বাজপেয়ীর রাজনৈতিক উত্তরসুরীর তালিকায় ছিলেন না মোদী
২০০৪ সালে লোকসভা ভোটে হারার পরে বাজপেয়ী প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে অবসর নেন। তবে তখন জানিয়ে গিয়েছিলেন, লালকৃষ্ণ আডবাণী ও প্রয়াত প্রমোদ মহাজন তাঁর উত্তরসুরী হবেন।
অটল বিহারী বাজপেয়ী ১৯৮০ সালে বিজেপি তৈরি হলে তার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। ভৈরো সিং শেখাওয়াত ও লালকৃষ্ণ আডবাণীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি দল গঠন করেন ও প্রথম সভাপতি নির্বাচিত হন।
স্বাধীনতার পরপর মহাত্মা গান্ধীর হত্যার অভিযোগে আরএসএস-কে নিষিদ্ধ করা হলে ১৯৫১ সাল থেকে নতুন তৈরি হওয়া ভারতীয় জন সংঘের হয়ে কাজ শুরু করেন বাজপেয়ী। খুব শীঘ্রই তিনি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।
১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে গ্রেফতার হন বাজপেয়ী। ১৯৭৭ সালে ছাড়া পাওয়ার পরে জয়প্রকাশ নারায়ণের আহ্বানে কংগ্রেস বিরোধী জোট যা জনতা পার্টি নামে পরিচিত ছিল, তাতে জনসংঘ নিয়ে বাজপেয়ী যোগ দেন। সেই সময় থেকেই আডবাণী সহ বেশ কিছু নেতাকে একসঙ্গে নিয়ে অটল বিহারী কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থান নেন। অসাধারণ বক্তা হিসাবে তিনি দলে সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন। ফলে অন্যরা স্বাভাবিকভাবেই পিছিয়ে পড়েন।
১৯৮৪ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়ে বিজেপি মাত্র ২টি আসন পেলেও বাজপেয়ীকেই বিরোধী মুখ হিসাবে দেখা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তার পরবর্তীকালে ১৯৯৬ সালে বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী হন ও সবমিলিয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মোট তিনবার প্রধানমন্ত্রীর তখতে বসেন।
১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন গুজরাতে দাঙ্গা হয়। বহু মানুষের মৃত্যু হয়। তৎকালীন গুজরাত মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন নরেন্দ্র মোদী। সেই সময়ে রাজ্য সরকারের কাজে বাজপেয়ী খুশি ছিলেন না। এমনও শোনা গিয়েছিল, গুজরাতে গোলমালের সময় বাজপেয়ীর কথা উপেক্ষা করা হয়েছিল।
২০০৪ সালে লোকসভা ভোটে হারার পরে বাজপেয়ী প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে অবসর নেন। তবে তখন জানিয়ে গিয়েছিলেন, লালকৃষ্ণ আডবাণী ও প্রয়াত প্রমোদ মহাজন তাঁর উত্তরসুরী হবেন। যদিও পরে মহাজন প্রয়াত হন ও আডবাণীর মাঝের দশ বছরে কংগ্রেস জমানার পরে প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে ধীরে ধীরে সরে আসেন। সেই সময়ে মোদী ত্রিসীমানায় ছিলেন না। পরে মোদী এসেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মন জয় করেন ও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতে সরকার গঠন করেন। ততদিনে বাজপেয়ী বাকশক্তি হারিয়ে অন্তরালে চলে গিয়েছিলেন।