ক্রান্তীয় শহরগুলিতে পৌনে ২ লক্ষ মৃত্যুর জন্য দায়ী বায়ু দূষণ, গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য
ক্রান্তীয় শহরগুলিতে পৌনে ২ লক্ষ মৃত্যুর জন্য দায়ী বায়ু দূষণ, গবেষণায় চাঞ্চল্যকর তথ্য
সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, গ্রীষ্মমন্ডলীয় শহরগুলিতে গত ১৪ বছরে প্রায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে শুধু ক্রমবর্ধমান বায়ু দূষণের কারণে। যদি বায়ু দূষণ এড়ানো যেত, তাহলে ওই অতিরিক্ত মৃত্যুও এড়ানো যেত। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে ওই বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হত না বায়ু দূষণের দ্রুত বৃদ্ধি রুখতে পারলে।
স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বায়ু দূষণ
সম্প্রতি গবেষণাটি 'সায়েন্স অ্যাডভান্সেস' জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বায়ু মানের দ্রুত অবনতি এবং স্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক বায়ু দূষণকারীর শহুরে এক্সপোজারের বৃদ্ধি প্রকাশ করেছেন। সমস্ত শহরজুড়ে, বিজ্ঞানীরা নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড এর জন্য ১৪ শতাংশ এবং সূক্ষ্ম কণার জন্য ৮ শতাংশ পর্যন্ত স্বাস্থ্যের বিপদ বাড়তে পারে।
বায়ু দূষণ বৃদ্ধির কারণ গবেষণায়
শুধু নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড এবং সূক্ষ্ম কণাই নয়, অ্যামোনিয়ার জন্য ১২ শতাংশ পর্যন্ত ঝুঁকি বাড়তে পারে স্বাস্থ্যের এবং প্রতিক্রিয়াশীল উদ্বায়ী জৈব যৌগের জন্য ১১ শতাংশ পর্যন্ত বিপদ বাড়বে। গবেষকরা বায়ু মানের এই দ্রুত অবনতির জন্য উদীয়মান শিল্প এবং রাস্তার ট্র্যাফিক, বর্জ্য পোড়ানো, কাঠকয়লা ও জ্বালানী কাঠের ব্যাপক ব্যবহারকে দায়ী করেছেন।
বায়ু দূষণের একটি নতুন যুগে প্রবেশ
এই গবেষণার প্রধান লেখক ডঃ কর্ন ভোহরা বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি ছাত্র। তিনি এই গবেষণাটি সম্পন্ন করেছেন এবং বলেছেন জমি ক্লিয়ারেন্স এবং কৃষি বর্জ্য নিষ্পত্তির জন্য উন্মুক্তভাবে বায়োমাস পোড়ানো অতীতে গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে বায়ু দূষণকে অপ্রতিরোধ্যভাবে প্রভাবিত করেছে৷ আমাদের বিশ্লেষণ পরামর্শ দেয় যে আমরা এই শহরগুলিতে বায়ু দূষণের একটি নতুন যুগে প্রবেশ করছি।
বায়ুমানের দ্রুত অবনতিতে দূষণের মাত্রাবৃদ্ধি
বিজ্ঞানীরা আরও দেখেছেন যে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইডের জন্য ৪৬টি শহরের মধ্যে ৪০টি এবং পিএম২.৫-এর মতো সুক্ষ্মকণার জন্য ৪৬টি শহরের মধ্যে ৩৩টি শহরের জনসংখ্যাকে গবেষণার আওতায় আনা হয়েছে। গবেষণার দেখা গিয়েছে, বায়ু দূষণের মাত্রা ১.৫ থেকে ৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সংমিশ্রণ এবং বায়ুমানের দ্রুত অবনতিতে দূষণের মাত্রা বেড়েই চলেছে।
অকালে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির পাচ্ছে দূষণে
সমীক্ষা অনুসারে বায়ু দূষণের সংস্পর্শে এসে অকালে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির হার সবথেকে বেশি ছিল দক্ষিণ এশিয়ার শহরগুলিতে। বিশেষ করে ঢাকা ও বাংলাদেশে মোট ২৪ হাজার জন এবং ভারতের মুম্বই, ব্যাঙ্গালোর, কলকাতা, হায়দরাবাদ, চেন্নাই, সুরাট, পুনে ও আহমেদাবাদ মোট ১ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
বায়ু দূষণ সবথেকে খারাপ প্রভাব আগামী দশকে
গবেষকরা বলেন, আফ্রিকার গ্রীষ্মমন্ডলীয় শহরগুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা বর্তমানে কম হওয়ার কারণে সমগ্র মহাদেশজুড়ে স্বাস্থ্যসেবাতে সাম্প্রতিক উন্নতির ফলে সামগ্রিক অকালমৃত্যুর হার কমেছে। স্বাস্থ্যের উপর বায়ু দূষণের সবচেয়ে খারাপ প্রভাব আগামী দশকগুলিতে ঘটবে। অধ্যয়নের সহ-লেখক ডঃ এলোইস মারাইস বলেন, "আমরা অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা না নিয়ে এবং দ্রুত শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার পরিবর্তে এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে বায়ু দূষণ বাড়িয়েই চলেছি।
বিরল মহাজাগতিক দৃশ্য! শুক্র-মঙ্গল-বৃহস্পতি-শনির সমবেত নৃত্য রাতের আকাশে