিক বিজেপি তথা সংঘের নেতার। সেই ঘটনায় অটল বিহারী বাজপেয়ীর নামও জড়িয়েছিল। ঠিক কী হয়েছিল সেইসময়ে অটল বিহারীকে ঘিরে, জেনে নেওয়া যাক একনজরে।
বাবরির বিতর্কিত অধ্যায়
বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর। তার পরবর্তী সময়ে দাঙ্গায় অন্তত ২ হাজার জনের মৃত্যু হয়। এবং ভারতের ইতিহাসে এত বড় দাঙ্গা আর কখনও হয়নি। সেই বিতর্ক এতদিন হল সমানে চলছে। সর্বোচ্চ আদালতে শুনানি চলেছে দীর্ঘদিন ধরে। তবে যেহেতু এই মামলা অত্যন্ত সংবেদনশীল তাই সবদিক বিবেচনা করে আদালতকে নির্দেশ দিতে হয়েছে।
বাজপেয়ীর বক্তব্য
ঘটনার পরে বাজপেয়ী এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে নেন। ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে ব্যাখ্যা করেন। এমন ঘটনা না হলেই বোধহয় ভালো হতো, এমনটাই জানান।
ক্ষমাপ্রার্থনা
বাজপেয়ী বলেন, আমরা করসেবকদের আটকানোর চেষ্টা করেছিলাম। তবে সফল হইনি। তাঁর জন্য আমরা দুঃখিত। করসেবকদের একাংশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। এবং বারবার বারণ করা সত্ত্বেও বিতর্কিত অংশে ঢুকে ধ্বংসলীলা চালায়।
সিবিআইয়ের নতুন তৎপরতা
ঘটনা হল, ২০১৭ সালে এসে সুপ্রিম কোর্টের কাছে সিবিআই ফের আবেদন করেছে যাতে লালকৃষ্ণ আডবাণী, উমা ভারতী ও মুরলী মনোহর জোশীর নাম ফের একবার অভিযুক্তের তালিকায় ঢোকানো হয়। এই ঘটনায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ ছিল বাজপেয়ীর বিরুদ্ধেও। তিনি ঘটনার একদিন আগে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশে উস্কানিমূলক ভাষণ দেন। অনুগামীদের ভজন ও কীর্তন করতে বলেন বিতর্কিত অংশে।
অটলের বিতর্কিত বক্তব্য
শুধু তাই নয়, পরোক্ষে বিতর্কিত এলাকার জমি এবড়ো-খেবড়ো থাকলে সমান করে নিতে পরামর্শ দেন। যা শুনে অনেকেই বলেছিলেন, অটল বিহারী আসলে বিতর্কিত কাঠামো ভাঙার জন্য দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উস্কানি দিয়েছেন। বলেছিলেন, কর সেবা করে আমরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশই পালন করব। সেখানে যজ্ঞ হবে, বেদী তৈরি হবে। আর বেদী তো আর এবড়ো-খেবড়ো জায়গায় হবে না, তার জন্য জমি সমান করতে হবে। যা শুনে উপস্থিত দর্শক করতালিতে ফেটে পড়েন। আর এই সবই হয়েছিল, বাবরি কাণ্ডের আগের দিন। যদিও আদালত পরে আটল বিহারীর বিরুদ্ধে সেভাবে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেনি।